৭৯/১. ঢেউ
Surge (সার্জ)/ ‘موجة’ (মাওজা)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘যৌবন’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘যৌবন’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘সম্পদ’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘কল্লোল ও হিল্লোল’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘ঊর্মী ও শ্বফল্ক’।

অভিধা (Appellation)
ঢেউ (বাপৌরূ)বি ঊর্মী, কল্লোল, তরঙ্গ, দোলন, দোলা, আন্দোলন, হিল্লোল, surge, ‘موجة’ (মাওজা), ‘عرام’ (উ’রাম) (শ্ববি) সুস্থতা, যৌবন (ইংপ) glory, proud (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘যৌবন’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; পুকুর, দীঘি, দহ, নদী ও সাগরের তরঙ্গকে বাংলায় ঢেউ বলা হয় ২. বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে, মানুষের যৌবনকে রূপকার্থে ‘ঢেউ’ বলা হয় (বাপৌছ) ঊর্মী ও শ্বফল্ক (বাপৌচা) কল্লোল ও হিল্লোল (বাপৌউ) সম্পদ (বাপৌরূ) ঢেউ (বাপৌমূ) যৌবন।

ঢেউয়ের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of surge)
১.   “গুরু বলো নৌকা খোল, সাধের জোয়ার যায়, মন-পবনের ঢেউ ওঠেছে, প্রেমের বাদাম দাও নৌকায়।” (পবিত্র লালন- ৪০০/১)।
২.   “জল বিনা এক নদ কলকলে চলে, বিনা হাওয়ায় ঢেউ খেলে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১৫)।

ঢেউয়ের কয়েকটি সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of surge)
১.   “অস্থি চর্ম শূণ্যরূপ, আছে মহারসের কূপ, বেগে ঢেউ খেলে, তার এক বিন্দু- অপারসিন্ধু, হয়রে এ ভূমণ্ডলে।” (পবিত্র লালন- ২৯৩/২)।
২.   “কায়ারূপ ধরে চলে সে, দেখা দেয় ঢেউতে ভেসে, কোন সাধনে ধরব কিসে, ইশারায় কথা বলা তাই।” (পবিত্র লালন- ৮৪৪/২)।
৩.   “কারণনদীর জলে একটা, যুগলমীন খেলছে নীরে, ঢেউয়ের ওপর ফুল ফুটেছে, তার ওপর চাঁদ ঝলক মারে।” (পবিত্র লালন- ২৭৬/১)।
৪.   “গঙ্গা যমুনা আর সরস্বতী নদী, ওঠেছে ঢেউ পাতাল ভেদি, পার হয়ে যাও, অকূল সমুদ্দরি।” (পবিত্র লালন- ৭৭৪/২)।
৫.   “ছল্ছল্ কল্কল্ দরিয়াতে ঢেউ, মাতঙ্গ তুফান দেখে কয় কেউ, দিব না পাড়ি কারণ দরিয়া, নাও ডুবলে উপায় দেখি না।” (পবিত্র লালন- ৭২/৩)।
৬.   “পরের সঙ্গে জন্মাবধি, পাশাখেলায় রইলাম বন্দি, ভবকূপে দিবারাত্রি, কত ঢেউ মোর উঠতেছে।” (পবিত্র লালন- ৩০৮/৩)।
৭.   “বিনা বায়ে খেলিছে ঢেউ, নামিলে আর বাঁচে না কেউ, বসিয়া রহে বলন সেও, কালোশশী নিরীক্ষ ধরি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৬৬)।
৮.   “শূন্য জ্যোতিকা হতে সৃষ্টি বাতাসের গতি, বায়ু জ্যোতি ঢেউ খেলিয়া হলো প্রেমরতী, সাঁই দিবারাতি ডিম্বগতি- নামে অপরূপ মতি, শূন্যের ওপর থাকে ঘর বান্ধিয়া বৃন্দাবন।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৯)।
৯.   “সামান্যে কী চেনা যায় সে নদী, বিনা হাওয়ায় ঢেউ ওঠে নিরবধি, শুভযোগে জোয়ার আসে, ত্রিবেণী ভাসে বানে।” (পবিত্র লালন- ৬৪৫/২)।
১০. “সিরাজ সাঁইজি বলে, গাছ রয়েছে অগাধ জলে, ঢেউ খেলে ফুলে ফলে, লালন বাঞ্ছা করলে দেখতে পাবি।” (পবিত্র লালন- ৮১২/৪)।

ঢেউর সংজ্ঞা (Definition of surge)
সাধারণত; যে কোনো তরঙ্গকে ঢেউ বলে।

ঢেউয়ের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of surge)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মানুষের যৌবনকে ঢেউ বলে।

ঢেউর প্রকারভেদ (Variations of surge)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; ঢেউ দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান ঢেউ ও ২. উপমিত ঢেউ।

১. উপমান ঢেউ (Analogical surge)
সাধারণত; যে কোনো তরঙ্গকে উপমান ঢেউ বলে।

২. উপমিত ঢেউ (Compared surge)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মানুষের যৌবনকে উপমিত ঢেউ বলে।

ঢেউর পরিচয় (Identity of surge)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘যৌবন’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ বিশেষ। সাধারণত; যে কোনো তরঙ্গকে ঢেউ বলা হয় কিন্তু শ্বরবিজ্ঞানে; মানুষের যৌবনকে ঢেউ বলা হয়। যেমন; সাগরের ঢেউ সৃষ্টি হয়ে অধিক সময় থাকে না। তেমনই; মানুষের যৌবনও এসে অধিক সময় অপেক্ষা করে না। সেজন্য; শ্বরবিজ্ঞানে; যৌবনকে ঢেউয়ের সাথে তুলনা করা হয়।

অন্যদিকে; বড় অনুতাপের বিষয় হলো; সারা বিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অনুবাদক ও অভিধানবিদরা পুরাণ বা সাম্প্রদায়িক পুস্তক-পুস্তিকায় বর্ণিত ‘ঢেউ’ পরিভাষাটির দ্বারা কেবল জলাশয়ের জলের তরঙ্গকেই বুঝে ও বুঝিয়ে থাকে। তাই; তারা অতীতে কখনই আত্মদর্শনের বা শ্বরবিজ্ঞানের সন্ধানলাভ করতে পারে নি; এখনও পারছে না এবং ভভিষ্যতেও পারবে না।