৯০/২. টল
Stagger (স্ট্যাগার)/ ‘ارباك’ (আরবাক)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রপাতকারী’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘শুক্রপাতকারী’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘কাপুরুষ’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘গতাসু’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘মরা^৩’।

অভিধা (Appellation)
টল (বাপৌউ)বি ১.বিচলন, বিহ্বলতা, বিমুগ্ধতা, বিবশতা, stagger, ‘ارباك’ (আরবাক) বিণ চ্যুতি, ঝরণ, টলন, ধ্বংস, পড়ন, পতন, মরণ, মৃত্যু, স্খলন, faller, ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি) (শ্ববি) শুক্রপাতকারী, বীর্যপাতকারী, পৌরুষহীন, ejaculer (আল) ব্যক্তিত্বহীন, weak-spirited, জাবান (আ.ﺠﺒﺎﻦ), দানিউ (আ.ﺪﻨﻰﺀ) (রূপ্রশ) পাপিষ্ঠ, নরাধম, আত্মঘাতক, আত্মহত্যাকারী (ইদে) মুনঝাল (আ.ﻤﻨﺯﺍﻞ), ঝায়িল (আ.ﺯﺍﺌﻞ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রপাতকারী’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. অধঃপতিত ব্যক্তিকে টল বলা হয় ২. মৈথুনে শুক্রস্খলনকারীকে উপমার্থে টল বলা হয় (বাপৌছ) মরা^৩ (বাপৌচা) গতাসু (বাপৌউ) টল (বাপৌরূ) কাপুরুষ (বাপৌমূ) শুক্রপাতকারী।

টলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of stagger)
১.   “আছে বেহেস্তের আশায় মু’মিনগণ, হিন্দুরা দেয় স্বর্গেতে মন, টল কী অটলমুক্বাম, লিহাজ করে জানো আগে।” (পবিত্র লালন- ৬৬২/২)।
২.   “কামের ঘরে কপাট মারো, ভাবের একতালা গড়ো, এঁটে দাও প্রেম ছোড়ানে, সে টললে জীব- না টললে শিব, জানে যে শুদ্ধ রসিকজনে।” (পবিত্র লালন- ৯২৭/২)।
৩.   “ভাণ্ডের জল ঢেলে ফেলে, শ্যাম বলে ওঠালে, আধা যায় খাকে মিলে- জল আর কী মিলে, সেখানে নাই টলাটল, সে অটল হয়ে বসেছে।” (পবিত্র লালন- ৮২১/২)।
৪.   “ষোল কোটি গোপীর সঙ্গে, কৃষ্ণপ্রেম রসরঙ্গে, সে যে টলের কার্য নয় অটল না বলায়, সে আর কেমন।” (পবিত্র লালন- ৭০/২)।
৫.   “সে বৃক্ষের দুটি অপূর্ব ডাল, এক ডালে প্রেম অন্য ডালে কাল, চারযুগেতে আছে সে ফুল, নাই টলাটল জ্যোতির্ময়।” (পবিত্র লালন- ৮৯৭/২)।
৬.   “স্বরূপ রূপের জারির ধরণ, দোহারভাবে টলে দোহার মন, অটলকে টলাতে পরে, বলো কোনজনা।” (পবিত্র লালন- ৯৫৬/৩)।

টলের সংজ্ঞা (Definition of stagger)
সাধারণত; অধঃপতিত ব্যক্তিকে টল বলে।

টলের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of stagger)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মৈথুনে শুক্রস্খলনকারীকে টল বলে।

টলের প্রকারভেদ (Variations of stagger)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে টল দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান টল ও ২. উপমিত টল।

১. উপমান টল (Analogical stagger)
সাধারণত; অধঃপতিত ব্যক্তিকে উপমান টল বলে।

২. উপমিত টল (Compared stagger)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে মৈথুনে শুক্রস্খলনকারীকে উপমিত টল বলে।

টলের পরিচয় (Identity of stagger)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্রপাতকারী’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ। যে কোনো অধঃপতিত ব্যক্তিকেই টল বলা হয়। সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুস্তক-পুস্তিকায় এর ন্যূনাধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে; এ পরিভাষাটি একেক গ্রন্থে একেক ভাষায় ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠক-পাঠিকা ও শ্রোতাদের তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না। মৈথুনে টলা বা শুক্রপাত করা হলো দ্বিপস্থ জীবের সহজাত প্রবৃত্তি। টলাকে শ্বরবিজ্ঞানে; মৃত্যু বলা হয়। শ্বরবিজ্ঞানের সুবিজ্ঞ মনীষীদের মতে; পরম্পরা-জ্ঞানধারী কোনো একজন সাধকগুরুর নিকট দীক্ষা গ্রহণ করে টলা বা মৃত্যুর হাত হতে আত্মরক্ষা করা প্রত্যেক মানুষের একান্ত কর্তব্য। বিশ্ববিখ্যাত ও সুমহান রূপকার জারির তাবরীর নির্মিত আরবীয় পৌরাণিক কাহিনীর ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি) শিরোনামের অনুকূলে যে বর্ণনা পাওয়া যায়- তা দেখে মুসলমানদের অধিকাংশ মনীষী মনে করে যে; টলরা প্রকৃতই একটি ভিন্ন সম্প্রদায়। কিন্তু প্রকৃত বিষয় হলো সব শুক্রপাতকারীরাই টল বা ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি) কিন্তু এ টল বা ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি) নিয়ে কত যে পৌরাণিক কাহিনী এ যাবৎ নির্মিত হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। প্রকৃতপক্ষে যারা বিশ্বাসী তারা অটল এবং যারা অবিশ্বাসী তারাই টল। সারাবিশ্বের মানুষ টল ও অটল দু’প্রকার। টল ও অটল উভয় প্রকার লোকজনই যে পরিবারের, সমাজের ও রাষ্ট্রেরই মানুষ তা অনুধাবন না করে কেবল ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি) পরিভাষার অনুকূলে মুসলমান মনীষীরা তাদের ভিন্ন একটি সম্প্রদায় রূপে উপস্থাপন করে ছেড়েছে। আবার অন্য একদল মুসলমান মনীষীদের মতে, এ ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি) সম্প্রদায় কেবল পূর্বে ছিল কিন্তু বর্তমানে তাদের অস্তিত্ব পৃথিবীর কোথাও নেই। তাদের মতে; ‘ﺧﺎﺮﺟﻰ’ (খারিজি)রা কেবল সাম্প্রদায়িক গল্প হয়েই রয়েছে।

পরিশেষে বলা যায় মৈথুনে যিনি স্ত্রী জননপথে শুক্রপাত করেন তিনিই খারেজি। এটি একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’। এ পরিভাষাটি পূর্বযুগেও ছিল, এখনও আছে এবং অনন্তকাল পর্যন্ত থাকবে। সাম্প্রদায়িক গল্প কাহিনীগুলোর আত্মতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করা হলেই কেবল এদের ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’র প্রকৃত দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করা যায়। অন্যথায় সাম্প্রদায়িক রূপক গল্প কাহিনীর সঠিক শিক্ষা উদ্ঘাটন করা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। সাম্প্রদায়িক রূপক গল্প কাহিনীর সঠিক শিক্ষা সাম্প্রদায়িকদের নিকট নেই বলেই তাদেরকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।