৭৩/১. গাছ^১
Tree (ট্রি)/ ‘شَجَرَةُ ’ (শাজরা)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘মানুষ’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘মানুষ’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘চতুষ্পদ ও চাঁদ’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘শর্মা’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘উবুদগাছ ও কল্পতরু’।

অভিধা (Appellation)
গাছ^১ (বাপৌরূ)বি বৃক্ষ, তরু, মহীরূহ, উদ্ভিদ, গাছড়া, বিটপী, বৃক্ষসদৃশ বস্তু (ঘানিগাছ), শস্য তৃণ লতা ও গুল্ম ইত্যাদি, tree, শাজারা (আ.ﺸﺠﺮﺓ) (শ্ববি) মানুষ, মানব, লোক, জন, man, নাছ (আ.ﻨﺎﺲ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘মানুষ’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; সর্বপ্রকার উদ্ভিদকে বাংলায় ‘গাছ’ বলা হয় ২. বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে, মানুষের স্থূল আকারকে রূপকার্থে ‘গাছ’ বলা হয় (বাপৌছ) উবুদ-গাছ ও কল্পতরু (বাপৌচা) শর্মা (বাপৌউ) চতুষ্পদ ও চাঁদ (বাপৌরূ) গাছ^১ (বাপৌমূ) মানুষ।

গাছ^২ অব্য গাছা, গাছি, টি, টা, খানা, খানি, দীর্ঘ ও সরু পদার্থ বিষয়ক প্রত্যয় বিশেষ (একগাছ)।

গাছের সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of tree)
১.   “কিয়ামত স্থির করা, ফুলহীন বৃক্ষে ফল ধরা, ভ্রূণে স্থাপন গাছের চারা, ত্রিমণ্ডলে ঘুর্ণাকারে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৭৪)।
২.   “মাস অন্তে ফোটে ফুল, কোথায় গাছ কোথায়রে মূল, জানলে তার ঊল, ঘোর যায় ছুটে।” (পবিত্র লালন- ৩৪৮/৩)।

গাছের সংজ্ঞা (Definition of tree)
সাধারণত; বৃক্ষ ও গুল্মগুলোকে গাছ বলে।

গাছের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of tree)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; জীবের স্থূল আকারকে দেহ বা গাছ বলে।

গাছের প্রকারভেদ (Variations of tree)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; গাছ দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান গাছ ও ২. উপমিত গাছ।

১. উপমান গাছ (Analogical tree)
সাধারণত; সর্বপ্রকার উদ্ভিদকে গাছ বলে।

২. উপমিত গাছ (Compared tree)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মানুষের স্থূল আকারকে উপমিত গাছ বলে।

গাছের পরিচয় (Identity of tree)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘মানুষ’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ বিশেষ। বৃক্ষ ও গুল্মগুলোকে গাছ বলা হয়। শ্বরবিজ্ঞানে; মানবদেহের ছদ্মনাম পরিভাষা গাছ এবং মানুষের ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ও গাছ। এজন্য; শ্বরবিজ্ঞানের পাঠকদের বৃক্ষরূপ গাছ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে বসে থাকলেই চলবে না- তাদের শ্বরবিজ্ঞানের গাছ দুটি সম্পর্কেও ভালোভাবে জানতে হবে। তা না হলে পুরাণ পড়তে বা শুনতে গিয়ে গাছের দেহ ও মানুষ অভিধা গ্রহণ না করে বরং উদ্ভিদরূপ গাছ গ্রহণ করে বসবেন নিঃসন্দেহে। উল্লেখ্য যে; শ্বরবিজ্ঞানে; গাছ দ্বারা সর্বদা দেহ, মানুষ ও শিশ্ন বুঝানো হয়।

বড় আশ্চর্য হওয়ার বিষয় হলো সারা বিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত গাছ পরিভাষাটির দ্বারা কেবল উদ্ভিদ বা গুল্মগুলোকেই বুঝেন ও বুঝিয়ে থাকেন। এজন্য; তাদের চিরকালের চির ধর্মান্ধ বা মতবাদ অন্ধ বলা হয়। সাম্প্রদায়িকরা কখনই ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’গুলোর উপমিতপদ অন্বেষণ করতে চায় না। তারা কেবল উপমানপদ নিয়েই আলোচনা করতে অভ্যস্ত। উদাহরণত কবি নজরুলের একটি বাণী তুলে ধরা হলো;

“বল বীর চির উন্নত মমশির,
শির নেহারি আমারি,
নতশির ঐ শিখর হিমাদ্রির।”

সরল অর্থ; হে বীর তোমার মাথা চিরদিনই চিরউন্নত। কখনই তোমার মাথা অবনত হবে না। মাথা অবনত হবে হিমাদ্রির।

সাধারণত; হিমাদ্রি অর্থ হিমালয় বা হিমালয় পাহাড়। তবে; এখানে; তৎকালীন ব্রিটিস বড়লাটকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। ব্রিটিস বড়লাট কবির প্রতি অসদাচরণ করার জন্য কবি বিক্ষুব্ধ হয়ে এমন কবিতা লিখেছিলেন। এখানে; হিমাদ্রি উপমানপদ এবং বড়লাট উপমিতপদ। এখন কেউ যদি বাণীটির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বড়লাট অভিধা পরিত্যাগ করে হিমাদ্রি নিয়ে লেখতে আরম্ভ করে, তবে সে হিমাদ্রির মাথা নত করবে কিভাবে? তখন অগত্যা সে লিখতে বাধ্য হবে যে; বরফ গলায়ই হলো হিমাদ্রির মাথা নত করা। আর এতে না বাণীটির ব্যাখ্যা হলো, আর না প্রকৃতশিক্ষা উন্মোচিত হলো, আর না কাব্যটি নির্মাণের পটভূমি প্রকাশিত হলো। পরিভাষার উপমানপদ দ্বারা কখনই লেখার মূলশিক্ষা উদ্ঘাটন করা যায় না। বরং উপমিতপদ দ্বারা সর্বদাই মূলশিক্ষা উদ্ঘাটন করা যায়। অথচ সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকরা সর্বদা শ্বরবিজ্ঞানের উপমানপদ নিয়েই সর্বদা ব্যতিব্যস্ত থাকে। তাই; তারা শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত গাছকে সর্বদা উদ্ভিদ বলে থাকে। কিন্তু মরমী ও আত্মজ্ঞানীগণ শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত গাছকে সর্বদা মানুষ, দেহ ও শিশ্ন বলে থাকে।