৮৫/২. খর্পর
Sharper (স্যাপার)/ ‘غشاش’ (গাশশাশ)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শত্রু’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘শত্রু’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘রিপু’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘খর্পর’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘ষড়্বিধ’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘অসুর’। এ পরিভাষাটি শ্বরবিজ্ঞানের ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’তে বর্ণিত ‘মন’, ‘শত্রু’, ‘পালনকর্তা’ ও ‘সৃষ্টিকর্তা’ এ চারটি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’রই ব্যাপক পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়। সেজন্য; বর্ণনার ক্ষেত্র অনুযায়ী এর সঠিক দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করা একান্ত প্রয়োজন।

অভিধা (Appellation)
খর্পর (বাপৌউ)বি চোর, হর, তস্কর, দস্যু বিণ অপহরণকারী, গোপনে পরদ্রব্য অপহরণকারী, যে না বলে অপরের দ্রব্য আত্মসাৎ করে, sharper, ‘غشاش’ (গাশশাশ) (প্র) ১. কাম ২. ক্রোধ ৩. লোভ ৪. মোহ ৫. মদ ও ৬. মাৎসর্য; এ ষড়রিপুকে শ্বরবিজ্ঞানে চোর বলে অভিহিত করা হয় (শ্ববি) শত্রু, অরি, বৈরী (রূপ্রশ) চোর, ননদী, মাঝি (ইপ) আদু (আ.ﻋﺪﻮ), খসম (আ.ﺨﺼﻢ) (ইদে) ওয়াসওয়াসা (আ.ﻮﺴﻮﺴﻪ), দুশমন (ফা.ﺪﺸﻤﻥ), দেও (ফা.ﺪﻴﻭ) (ইংপ) enemy (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শত্রু’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; না বলে বা না জানিয়ে অপরের দ্রব্য আত্মসাৎকারীকে খর্পর বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; ব্যক্তির মন, রিপু, সাঁই ও কাঁইকে খর্পর বলা হয় (বাপৌছ) অসুর (বাপৌউ) ষড়্বিধ (বাপৌউ) খর্পর (বাপৌরূ) রিপু (বাপৌমূ) শত্রু।

খর্পরের সংজ্ঞা (Definition of sharper)
সাধারণত; না বলে বা না জানিয়ে অপরের দ্রব্য আত্মসাৎকারীকে খর্পর বলে।

খর্পরের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of sharper)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মানুষের মন, রিপু, সাঁই ও কাঁইকে খর্পর বলে।

খর্পরের প্রকারভেদ (Variations of sharper)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে খর্পর দুই প্রকার। যথা; ১. পার্থিব খর্পর ও ২. স্বর্গীয় খর্পর।

১. পার্থিব খর্পর (Mundane/ Tellurian sharper)
পার্থিব দ্রব্যাদি গোপনে আত্মসাৎকারীকে পার্থিব খর্পর বলে। যেমন; টাকা খর্পর ও গোরু খর্পর ইত্যাদি।

২. স্বর্গীয় খর্পর (Heavenly/ Celestial sharper)
মানবদেহে গোপনে অবস্থানকারী সত্তাদের স্বর্গীয় খর্পর বলে। যেমন; মন, রিপু, সাঁই ও কাঁই।

শ্বরবিজ্ঞানে; স্বর্গীয় খর্পর আবার দুই প্রকার। যথা; ১. রিপু খর্পর ও ২. উপাস্য খর্পর।

১. রিপু খর্পর (Foe sharper)
মনের মধ্যে আত্মগোপন করে অবস্থানকারী শত্রুদের রিপু খর্পর বলে। যেমন; কাম ও ক্রোধ ইত্যাদি।

২. উপাস্য খর্পর (Adored sharper)
বৈকুণ্ঠে আত্মগোপন করে অবস্থানকারী সাম্প্রদায়িক পালনকর্তা ও সৃষ্টিকর্তাকে একত্রে উপাস্য খর্পর বলে।

আবার, বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; খর্পর দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান খর্পর ও ২. উপমিত খর্পর।

১. উপমান খর্পর (Analogical sharper)
সাধারণত; না বলে বা না জানিয়ে অপরের দ্রব্য আত্মসাৎকারীকে উপমান খর্পর বলে।

২. উপমিত খর্পর (Compared sharper)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মানবের মনের শত্রুদেরকে উপমিত খর্পর বলে।

খর্পরের পরিচয় (Identity of sharper)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শত্রু’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুস্তক-পুস্তিকায় এর ন্যূনাধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে; এ পরিভাষাটি একেক গ্রন্থে একেক ভাষায় ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠক-পাঠিকা ও শ্রোতাদের তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না। সাধারণত; আত্মসাৎ বা দ্রব্যাদি অপহরণকারীকে খর্পর বলা হয়। অন্যদিকে; শ্বরবিজ্ঞানে মন, রিপু, সাঁই ও কাঁইকে প্রকৃত খর্পর বলা হয়। তবে; এখানে; কেবল শত্রু বা রিপুকেই খর্পর বলা হয়েছে। শ্বরবিজ্ঞানে; তেমনই; মানুষ সদৃশ চোরের কোনো আলোচনা করা হয় না। সেজন্য; বিশ্বের কোনো সাম্প্রদায়িক গ্রন্থে মানুষ সদৃশ চোরের তেমন বর্ণনা বা বিবরণও পাওয়া যায় না। যারা গোপনে অপরের দ্রব্য হরণ করে নিয়ে যায় তারাই চোর। মানবের মনের মাঝে অত্যন্ত গোপনে লুকায়িত রিপুগুলোকে চোর বলা হয়। রিপু ছয়টি। যথা; ১. কাম ২. ক্রোধ ৩. লোভ ৪. মোহ ৫. মদ ও ৬. মাদস্যর্য। এ ছয়টি রিপুর মধ্যে কাম রিপুটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এ রিপুর তাড়নায় মানুষ কামদেশে যায়। আর নিজের দেহের অমূল্য সম্পদ শুক্র ক্ষরণ করে রেখে আসে। কামরিপুর তাড়নায় বা কামরিপুর বশবর্র্তী হয়ে কামুকরা কী মূল্যবান সম্পদ যে হারিয়ে ফেলছে তা একটিবারও ভেবে দেখে না। একবার যদি কামুকরা ভেবে দেখত যে; একবার কৃত-শুক্রপাত খাদ্যসার মূল্য কত? তবে সে আর কোনো দিন শুক্রপাত করার পক্ষপাতি থাকত না।