৮৮/২. ঊর্ধ্বরেতা
Semener (সিমেনার)/ ‘تصاعديا’ (তাসাদিয়ান)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রধর’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘শুক্রধর’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘অটল’। এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘ডুবুরী ও স্বাধীন’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘ঋভু, ওজম্বল ও সম্রাট’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘নির্বাণ, মরা^১ ও স্তম্ভন’।

অভিধা (Appellation)
ঊর্ধ্বরেতা (বাপৌউ)বিণ জিতেন্দ্রিয়, সংযতেন্দ্রিয়, আস্খলিতবীর্য বি যোগী, নৈষ্টিক ব্রহ্মচারী, ঊর্ধ্বগতি রতী যার, semener, ‘تصاعديا’ (তাসাদিয়ান), ascetic, ascending, ascendant (প্রাঅ) বীর্যবান, বিরেশ্বর (প্র) ১ শ্বরবিজ্ঞানীদের মতে সঙ্গমের সময়ে রতীর ঊর্ধ্বগতি হয়েছে এমন সাধক ২ মহাদেব, শিব। দক্ষযজ্ঞে সতী দেহত্যাগ করলে মহাদেব রেতঃ ঊর্ধ্বগত করাতে তিনি ঊর্ধ্বরেতা নামে অভিহিত হন (শ্ববি) অটল, অখণ্ড, অমর, ইন্দ্রজিত, উদ্বাহী, নির্বাণ, নিষ্কামী, পারমী, মারী, রতীধর, শুক্রধর, independent, ‘مُسْتَقِلّ’ (মুস্তাক্বিল) (ইংপ) spirited, strong (ইদে) আলি (আ.ﻋﻠﻰ), গাজি (আ.ﻏﺎﺯﯼ), ‘ﻋﻧﻴﻦ’ (ইন্নাইন), শুজা (আ.ﺸﺠﺎﻉ), বাসিল (আ.ﺑﺎﺴﻞ), হাজি (আ.ﺤﺎﺠﻰ), হাফিজ (আ.ﺤﺎﻔﻇ) বি বিলায়েত (ﻮﻻﻴﺖ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রধর’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; জিতেন্দ্রিয়কে ঊর্ধ্বরেতা বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; শুক্রপাত ব্যতীত কামযজ্ঞ সম্পদানকারীকে শুক্রধর বা রূপকার্থে ঊর্ধ্বরেতা বলা হয় (বাপৌছ) নির্বাণ, মরা^১ ও স্তম্ভন (বাপৌচা) ঋভু, ওজম্বল  ও সম্রাট (বাপৌউ) ঊর্ধ্বরেতা, ডুবুরী ও স্বাধীন (বাপৌরূ) অটল (বাপৌমূ) শুক্রধর {বাং.ঊর্ধ্ব+ বাং.রেতঃ>}

ঊর্ধ্বরেতার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of semener)
১.   “ঊর্ধ্বরেতা রসিক যারা, ঐ ধনের ধনীরে তারা, দানের প্রাপক মরে যারা, গিয়ে কামকামিনী গমনে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৬৫)।
২.   “ঊর্ধ্বরেতা রসিক যারা, পুলটি পার হবে তারা, মনোবাসনা করবে পুরা, কাটবে না কামের ধারে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০৮)।
৩.   “শশকপুরুষ  সত্যবাদী, মৃগপুরুষ ঊর্ধ্বভেদী, অশ্ব বৃষ বেহুঁশ নিরবধি, কু’কর্মেতে সদাই মন।” (পবিত্র লালন- ৯১৫/৩)।

ঊর্ধ্বরতী (Ascendant. অ্যাসেন্ডান্ট)/ (‘صاعد’. সোয়া‘য়াদ)
পুরুষের শুক্র নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকে ঊর্ধ্বরতী বলে।

ঊর্ধ্বরতী (বাপৌছ)বিণ যোগী, জিতেন্দ্রিয়, কামে রতীকে ঊর্ধ্বগতি করেছেন ‍যিনি বি জিতেন্দ্রিয়তা, নিষ্কাকামিতা (শ্ববি) ঊর্ধ্বরেতা, ডুবুরী, নিষ্কামী, পারমী, ‘ﺜﺎﺑﺖ’ (সাবিত) (ইংপ) semener, spermer, spirited, strong, steadfast, consistent, resolute (ইপৌচা) আলি (আ.ﻋﻠﻰ), গাজি (আ.ﻏﺎﺯﯼ), হাজি (আ.ﺤﺎﺠﻰ), পালোয়ান (ফা.ﭙﻬﻟﻭﺍﻦ) বি বিলায়েত (ﻮﻻﻴﺖ), মর্দামি (ফা.ﻤﺭﺪﻤﻰ), মুরোত (আ.ﻤﺮﻮﺖ), সিয়াম (ﺼﻴﺎﻢ), রোজা (ﺭﻭﺯﻩ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রধর’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) শ্বরবিজ্ঞানে; মৈথুনে জননপথে শুক্রপাত বন্ধকারীকে ‘ঊর্ধ্বরতী’ বলা হয় (বাপৌছ) নির্বাণ, মরা^১ ও স্তম্ভন (বাপৌচা) ঋভু, ওজম্বল  ও সম্রাট (বাপৌউ) ঊর্ধ্বরেতা, ডুবুরী ও স্বাধীন (বাপৌরূ) অটল (বাপৌমূ) শুক্রধর।

১.   “আগে মন হও প্রকৃতি, প্রকৃতি স্বভাব ধরে, সাধন করে হও ঊর্ধ্বরতী।” (পবিত্র লালন- ৭৭/১)।
২.   “দ্বিদলে করিয়া স্থিতি, রতী কর ঊর্ধ্বগতি, পঞ্চবাণ অষ্টাঙ্গ নীতি, বলন কাঁইজি বলে তাই।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩৭)।
৩.   “পাগল মন ঊর্ধ্বরতী শিখ, নিষ্ঠা সাধু কাছে, ভাঙ্গিয়া সেই ননির হাঁড়ি, মনের মত খাও বসে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৭৮)।
৪.   “বৈদিক এক সাধন আছে, তারে রাখ আগে পিছে, সে সাধন করতে গেলে, শুরু হয় ঊর্ধ্বরতী।” (পবিত্র লালন- ৭৭/৪)।
৫.   “মনে রাখলে লীলার বাসনা, ঊর্ধ্বরতী সাধন হয় না, শান্তরতীও মুক্তি দেয় না, বলন কাঁইজি ভেবে কয়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৮৪)।
৬.   “রসিকের ভঙ্গিতে যায় চেনা, দেখ তার শান্তচিত্ত ঊর্ধ্বরতী, মায়া বরণ কাঞ্চা সোনা।” (পবিত্র লালন- ৮৫৮/১)।

ঊর্ধ্বগমন (Ascent. অ্যাসেন্ট)/ (‘صعود’. সোয়া‘উদ)
১.   “আবহায়াত নদীর কূলে, হলে পরে ঊর্ধ্বগমন, যেতে পারবি ও পাগল মন, মরার আগেই মরিলে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২২)।
২.   “ঊর্ধ্বগমন ত্রিধমনী, ঐ কামের সাঁকো ত্রিবেণী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩৯)।
৩.   “গুরুচাঁদ হলে সদয়, ঊর্ধ্বগমন ভাগ্যেতে হয়, প্রভুময় গোপন আলয়, নিরসে স্ব’রস খনি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩৯)।
৪.   “পঞ্চতত্ত্ব পঞ্চপ্রীতি, মোতি রতীর ঊর্ধ্বগতি, ভাগ্যরাতি কল্যাণরাতি, বলন বলেন সাঁইরাতি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৫৬)।
৫.   “ভেবে কয় সাধক বলন, এক প্রেমের দোভাব চলন, যে করে ঊর্ধ্বগমন, অধর ধরে আপন ঘরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২)।
৬.   “যাবি যদি ঊর্ধ্বগমনে (মি’রাজ) গমনে, সাধুর চরণ করগে ভজন, গোপনে নিরজনে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৭৬)।
৭.   “সিরাজ সাঁইজির বচন, জন্ম-মৃত্যু ফাঁদরে লালন, তুই এড়াবি কিসে, আপনাপন রতী করলে ঊর্ধ্বগতি, সে যাবে বেঁচে।” (পবিত্র লালন- ৫৯/৫)।

ঊর্ধ্বচাঁদ (Upper moon)
“বারে বারে করিরে মানা, লীলার বশে বাস করো না, রেখ তেজের ঘর তেজিয়ানা, ঊর্ধ্বচাঁদ ধরে।” (পবিত্র লালন- ৬৭/৩)।

ঊর্ধ্বতলা (Upper floor)
“নিভিয়ে মদনজ্বালা, অহিমুণ্ডে করগে খেলা, উভয় নিহার ঊর্ধ্বতলা, প্রেমের ঐ লক্ষণ।” (পবিত্র লালন- ৮৮৭/২)।

ঊর্ধ্বদল (Upper petal)
“সপ্ততলে চতুর্দলে, কুলকুণ্ডলিনী সদা স্থির, তার ঊর্ধ্বদলে, কমলের ওপর মণিপুর, তার ঊর্ধ্বদলে, ঊনপঞ্চাশ পবনের ঘর, প্রাণ অপান উদ্বান ব্যান ও সমান, পঞ্চবায়ু গতিকার।” (পবিত্র লালন- ৫৪৮/৩)।

ঊর্ধ্বদেশ (Upper land)
১.   “তুমি তো গুরু স্বরূপের অধীন, আমি ছিলাম সুখে ঊর্ধ্বদেশে, অধঃদেশে এনে আমায় করলে হীন।” (পবিত্র লালন- ৪৯৪/১)।
২.   “প্রেমের মধু জানে সুজন, অনুরাগী করে ঊর্ধ্বদেশে গমন, লালন বলে অজ্ঞানীরা, নিগূঢ়তত্ত্ব জানে না।” (পবিত্র লালন- ৬৪৯/৪)।
৩.   “ভাবের হাটে লাভের আশে, থাকব না আর পারে বসে, মন গেছে ঊর্ধ্বদেশে, লালন আছে সে আশায়।” (পবিত্র লালন- ৫১১/৪)।

ঊর্ধ্বনগর (Upper city)
“তিল পরিমাণ জায়গার ওপর, গঠেছেন সাঁই ঊর্ধ্বনগর, মানুষ-মক্কা এ, কত লাখ লাখ হাজি করছেন হজ, সে জায়গায় গিয়ে।” (পবিত্র লালন- ৮০/৪)।

ঊর্ধ্বনাল (Upper duct)
“হাওয়া-আদমে বেঁধে ভেলা, অধর-চাঁদ মোর করছে খেলা, ঊর্ধ্বনালে সদা চলা, বহু সাধনগুণে কেউ দেখেছে।” (পবিত্র লালন- ৮৪১/২)।

ঊর্ধ্বপদ্ম (Upper lotus)
“অধোপথে ঊর্ধ্বপদ্ম, নিত্যলীলার এ সরহদ্দ, যে পদ্মে সাধকের বর্ত্ম, সে পদ্ম কেমন বরণ।” (পবিত্র লালন- ৪৬২/২)।

ঊর্ধ্বপার্শ্ব (Upper side)
“তথায় ক্ষীরোদ রতীরসে, মানুষ অথৈসাগরে ভাসে, রত্নবেদীর ঊর্ধ্বপাশে, কিশোর কিশোরী রয়।” (পবিত্র লালন- ৪৮৭/৩)।

ঊর্ধ্বভাব (Upper idea)
“হাদিসে খবর আছে, ঊর্ধ্বভাব তওবাগাছে, সে গাছের লাখ লাখ শিকড় সে না, শিকড় কাটলে- গাছ মরে হুতাশে, প্রাণ বাঁচে না।” (পবিত্র লালন- ৫১৩/২)।

ঊর্ধ্বরেতার সংজ্ঞা (Definition of semener)
সাধারণত; জিতেন্দ্রিয়কে ঊর্ধ্বরেতা বলে।

ঊর্ধ্বরেতার আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of semener)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; শুক্রপাত ব্যতীত কামযজ্ঞকারীকে শুক্রধর বা রূপকার্থে ঊর্ধ্বরেতা বলে।

ঊর্ধ্বরেতার পরিচয় (Identity of semener)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রধর’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’। শুক্রপাত ব্যতীত কামযজ্ঞ সম্পাদনকারীকে ঊর্ধ্বরেতা বলা হয়। শুক্র-নিয়ন্ত্রণের বেশ কিছু সনাতনী পদ্ধতি রয়েছে। পাকা সাধকগুরুর নিকট হতে জেনে নেওয়ার জন্য পরামর্শ রইল।