২৭/০৩. ঢাকা
Pavilion (পেভিলিওন)/ ‘جناح’ (জুনাহ)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘জরায়ু’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘জরায়ু’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘নিধুয়া’। এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘কুঞ্জ, পাতাল, ফুল^২ ও স্বর্গপুর’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘অম্বর, আকাশ, বৈকুণ্ঠ ও মিথিলা’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘কাশী, দেবধাম, ব্রজধাম, মথুরা ও স্বর্গধাম’।

অভিধা (Appellation)
ঢাকা (বাপৌউ)বি ১. ঢাকানগরী ২. ঢাকন, ঢাকনা, আবরণ, আচ্ছাদন, pavilion, ‘جناح’ (জুনাহ) qবিণ আবৃত, লুকানো, গোপন, আচ্ছাদিত, গুপ্ত, অপ্রকাশিত qক্রি আচ্ছাদন করা, আবৃত্ত করা, ঢেঁকে রাখা, চাপিয়ে রাখা (প্র) ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ হতে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ও একটি বিখ্যাত নগর। এর পূর্ব নাম ছিল জাহাঙ্গিরনগর (ব্য্য) শ্বরবিজ্ঞানে; ঢাকা থাকে বলেই জরায়ুকে ঢাকা বলা হয় (শ্ববি) জরায়ু, গর্ভাশয়, uterus, womb, রেহেম (আ.ﺮﺤﻢ) (রূপ্রশ) মূলাধার, স্বাধিষ্ঠান (ইংপ) heaven, paradise (ফাপ) বেহেস্ত (ফা.ﺒﻬﺷﺖ) (ইপ) জান্নাত (আ.ﺠﻨﺎﺖ), আরশ (আ.ﻋﺭﺶ), ক্বলব (আ.ﻗﻟﺐ), মদিনা (আ.ﻤﺪﻴﻧﻪ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘জরায়ু’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; যে কোনো আবৃত স্থানকে ঢাকা বলা হয় ২. বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে, ঋতুমতীর জরায়ুকে উপমার্থে বাংলায় ঢাকা বলা হয় (বাপৌছ) কাশী, দেবধাম, ব্রজধাম, মথুরা ও স্বর্গধাম (বাপৌচা) অম্বর, আকাশ, বৈকুণ্ঠ ও মিথিলা (বাপৌউ) কুঞ্জ, ঢাকা, পাতাল, ফুল^২ ও স্বর্গপুর (বাপৌরূ) নিধুয়া (বাপৌমূ) জরায়ু।

ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some important quotations of pavilion)
১.   “আকাশে হয় ভাটা জোয়ার, কূল ভাঙ্গে পাতালে তার, ঢাকানগরের অবাক ব্যাপার, টার্মিনাল মহাখালে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
২.   “নিকট থেকে দূরে দেখায়, যেমন কেশের আড়ে পাহাড় লুকায়, দেখ মনা, ঢাকা দিল্লি হাতড়ে ফিরিরে, কুলের ঘোর যায় না।” (পবিত্র লালন- ২৫৭/২)।
৩.   “সাধু পেলে চরণ ধরে, অমূল্য-ধন বিক্রি করে, ঘর বাঁন্ধ গিয়ে ঢাকায়, (তেতলা) মালখানাটা নিলামেতে যায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৯১)।

ঢাকার কয়েকটি সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of pavilion)
১.   “মনের ভাব খুলে নাই নবি মর্ম খুলেছে, কেউ ঢাকা দিল্লি হাতড়ে ফিরে, কেউ দেখে হাতের কাছে।” (পবিত্র লালন- ৭৫৬/১)।
২.   “যার ওপরে তার মণিকোঠা, তাতে কিছুই না যায় টোটা, লালন কয় পাগলা বেটা, ঢাকায় বসে দিল্লির খবর জানে।” (পবিত্র লালন- ১১৪/৪)।
৩.   “হাতের কাছে মামলা থুয়ে, কেন ঘুরে বেড়াও মন ভেয়ে, ঢাকানগর দিল্লি লাহোর, খুঁজলে মিলে এ দেহে।” (পবিত্র লালন- ৯৯১/১)।
৪.   “হাতের কাছে যারে পাও, ঢাকা দিল্লি খোঁজতে যাও, কোন অনুসারে, তোর মতো হতভাগা নাই, এ সংসারেরে।” (পবিত্র লালন- ২৬৯/৩)।

ঢেকে রাখা অর্থে ‘ঢাকা’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology pavilion sense for covered)
১.   “অগ্নি ঢাকা রয় ভস্মের ভিতরে, তেমনি, সুধা রয় গরলে ছল করে, সুধার লোভে গিয়ে- মরে গরল খেয়ে, মন্থনের সাঁতার না জানে যারা।” (পবিত্র লালন- ৪১৮/২)।
২.   “অগ্নি যেমন ভস্মে ঢাকা, তেমনি, সুধা গরল-মাখা, মন্থনদণ্ডে যাবে দেখা, ভিন্ন আকারে।” (পবিত্র লালন- ৯২০/২)।
৩.   “অগ্নি রয়েছে ভস্মে ঢাকা, অমৃত রয়েছে গরলে মাখা, সেরূপে কত রসিক সুজন, ডুবে তার অন্বেষণ করছে।” (পবিত্র লালন- ৭২৯/২)।
৪.   “অমূল্য কর্পূর যা, ঢাকা দেয়া আছে তা, কেমনে প্রবেশ করে হাওয়া, কর্পূরের ভাঁড়ে।” (পবিত্র লালন- ৩৭৭/৩)।
৫.   “আগুন আছে ভস্মে ঢাকা, সুধা তেমনই গরল মাখা, মন্থন করলে যাবে দেখা, ভিন্ন আকারে।” (পবিত্র লালন- ৭০১/২)।
৬.   “গঠেছে এক কারিগরে, স্ত্রী পুরুষভঙ্গি করে, তাদের চাহনিতে সবাই চেনে, ঢাকলেও না ঢাকা যাবে।” (পবিত্র লালন- ১০০০/৩)।
৭.   “দুগ্ধে যেমন থাকে ননি, ভেয়ানে বিভিন্ন জানি, অমৃতসুধা ঢাকা তেমনি, আগে পরে গরল দিয়ে।” (পবিত্র লালন- ৯৮৭/৩)।
৮.   “যে লীলা ব্রহ্মাণ্ডের ’পর, সে লীলা ভাণ্ড মাঝার, ঢাকা যেমন চন্দ্র আকার, মেঘের পাশে।” (পবিত্র লালন- ৬৭০/৩)।
৯.   “চাঁদে চাঁদ ঢাকা দেয়া, চাঁদে দেয় চাঁদের খেয়া (দেয়রে), জমিনেতে ফলছে মেওয়া, ঐ চাঁদের সুধা ঝরে।” (পবিত্র লালন- ৪৫২/৩)।

ঢাকার সংজ্ঞা (Definition of pavilion)
সাধারণত; যে কোনো আবৃত স্থানকে ঢাকা বলে।

ঢাকার আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of pavilion)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; স্ত্রী জননতন্ত্রের সন্তান ধারণ ও লালনপালনে নিয়োজিত অন্ত্রকে ঢাকা বলে।

ঢাকার প্রকারভেদ (Variations of pavilion)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; ঢাকা দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান ঢাকা ও ২. উপমিত ঢাকা।

১. উপমান ঢাকা (Analogical pavilion)
সাধারণত; যে কোনো আবৃত স্থানকে উপমান ঢাকা বলে।

২. উপমিত ঢাকা (Compared pavilion)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; ঋতুমতীর জরায়ুকে উপমিত ঢাকা বলে।

ঢাকার পরিচয় (Identity of pavilion)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘জরায়ু’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ। সাধারণত; যে কোনো আবৃত স্থানকে ঢাকা বলা হয়। তবে; শ্বরবিজ্ঞানে; কেবল জরায়ুকে ঢাকা বলা হয়। জরায়ু সর্বদা ঢাকা বা আবৃত থাকে। এজন্য; শ্বরবিজ্ঞানে; জরায়ুকে ঢাকা বলা হয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো; এদেশের অধিকাংশ বৈখ্যিক ও টৈকিক সাম্প্রদায়িক শ্বরবিজ্ঞানগুলোর ব্যাখ্যা ও টীকা লিখতে গিয়ে ‘ঢাকা’ পরিভাষাটির দ্বারা; কেবল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকেই বুঝে ও বুঝিয়ে থাকে। এজন্য; শ্বরবিজ্ঞান, পুরাণ প্রেমিক পাঠক শ্রোতারা কখনই প্রকৃত ঢাকার সন্ধান পায় না।