৪৪/২. দিন
Day (ডে)/ ‘ﻨﻬﺎﺮ’ (নাহার)
ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পবিত্রতা’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘পবিত্রতা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘পূর্ণিমা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘ইন্দুমতী ও পূর্ণেন্দু’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘মঙ্গলবার ও শুক্লপক্ষ’।
অভিধা (Appellation)
দিন (বাপৌউ)বি দিবা, দিবস, চব্বিশ ঘণ্টাকাল, অহোরাত্র, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়, একত্রে এক দিবস ও এক রাত্র, day, ‘ﻨﻬﺎﺮ’ (নাহার) (জ্যোশা) তিথি, চান্দ্র মাসের ত্রিশ ভাগের একভাগ (প্র) রজস্বলাদের পবিত্রতার সূচনা হতে অন্য স্রাব আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময় (শ্ববি) পূর্ণিমা, পৌর্ণমাসী, শুক্লপক্ষ, পবিত্রতা, বিশুদ্ধতা, নির্মলতা, purity (রূপ্রশ) শরীরের সুস্থ্যতা (ফাপ) চাহারশম্বা (ফা.ﭼﻬﺎﺮ ﺸﻧﺒﻪ), পাক (ফা.ﭙﺎﮎ) (ইপ) ইদ্দত (আ.ﻋﺩﺖ), ত্বহুর (আ.ﻄﻬﺭﺓ), মি’রাজ (আ.ﻤﻌﺭﺍﺝ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পবিত্রতা’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; সূর্য দৃশ্যকালীন সময়কে দিন বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; রজস্বলাদের একস্রাবের প্রস্থান হতে অন্য স্রাব সূচনার মধ্যবর্তী সময়কে পবিত্রতা বা রূপকার্থে দিন বলা হয় (বাপৌছ) মঙ্গলবার ও শুক্লপক্ষ (বাপৌচা) ইন্দুমতী ও পূর্ণেন্দু (বাপৌউ) দিন (বাপৌরূ) পূর্ণিমা (বাপৌমূ) পবিত্রতা।
দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of day)
১. “আমার বাড়ির কাছে আরশিনগর, সেথায় এক পড়শি বসত করে, আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।” (পবিত্র লালন- ১২৯/১)।
২. “একে তো মোর জীর্ণতরী, পাপে বোঝাই হয়েছে ভারী, কোন্ দিন যেন তরী ডুবে যায়, লালন বলে গুরু এসে হও কাণ্ডারী, এ প্রেমনৌকায়।” (পবিত্র লালন- ৪০০/৩)।
৩. “দেখরে মন দিনরজনী, কোথায় হতে হয়, কোন পাকে দিন আসে ঘুরে, কোন পাকে রজনী যায়।” (পবিত্র লালন- ৫৪৩/১)।
৪. “পাপীর ভাগ্যে এমন দিন, কী আর হবেরে, দেখ দেখ মনরায়, হয়েছে উদয়, কী আনন্দময় সাধু সাধ-বাজারে।” (পবিত্র লালন- ৬২৪/১)।
৫. “বান্ধব নাইরে শ্যাম বিনা, বলন কাঁন্দে ব্রজধামে, দিবস জাগিয়ারে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
৬. “সময় গেলে সাধন হবে না, দিন ধরে তিনের সাধন কেন করলি না।” (পবিত্র লালন- ৯২১/১)।
৭. “সাতাশেতে দিকের কাঁটা, ছয়প্রহরে দিনের ভাটা, সাড়ে তিনে ঘণ্টাকাঁটা, বেল বারটা ত্রিবেণে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১০)।
দিনের সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of day)
১. “অধঃপাতী প্রেমতরণী, তিনদিনেতে পাতালগামী, কাঁন্দি বসে দিনরজনী, এখন চোখেতে দেখি না।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০০)।
২. “আয়রে নয়নে নিরীক্ষ বান্ধিয়া অষ্টাঙ্গে বসে, আয়রে পঞ্চবাণ ষোল কলার জানিয়া দিশে, তিন দিনের মর্ম জেনে, অনাসে পার হইয়া যায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩১২)।
৩. “এমন দিন কী হয় আর, খোদা হয় রাসুল রূপে অবতার।” (পবিত্র লালন- ২২৬/১)।
৪. “ওরে পূর্ণিমা রজনী গণে, আত্মা আসে ধরাধামে, তিন দিনের মর্ম জেনে, সাধুরা তার মুক্তি দেয়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১২)।
৫. “কয় দমেতে চলে ঘড়ি, করবে ঠিকানা, কয় দমেতে দিনরজনী চলছে বল না।” (পবিত্র লালন- ২৬৩/১)।
৬. “কোন্ দিনেতে জোয়ার আসে, ঐ দিনের আশে থাকরে বসে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৮৬)।
৭. “ছয়প্রহর সাতদিনের মানি, গড়েছে এ দেহবিজ্ঞানী, চাররঙ ধরে দিনরজনী, করলাম কারের বিবরণ।” (পবিত্র লালন- ৯১/৩)।
৮. “তার ওপরে আলেক ধনী, খবর হচ্ছে দিনরজনী, নূর নবির সদর মুক্বামি, সিরাজ সাঁইজি কয় লালনরে।” (পবিত্র লালন- ৯৯/৫)।
৯. “তিন দিনের তিনমর্ম জেনে, রসিক সাধনে ধরে তা একদিনে।” (পবিত্র লালন- ৪৮৮/১)।
১০. “ভক্তি-জমাদারের হাতে, দু’দিন চোর জিম্মি থাকে, তিন দিনের দিন দেয় সে চালান, আষ্টেপিষ্টে বেঁধে।” (পবিত্র লালন- ৮৭৮/২)।
১১. “মণিপুর ত্রিবেণীতে গিয়ে, শুধুই লীলায় মইজ না, দিন ধরিয়ে তিনের ঘরে, কর সঠিক উপাসনা।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৫৮)।
১২. “মাসে তিনদিন সে ঘর খুলে, শত সাধুরা দেখে অটলবলে, বলন কয়রে হীনবলে, খুলে না কেন জানি।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
১৩. “যেদিন গতি স্থিতি হবে, সে বিখণ্ড সেদিন হবে, ভুবনে বদনাম রটিবে, পারে যেতে পারবে না রে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৭৪)।
১৪. “সেথা ত্রিনয়নী রাক্ষসিনী, বসে রয় দিনরজনী– গো, একা পেলে কালনাগিনী, বলন কয় সে মারে প্রাণ।” (বলন তত্ত্বাবলী-৫৪)।
সৌরদিন অর্থে ‘দিন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology day sense for solarday)
১. “আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে, আমি জনমভরে একদিনও দেখলাম না তারে।” (পবিত্র লালন- ১২৩/১)।
২. “আর কিরে এ পাপীর ভাগ্যে, দয়াল-চাঁদের দয়া হবে, কতদিন এ হালে যাবে, বেয়ে এ পাপতরণী।” (পবিত্র লালন- ২১৬/৩)।
৩. “একদিন পারের কথা ভাবলি না রে, পার হবি হীরার সাঁকো কেমন করে।” (পবিত্র লালন- ১৯৯/১)।
৪. “এমন মানবসমাজ কবে গো সৃজন হবে, যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান, জাতি গোত্রভেদ নাহি রবে।” (পবিত্র লালন- ২২৮/১)।
৫. “কবে হয় সজল বরষা, রেখেছি মন সে ভরসা, আমার এ ভগ্নদশা, যাবে কতদিন পরে, এবার যদি না পাই চরণ, আবার কী পড়ি ফেরে।” (পবিত্র লালন- ৮৬০/২)।
৬. “দরদের ভাই বন্ধুজনা, মরলে সঙ্গে কেউ যাবে না, মন তোমারি, সেদিন খালি হাতে একা পথে, বিদায় দিবে তরী।” (পবিত্র লালন- ৫৩৬/৩)।
৭. “মন তুই রইলি খাঁচার আশে, খাঁচা যে তোর কাঁচা বাঁশে, কোন্ দিন খাঁচা পড়বে ধ্বসে, লালন কেঁদে কয়।” (পবিত্র লালন- ৩৭৫/৪)।
৮. “মরলে জান ইল্লিয়্যিন সিজ্জিনে রয়, যতদিন হিসাব না হয়, কেউ বলে ফিরে জন্মায়, ইল্লিয়্যিন সিজ্জিন কোথায় খুঁজি।” (পবিত্র লালন- ৩৪৩/৪)।
———————————————————————————-
১. “কখন আসবে যমের চেলা, ভেঙ্গে যাবে ভবের খেলা, সে দিন হিসাব দিতে জ্বালা ঘটবে শেষে।” (পবিত্র লালন- ৫৭/২)।
২. “কাঁন্দি বসে দিনরজনী, নববাসর সাজাইয়া।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৯)।
৩. “দেখাদেখি গড়ে বিদ্যালয়, তারা গণে দিন বারাটায়, মুখের দ্বারা সাগর শুকায়, চাটাম মারাই সারাসার।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
৪. “না ছিল আসমান জমিনি দিনরজনী, আলেক রূপে রয় ক্বাদিরগনি, তাঁর নূরে মা জননী, তাঁর সাথে হলো মিলন।” (পবিত্র লালন- ৯১/২)।
৫. “মদনরাজার ডাণ্ডা ভারী, হলাম তারই আজ্ঞাকারী, যার মাটিতে বসত করি, চিরদিন তারে চিনলাম না।” (পবিত্র লালন- ১২৭/২)।
৬. “শুনি মায়ের পালিত ছেলে, দুটি গর্ভে জন্ম হলে, কার গর্ভে কয়দিন ছিলে, হায়াত মউত কে লেখলে।” (পবিত্র লালন- ১৩৯/৩)।
৭. “সৃষ্টিমূলে ছিল যাহা, এখনও ঠিক আছে তাহা, কমবেশী মানুষের বাঁধা, সাদা দিন কালো রজনী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৬)।
আয়ু অর্থে ‘দিন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology day sense for longevity)
১. “আর কী হবে এমন জনম বসব সাধুর মেলে, হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়, ঘিরে এলো কালে।” (পবিত্র লালন- ১৭১/১)।
২. “কারবা আশায় রইলি চকোর, কারেবা ভালোবেসে, দিন ফুরাল বেলা গেল, মায়াময় সংসারের আশে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
৩. “কী পাশাখেলবরে, আমার জুড়ি কে আছে, পাশাখেলা যাওয়া আসা, আমার খেলার দিন গেছে।” (পবিত্র লালন- ৩০৮/১)।
৪. “কে তোমার আর যাবে সাথে, কোথায় রবে ভাইবন্ধুগণ, পড়বি যেদিন কালের হাতে।” (পবিত্র লালন- ৩৩০/১)।
৫. “গৌর-চাঁদ দিন গেল বলে, আকুল হলো তিলে তিলে, লালন কয় সে লীলে, সুমাধুরী।” (পবিত্র লালন- ৬৭৫/৫)।
৬. “চিরদিন পোষলাম এক অচিন-পাখি, ভেদ পরিচয় দেয় না আমায় ঐ খেদে ঝরে আঁখি।” (পবিত্র লালন- ৪৪৯/১)।
৭. “দিন গেলে দিন কী পাবি, পড়ে রবে বিষয় সবি, সাধুর সঙ্গ কবে নিবি, চরণ পরশে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
৮. “নাই আমার ভজন সাধন, চিরদিন কুপথে গমন, নাম শুনেছি পতিতপাবন, তাইতো; দিই দোহাই।” (পবিত্র লালন- ৬২৩/৩)।
৯. “বহুতর্কে দিন বয়ে যায়, বিশ্বাসে ধন নিকটে পায়, সিরাজ সাঁইজি ডেকে- বলে লালনকে, কু’তর্কের দোকান খুলিস না আর।” (পবিত্র লালন- ৯২৬/৪)।
১০. “বাহার তো গেছে চলে, পথে যাও ঠ্যালা পেলে, কোন্ দিন পাতাল ধাবা, তবু তোমার গেল না, তেড়া চলন বদলোভা।” (পবিত্র লালন- ৭৫১/২)।
১১. “মন সহজে কী সহিহ হবা, চিরদিন ইচ্ছেমত আইল ডেঙ্গিয়ে ঘাস খাবা, গাদার ’পর মুগুর পড়লে, সে দিনেগা টের পাবা।” (পবিত্র লালন- ৭৫১/১)।
১২. “যেতে সাধ হয়রে কাশী, কর্মফাঁসি বাধে গলায়, আমি আর কতদিন ঘুরব, এমন নাগরদোলায়।” (পবিত্র লালন- ৮৪৩/১)।
১৩. “সাধনার বল যাদের ছিল, তারা কূলকিনার পেল, আমার দিন বাজে গেল, কী যেন হয় ললাটে।” (পবিত্র লালন- ২৩৪/৩)।
———————————————————————————-
১. “আয় চলে আয় দিন বয়ে যায়, যাবি যদি নিত্যভুবনে, সংসার অসার, কেন ভুলে আছিস মায়ার বাঁধনে।” (পবিত্র লালন- ১৬১/১)।
২. “আমার মনরে দিন থাকতে চেনে দেহের মানুষ ধর, আগে মনের-মানুষ ধর, সার আপনকর্ম সার।” (পবিত্র লালন- ১৩৫/১)।
৩. “কোন্ দিন সূর্যের অমাবস্যে, দেখি চাঁদের অমাবস্যা মাসেমাসে।” (পবিত্র লালন- ৩৬১/১)।
৪. “দিন উড়িয়ে মন আনন্দে, শেষকালে বসে কাঁদে, অধীন বলন ছন্দ বান্ধে, অসম্ভব ব্যাপারস্যাপার।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
৫. “দিন থাকতে গুরু ধরে, সাধন ভজন কর গো তোরা, ফকির লালন বলে সাঁই চরণের, ভেদ পাবা না গুরু ছাড়া।” (পবিত্র লালন- ২৫২/৪)।
৬. “দিনের দিন ফুরিয়ে এলো, মহাকালে ঘিরে নিলো, বলে মূঢ় লালন- হীন হয়েছে ভজন, না জানি ভাগ্যে কী হয়।” (পবিত্র লালন- ১৮৩/৪)।
৭. “না জানি কলির শেষে, কত ঢং উঠবে ভেসে, লালন ভেড়োর দিন যে গেছে, যে বাঁচো সে দেখবে ভাই।” (পবিত্র লালন- ৯৪/৪)।
৮. “ভাবতে ভাবতে দিন আখির হলো, ষোল আনা বাকি পড়ল, কী আলস্যে ঘিরে এলো, দেখলি না খুলে আঁখি।” (পবিত্র লালন- ৬৩/২)।
৯. “ভেবে কয় ফকির লালন, পরের সঙ্গে দিন কাটালাম, পিতৃধন গেল তামাম, সে ভাবনা ভাবলাম না।” (পবিত্র লালন- ১৫২/৪)।
১০. “যে ঘরামি ঘর বেঁধেছে, কোনখানে সে বসে আছে, সিরাজ সাঁইজি কয় না খুঁজে, দিন তো রয়ে যায় লালন।” (পবিত্র লালন- ২২৩/৪)।
যৌবনকাল অর্থে ‘দিন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology day sense for maturity period)
“অসার ভেবে সারদিন গেল আমার, সারবস্তু ধন হ’লাম হারা, হাওয়া বন্ধ হলে সব যাবে বিফলে, দেখেশুনে লালস গেল না মারা।” (পবিত্র লালন- ৬১/১)।
সাম্প্রদায়িক মতবাদ অর্থে ‘দিন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology day sense for schismatical doctrine)
১. “আপনারে আপনি চেনে নে, দিন-দুনিয়ার ’পর যার নাম অধর তারে চিনব কেমনে।” (পবিত্র লালন- ১১৬/১)।
২. “আয় গো যাই নবির দীনে, দিনের ডঙ্কা বাজে সদাই মক্কা মদিনে।” (পবিত্র লালন- ১৬০/১)।
৩. “কোথায় আছেরে দিন-দরদী সাঁই, চেতনগুরুর সঙ্গ লয়ে, খবর করো ভাই।” (পবিত্র লালন- ৩৫০/১)।
৪. “কোন চাঁদের কত তারইখে দিনের নবির জন্ম হয়, চাঁদের যদি হয়রে বারো, মাসের তখন ছিল কয়।” (পবিত্র লালন- ৩৬০/১)।
৫. “চিরদিন সে যে ফুল, দিন-দুনিয়ার মুক্ববুল, যাতে পয়দা দিনের রাসুল, মালিক সাঁই যার পৌরুষ গায়।” (পবিত্র লালন- ২৬০/৩)।
৬. “ডিম্বের মধ্যে কেবা ছিল, বাইরে কিভাবে সে এলো, লালন বলে ভেদ যে পেল, ঘুচল দিনকানা।” (পবিত্র লালন- ৬০১/৪)।
৭. “তোমা বিনা এমন শাসন, কে করবে দিনের কারণ, লালন বলে আর তো এমন, বাতি জ্বলবে না।” (পবিত্র লালন- ৪৯৮/৫)।
৮. “নিজে সত্য না হলে, গুরু সত্য হয় কোন কালে, নিজে যেমন দেখ না তেমন, দিন-দয়াময়।” (পবিত্র লালন- ৩৭৪/২)।
৯. “ফুলে মধু প্রফুল্লতা, ফলে তার অমৃতসুধা, এমন ফুল দিন-দুনিয়ায় পয়দা, জানলে দুর্গতি যায়।” (পবিত্র লালন- ২৬০/২)।
১০. “সে নদীর পিছলঘাটা, চাঁদ কটালে খেলছে ভাটা, দিন-দুনিয়ার পাড়া একটা, মীন রয়েছে মাঝখানে।” (পবিত্র লালন- ১২০/২)।
১১. “হায়াতুল মুর্সালিন বলে, কুরানেতে লেখা দেখি, দিনের রাসুল মারা গেলে, কেমন করে গৃহে থাকি।” (পবিত্র লালন- ৮৬৯/৩)।
———————————————————————————-
১. “আগমে নিগমে তাই কয়, গুরু রূপে দিন-দয়াময়, অসময়ে সখা সে হয়, অধীন হয়ে যে তারে ভজবে।” (পবিত্র লালন- ৩৯৮/৩)।
২. “আছে দিন-দুনিয়ার অচেনা-মানুষ একজনা, কাজের বেলায় পরশমণি, অসময়ে তাঁরে কেউ চেনে না।” (পবিত্র লালন- ৮৩/১)।
৩. “আল্লাহ আদম না হলে, পাপ হতো সিজদা দিলে, শিরিক পাপ যারে বলে, এ দিন-দুনিয়ায়।” (পবিত্র লালন- ১১১/২)।
৪. “কেন খুঁজিস মনের-মানুষ, বনে সদাই, দেহের মাঝে আত্মা রূপে, খেলছে সাঁই দিন-দয়াময়।” (পবিত্র লালন- ৩৩৩/১)।
৫. “কোন চরণ এ দিনহীনকে দিবে, দুটি চরণ বৈ নয়, আছে শতভক্তের হৃদয়, দয়াময় আমার ভাগ্যে কী হবে।” (পবিত্র লালন- ৩৫৮/১)।
৬. “দিনের দিন ফুরিয়ে এলো, মহাকালে ঘিরে নিলো, বলে মূঢ় লালন- হীন হয়েছে ভজন, না জানি ভাগ্যে কী হয়।” (পবিত্র লালন- ১৮৩/৪)।
৭. “যে রাসুল সে দিন-দয়াময়, সাধু দরবেশ জানতে পায়, তিনি আহম্মদ মুহাম্মদ হয়, তার জন্ম নয় যোনিতে।” (পবিত্র লালন- ৯৯৫/৩)।
রজকাল অর্থে ‘দিন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology day sense for menstrual period)
“যখন নবিজি গর্ভে ছিল, তিনদিন বাইরে গেল, কোনখানে কোন দেশে গেল, কোন নাম ছিল সে জায়গায়।” (পবিত্র লালন- ৩৬০/২)।
দিনের ওপর একটি পূর্ণ লালন (A full Lalon on the day)
১দেখরে মন দিনরজনী,
কোথায় হতে হয়,
কোন পাকে দিন আসে ঘুরে,
কোন পাকে রজনী যায়।
২রাত্রদিনের খবর নাই যার,
কিসের একটা উপাসনা তার,
নাম গোয়ালা কাঁজি ভক্ষণ,
ফকিরি তার তেমন প্রায়।
৩কয় দমে হয় দিনের পাড়ি,
কয় দমে হয় রজনী আখিরি,
আপন ঘরের নিক্বাশ করি,
যে জানে সে মহাশয়।
৪বাইর খুঁজে কী যাবে জানা,
কারিগরের কী গুণপনা,
লালন বলে তিনটি তারে,
অনন্তরূপ কল খাটায়।” (পবিত্র লালন- ৫৪৩)।
দিনের সংজ্ঞা (Definition of day)
সাধারণত; সূর্য দৃশ্যকালীন সময়কে দিন বলে।
দিনের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of Day)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; রজস্বলাদের একস্রাবের প্রস্থান হতে অন্য স্রাব সূচনার মধ্যবর্তী সাতাশদিনকে পবিত্রতা বা রূপকার্থে দিন বলে।
দিনের প্রকারভেদ (Variations of day)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; দিন তিন প্রকার। যথা; ১. সৌর দিন, ২.চান্দ্র দিন ও ৩.দৈহিক দিন।
১. সৌরদিন (Solarday)
সাধারণত; সূর্য দৃশ্য হওয়ার পর হতে সূর্য অদৃশ্য হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে সৌরদিন বলে।
সৌরদিন আবার তিন প্রকার। ১. পাশ্চাত্য সৌরদিন ২. আরব্য সৌরদনি ও ৩. বাংভারতীয় সৌরদিন।
১. পাশ্চাত্য সৌরদিন (Western solarday)
রাত্র ১২টা হতে পরের রাত্র ১২টা পর্যন্ত সময়কে পাশ্চাত্য সৌরদিন বলে।
২. আরবীয় সৌরদিন (Arabian solarday)
সন্ধ্যা ৬টা হতে পরের সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সময়কে আরব্য সৌরদিন বলে।
৩. বাংভারতীয় সৌরদিন (Bangindian solarday)
সকাল ৬টা হতে পরের সকাল ৬টা পর্যন্ত সময়কে বাংভারতীয় সৌরদিন বলে।
২. চান্দ্রদিন (Lunarday)
চান্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী গণনাকৃত দিবসকে চান্দ্রদিন বলে।
৩. দৈহিকদিন (Fleshlyday)
শ্বরবিজ্ঞানে; আলোচিত রজস্বলাদের পবিত্রকালের ২৭/২৮টি সৌরদিনের সমষ্টিকে দৈহিকদিন বলে।
আবার দিন পাঁচ প্রকার। যথা; ১. সাধারণ দিন ২. ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দিন ৩. জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিন ৪. সাম্প্রদায়িক গুরুত্বপূর্ণ দিন ও ৫. আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ দিন।
১. সাধারণ দিন (Ordinary day)
সাধারণভাবে অতিবাহিত দিনগুলোকে সাধারণ দিন বলে।
২. ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দিন (Historical important day)
ইতিহাসের বিখ্যাত দিনগুলোকে যার যার ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে। যেমন; ১৭ জুন। এটি; লর্ডক্লাইভের নিকট নবাবের পরাজয় দিবস রূপে বিখ্যাত।
৩. জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিন (National important day)
ভিন্ন ভিন্ন জাতির স্মরণীয় দিনগুলোকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে। যেমন; ২১ ফেব্রুয়ারী, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর বাঙালী জাতির জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিন।
৪. সাম্প্রদায়িক গুরুত্বপূর্ণ দিন (Schismatical important day)
সাম্প্রদায়িকদের শাস্ত্রিক স্মরণীয় দিনগুলোকে সাম্প্রদায়িক গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে। যেমন; শবে বরাত, শবে ক্বদর, শবে মি’রাজ, ঈদুলফিতর ও ঈদুল আযহা মুসলমানদের সাম্প্রদায়িক গুরুত্বপূর্ণ দিন।
৫. আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ দিন (International important day)
বিশ্বব্যাপী স্মরণীয় দিনগুলোকে আন্তজার্তিক গুরুত্বপূর্ণ দিন বলে। যেমন; মাতৃভাষা দিবস, ভালোবাসা দিবস ও মা দিবস ইত্যাদি।
আবার, বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে দিন দুই প্রকার। যথা; ১. সাধারণ দিন ও ২. বর্ধিত দিন।
১. সাধারণ দিন (Ordinary day)
৩৬৫ দিনে অতিবাহিত বছরগুলোর দিনগুলোকে সাধারণ দিন বলে।
২. অধিবর্ষ দিন (Leaf-year day)
৩৬৬ দিনে অতিবাহিত বছরগুলোর বাড়তি দিনটিকে বর্ধিত দিন বলে।
আবার দিন দুই প্রকার। যথা; ১. সাধারণ দিন ও ২. স্মরণীয় দিন।
১. সাধারণ দিন (Ordinary day)
সাধারণভাবে অতিবাহিত দিনগুলোকে সাধারণ দিন বলে।
২. স্মরণীয় দিন (Red-letter day)
বিশেষ কোনো স্মৃতি বিজড়িত দিনকে স্মরণীয় দিন বলে। যেমন; জন্মদিন, বিবাহদিন, প্রয়াণদিন ও চন্দ্রে অবতরণ দিবস ইত্যাদি।
আবার দিন দুই প্রকার। যথা; ১. স্রষ্টার দিন ও ২. সৃষ্টিকুলের দিন।
১. স্রষ্টার দিন (Creator day)
সৃষ্টিকুলের গণনার এক হাজার দিন সমান স্রষ্টার একদিন। অথবা সৃষ্টিকুলের গণনার এক হাজার বছর সমান স্রষ্টার একদিন। প্রকৃত কথা হলো এটি; কোনো সাধারণ বা কল্পিত দিন নয়। বরং এটি; হলো সাঁইদর্শন সাধন দ্বারা সাঁইদর্শন পাওয়া পর্যন্ত সময় বিশেষ। আর এর নিশ্চিত বাস্তবতা না থাকলে বিশ্ববিখ্যাত সাম্প্রদায়িক মহা গ্রন্থাদির মধ্যে অবিকল একই বর্ণনার সন্ধান পাওয়া যেত না। এ সময় এবং সাঁইদর্শনলাভের চরম বাস্তবতা আছে বলেই সাম্প্রদায়িক মহা গ্রন্থাদির মধ্যে এমন বর্ণনার সন্ধান পাওয়া যায়। এ হাজার দিন বা হাজার মাস বা হাজার বছর সমান হাজার শ্বাস। যা বর্তমান ঘড়ি অনুযায়ী ৪২ মিনিট প্রায়। সাধু, সন্ন্যাসী, মুনি, ঋষি, যোগী ও বিবাগীরা যুগে যুগে সাধনবলে সাঁইয়ের দর্শনলাভ করেই কেউ সাঁইজি, কেউ বৈষ্ণব, কেউ কাঁইজি, কেউ বিরিঞ্চি, আবার কেউবা ব্রাহ্মণ উপাধিলাভ করেছেন। তাছাড়া এসব উপাধি সাধকগণ শুধু শুধু গ্রহণ করেন নি। বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক মহা গ্রন্থাদি হতে নিচে কয়েকটি উদ্ধৃতি তুরে ধরা হলো।
১. “প্রিয় বন্ধুরা এ কথাটি ভুলে যেও না যে; প্রভুর নিকট একদিন তোমাদের ‘হাজার বছর’ এর সমান এবং ‘হাজার বছর’ একদিনের সমান” (ইঞ্জিল-২২শ খণ্ডঃ পিতর-২, ৩/৮-৯)।
২. “ يَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ وَلَنْ يُخْلِفَ اللَّهُ وَعْدَهُ وَإِنَّ يَوْمًا عِنْدَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِمَّا تَعُدُّونَ ” উচ্চারণ; “ইয়াসতা’জিলুনাকা বিল আ’যাব, ওয়া লাই ইউখলিফাল্লাহু ওয়া’দাহু ওয়া ইন্না ইয়াওমান ইন্দা রাব্বিকা কা আলফি সানাতিম মিম্মা তাউদ্দুন” অর্থ; তারা তোমার নিকটে শীঘ্র শাস্তি চাইতেছে, কাঁই কখনও তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না এবং তোমরা যা গণনা করে থাকো নিশ্চয় তোমার প্রতিপালকের নিকট তার এক দিবস ‘হাজার বছর’ তুল্য (কুরান, হজ্জ- ৪৭)।
৩. “শারীপুত্র স্থবিরের মাতুল নির্গ্রন্থ ভক্ত ছিলেন। তিনি ব্রহ্মত্বলাভের আশায় ‘হাজার কড়ি’ ব্যয়ে প্রতিমাসে নির্গ্রন্থ সন্ন্যাসীদের দান করতেন। শারীপুত্র স্থবির তা জ্ঞাত হয়ে একদিন তাকে বেণুবনে বুদ্ধের নিকট নিয়ে গেলেন” (ত্রিপিটক-ধম্মপদ-২৮৫)।
২. সৃষ্টিকুলের দিন (Creations day)
সাধারণত; সূর্য দৃশ্যমান হওয়ার পর হতে সূর্য অদৃশ্য হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে সৃষ্টিকুলের দিন বলা হয়।
আবার, বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে দিন দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান দিন ও ২. উপমিত দিন।
১. উপমান দিন (Analogical day)
সাধারণত; সূর্য দৃশ্যকালীন সময়কে উপমান দিন বলে।
২. উপমিত দিন (Compared day)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; রজস্বলাদের একস্রাবের প্রস্থান হতে অন্য স্রাব সূচনার মধ্যবর্তী সাতাশ দিনকে পবিত্রতা বা উপমিত দিন বলে।
ইংরেজি মাস গণনা সূত্র (English mounth calculating formula)
ইরেজি বছরের কোন মাস কতদিনে হয়? তা এ কবিতাটির মাধ্যমে অতি সহজেই মনে রাখা সম্ভব হয়। কবিতাটি হলো;
“ত্রিশ দিনেতে হয় মাস সেপ্টেম্বর
তেমনই, এপ্রিল, জুন, আর নভেম্বর।
আটাশ দিনে ফেব্রুয়ারি ধরে,
একদিন বাড়ে তার চতুর্থ বছরে।
অবশিষ্ট সাত মাস একত্রিশ দিনে,
জানিবে ইংরেজি মাস এইরূপে গণে।”
” Thirty days hath September,
April, June, and November.
All the rest have thirty-one,
Excepting February alone,
And that has twenty-eight days clear,
And twenty-nine in each leap year.”
এভাবে মাসের গণনা করতে হয়। অর্থাৎ; কোন মাস কতদিনে হয় তা মনে রাখার সূত্র এটি;। মনে রাখতে হবে ইংরেজি বারো মাসের মধ্যে কেবল এপ্রিল, জুন, সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাস ৩০ দিনে হয়। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে হয়। তবে; প্রতি চার বছর পর এর একদিন বৃদ্ধি পায়। তখন সে ফেব্রুয়ারি ২৯ দিনে হয়। অবশিষ্ট জানুয়ারি, মার্চ, মে, জুলাই, আগষ্ট, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাস ৩১ দিনে হয়। এটি; সহজে মনে রাখার কৌশল হলো নিচের চিত্র অনুযায়ী বামহস্ত মুষ্টিবদ্ধ করে বামপার্শ্ব হতে গণনা আরম্ভ করা। স্মরণ রাখতে হবে প্রত্যেক উঁচু-স্থানগুলো ৩১ দিন এবং নিচু-স্থানগুলো ৩০ দিন। আর কেবল বামপার্শ্বের প্রথম নিচুস্থাটি ২৮ দিন। তবে; প্রতি চার বছর পর এই আটাশকে ২৯ ধরে নিতে হয়।
অব্দ পরিবর্তন সূত্র (Years changing formula)
এবার জানা প্রয়োজন যে; কিভাবে অব্দ পরিবর্তন করতে হয়? যেমন; খ্রিস্টীয়কে হিজরিতে, হিজরিকে খ্রিস্টীয়তে, খ্রিস্টীয়কে ফসলিতে (বঙ্গদিন), ফসলিকে খ্রিস্টীয়তে, হিজরিকে ফসলিতে ও ফসলিকে হিজরিতে রূপান্তর করণ পদ্ধতি। এজন্য; অবশ্য একটি সূত্র ব্যবহার করতে হবে। সূত্রটি হলো;
হিজরি হতে ফসলিতে রূপান্তর সূত্র
১ হিজরিকে ফসলিতে রূপান্তর সূত্র
ফসলি = হিজরি – (হিজরি – ৯২২)
৩৬
২ ফসলিকে হিজরিতে রূপান্তর সূত্র
হিজরি = ফসলি + (ফসলি – ৯২২)
৩২
৩ হিজরিকে খ্রিস্টীয়তে রূপান্তর সূত্র
খ্রিস্টীয় = (হিজরি × ৩২) + ৬২২
৩৩
৪ খ্রিস্টীয়কে হিজরিতে রূপান্তর সূত্র
হিজরি = (খ্রিস্টীয় – ৬২২) × ৩৩
৩২
ফসলি হতে খ্রিস্টীয়তে রূপান্তর সূত্রটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
খ্রিস্টীয় হতে ফসলিতে রূপান্তর সূত্রটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
ছয়দিনে আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করার রহস্য (The mystery creating of the sky-land in six day)
বিশ্বের বিভিন্ন শ্বরবিজ্ঞান; বিশেষ করে পবিত্র কুরান, লালন ও বলনতত্ত্বের মধ্যে ছয়দিনে আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করার বর্ণনা দেখতে পাওয়া যায়। ছয়দিন কী? শ্বরবিজ্ঞানে বর্ণিত দিন কী দিন নাকি প্রহর? আবার কুরানেই লেখা আছে যে; “কাঁই কোনকিছু সৃষ্টি করার ইচ্ছা করলে কেবল বলে হও, সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে যায়।” যেমন; “إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ” উচ্চারণ; “ইন্নামা আমুরু ইজা আরাদা শাইয়া, আইয়া কুলা লাহু কুন ফাইয়াকুন।” অর্থ; তার আদেশ! যখন তিনি কোনকিছু করতে ইচ্ছে করেন, তখন কেবল বলেন হও, সঙ্গে সঙ্গে তা হয়ে যায়।” ” His command, when he intends anything, is only to say to it: Be, so it is.” (কুরান, সুরা- ইয়াসিন- ৮১)। তবে; এবার তো যে কেউ প্রশ্ন করতেই পারে যে; এটি; আবার কোন স্রষ্টা? যে স্রষ্টা কোনকিছু সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে হও বললেই হয়ে যায়, তার আবার ছয়দিন ধরে কেবল আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করার কারণ কী? কেবল আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করতেই যদি ছয়দিন সময় লাগে, তবে বিশ্বের অন্যান্য সৃষ্টিগুলো সুসম্পন্ন করতে কতদিন সময় লাগতে পারে? এ তো দেখি শেষাসীম সময়ের ব্যাপার!! বিষয়টির সঠিক সমাধান করার উদ্দেশ্যে প্রথমে নিচে কয়েকটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা হলো।
কাল্পনিক তত্ত্ব (Mythology)
১. “ছয়টি প্রহরেতে মানবসৃষ্টি সর্ব মতে, আকাশ ভূমি সৃজনের ভেদ জানতে, লালন করে বাসনা।” (পবিত্র লালন- ২০২/৩)।
২. “ছয়দিনে গড়ে আকাশ ভূমি, মনের মত করে তিনি, কোন ঘড়িতে দিন গণে, মন চল ঘড়ি সন্ধানে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১০)।
৩. “ছয়প্রহর সাতদিনের মানি, গড়েছে এ দেহবিজ্ঞানী, চাররঙ ধরে দিনরজনী, করলাম কারের বিবরণ।” (পবিত্র লালন- ৯১/৩)।
৪. “সকাল বিকাল দুই রং ধরে সাদা কালো একমাসে, বলন কয় থাইক সেই তাজা কালো ফলের আশে, চার বাহক ছয়প্রহরে– পাহারা দেয় ৬টি চোরে, ফাঁকি দিয়া তিন চক্ষুকে- বুলবুলিতে খাইয়া যায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৬)।
৫. “হও বলে এক শব্দ করে, সেই শব্দে জ্যোতি ঝরে, মানবসৃষ্টি ছয়প্রহরে, এমন তার বর্ণনা।” (পবিত্র লালন- ২০২/২)।
৬. “إِنَّ رَبَّكُمْ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلَّا مِنْ بَعْدِ إِذْنِهِ ذَلِكُمْ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ” উচ্চারণ; “ইন্না রাব্বাকুমুল্লাহু আল্লাজি খলাকাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ফি সিত্তাতি আইয়ামিন। সুম্মাস তাওয়া আলাল আরশি। ইউদাব্বিরুল আমরা মা মিন শাফিইয়ি ইল্লা মিম্বাদি ইজনিহি। জালিকুমুল্লাহু রাব্বুকুম। ফাবুদুহু। আফালা তাজাক্কারুন।” অর্থ; “সত্যই তোমাদের প্রতিপালক সেই কাঁই, যিনি ছয়দিনে আকাশ ও ভূমি সৃজন করেছেন। অতঃপর; সিংহাসনে আরোহণ করেছেন। তার আদেশ ব্যতীত কোনো অনুরোধকারীই নেই। ইনিই তোমাদের প্রতিপালক কাঁই। অতএব; তোমরা তাঁকেই আর্চনা কর। তোমরা কী উপদেশ গ্রহণ করছ না।” “Surely, your God is Lord who created the sky and the earth in six days. Then he ascended the throne. No intercessor except after his leave. That is Lord, your God so worship him. Then will you not remember?” (Quran, yoûnus- 3).
৭. “وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَلَئِنْ قُلْتَ إِنَّكُمْ مَبْعُوثُونَ مِنْ بَعْدِ الْمَوْتِ لَيَقُولَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا إِنْ هَذَا إِلَّا سِحْرٌ مُبِينٌ” “তিনিই যিনি আকাশ ও ভূমি ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। তখন তার সিংহাসন ছিল জলের ওপর। কার্যত তোমাদের মধ্যে কে অত্যুত্তম এটা পরীক্ষা করার জন্য। যদি তুমি বল যে; “নিশ্চয় তোমরা মৃত্যুর পর পুনরুত্থিত হবে। তবে; অবশ্যই বলবে যারা ধর্মদ্রোহী, এটা স্পষ্ট যাদু ভিন্ন কিছুই নহে।” “He it is who has created the sky and the earth in six days and then his throne was on the water. That he might try you, which of you is the best in deeds. But if you were to say to them: “You shall indeed be raised up after death,” those who disbelieve would be sure to say, “This is nothing but obvious magic.” (Quran, hûd- 7).
৮. “الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمَانُ فَاسْأَلْ بِهِ خَبِيرًا” “যিনি আকাশ ও ভূমি এবং এ উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তা ছয়দিনের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন, তৎপর দয়াল সিংহাসনে আরোহন করেছেন। অতঃপর; তুমি তার সম্বন্ধে কোনো জ্ঞানীর নিকট প্রশ্ন কর।” “Who created the sky and the earth and all that is between them in six days. Then he ascended the throne. Then you taxes questions at any wise about his” (Quran, furqân- 59).
৯. “اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ مَا لَكُمْ مِنْ دُونِهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا شَفِيعٍ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ” “সেই কাঁই যিনি ছয়দিনের মধ্যে আকাশ ও ভূমি এবং এই উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সৃজন করেছেন। অতঃপর; তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোনো বন্ধু নেই, কোনো অনুরোধকারীও নেই। অতঃপর; তোমরা কী উপদেশ গ্রহণ করতেছ না?” (কুরআন- সিজদা-৪)। “Lord it is He Who has created the sky and the earth and all that is between them in six days. Then he ascended the throne. You have none, besides him, as a protector or helper or an intercessor. Will you not then remember?” (Quran, sajdah-4).
১০. “وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِنْ لُغُوبٍ)” *. “সত্য সত্যই আমরা ছয়দিনে আকাশ ও ভূমি এবং উভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সৃজন করেছি এবং ক্লান্তি আমাদেরকে আশ্রয় করে নি।” “And indeed we created the sky and the earth and all between them in six days and nothing of fatigue touched us.” (Quran, Qâf- 38).
১১. “هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنْ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ(৪)” “তিনিই যিনি ছয়দিনে আকাশ ও ভূমি সৃজন করেছেন। অতঃপর; তিনি সিংহাসনে আরোহন করেছেন। তিনি জ্ঞাত হন যা ভূমিতে উপস্থিত হয় ও যা তথা হতে বের হয় এবং যা আকাশ হতে অবতারিত হয় ও যা উহাতে সমুত্থিত হয়। এবং যে স্থানে তোমরা অবস্থান কর তিনি তোমাদের সাথে থাকেন এবং তোমরা যা-ই কর কাঁই তাদের দ্রষ্টা।” “He it is who created the sky and the earth in six days and then then he ascended the throne. He knows what goes into the earth and what comes forth from it, what descends from the sky and what ascends thereto. And He is with you wheresoever you may be. And Lord is the all-seer of what you do.” (Quran, hadîd-4).
আত্মতত্ত্ব (Theology)
সাম্প্রদায়িক মুসলমান মনীষী, ব্যৈখ্যিক ও টৈকিকরা উপরোক্ত আধ্যাত্মিক বাণীর ব্যাখ্যা প্রদান করতে গিয়ে কেউ কেউ বলেছেন, কাঁই শনিবার হতে কাজ আরম্ভ করেছিলেন! এবং বৃহস্পতিবারে কাজ শেষ করেছিলেন!! অতঃপর; শুক্রবারে তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন!!! এবার প্রশ্ন হলো; তাই যদি হয়; তবে ‘বাংলা সাতবার’ আবিষ্কারের বয়স কত? বড় অধিক মাত্র ৬,০০০ বছর। আর সাতবার তো মানুষের আবিষ্কার। মানুষের আবিষ্কৃত সাতাবার দ্বারা কাঁই কী আকাশ ও ভূমি সৃষ্টি করেছেন?
প্রযুক্তি ও প্রচার মাধ্যমের উত্তরোত্তর উন্নয়নের ফলে সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, ব্যৈখ্যিক ও টৈকিকদের মনগড়া, গুদামপচা, বস্তাপচা, হাস্যকর, অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক অপসংস্কৃতি ও অপসংস্কারগুলো গবেষণা ও যাচাই-বাছাই করার সময় এসেছে এখন। সমাজের সব বুদ্ধিমানরা এগিয়ে আসুন। আমরা একযোগে মহাপবিত্র সাম্প্রদায়িক গ্রন্থাদির প্রকৃতশিক্ষা উদ্ঘাটন করে সমাজে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিই। বিশ্ববাসীকে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবৃত্তি, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবৃত্তি, ধর্মবাজি ও ধর্মব্যবসা হতে নিবৃত করতে চেষ্টা করি। সমাধান রূপে বলা যায় শ্বরবিজ্ঞানে কখনও কখনও প্রহরকেউ দিন বলা হয়। আর দেহঘড়ি নয় প্রহরে বিবর্তনমান। উল্লেখ্য যে; শ্বরবিজ্ঞানে; এক প্রহর সমান সাড়ে তিন দিন। এ সূত্র মতে; নয় প্রহর সমান সাড়ে একত্রিশ দিন। গাণিতিক সমাধানের ক্ষেত্রে অর্ধদিন গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য; বলা যায় যে; দেহঘড়ির নয় প্রহর সমান ৩১ দিন। বাংভারতে দেহঘড়ির একপ্রহর রাত। আর এটি; হলো স্রাবণ্য প্রহর। অর্থাৎ; দেহতত্ত্ব বা শ্বরবিজ্ঞানে; রজস্বলাদের রজকালকে রাত বলা হয়। অবশিষ্ট আট প্রহর তাদের পবিত্রকাল। এ আট প্রহর সমান ২৮ দিন। রজস্বলাদের পবিত্রকাল রূপে পরিগণিত এ আঠাশ দিনকে শ্বরবিজ্ঞানে দেহঘড়ির দিন বলা হয়।
পবিত্রকাল রূপে পরিচিত এ আট প্রহরকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা; ১. সৃষ্টিকাল ও ২. অবসরকাল। সৃষ্টিকাল হলো ছয় প্রহর এবং অবসরকাল হলো দুই প্রহর। রজস্বলাদের রজ বিদায়ের পরবর্তী প্রথম দিনকে পবিত্রকালের প্রথমদিন বলা হয়। পবিত্রকালের প্রথমদিন হতে ছয় প্রহর বা ২১ দিন পর্যন্ত জননপথে শুক্র নিক্ষেপ করলে সন্তান সৃষ্টি হয়। তাই; এই ছয় প্রহর বা ২১ দিনকে সৃষ্টিকাল বলা হয়। অবশিষ্ট দুই প্রহর বা ৭ দিন জননপথে শুক্র নিক্ষেপ করলেও সন্তান সৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। তাই; ঐ দুই প্রহর বা পবিত্রতার ২২ হতে ২৮ পর্যন্ত এ ৭ দিনকে অবসরকাল বলা হয়।
আলোচ্য ছয়প্রহরকেই শ্বরবিজ্ঞানে ছয়দিন বলা হয়। এ ছয়দিনে গর্ভের মধ্যে প্রভু মানবসন্তান সৃষ্টি ও প্রতিপালন করেন বলেই শ্বরবিজ্ঞানে ছয়দিনে আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করার কথা বলা হয়। আবার ছয়দিনে আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করে প্রভুর অবসর গ্রহণ করার কথা বলা হয়।
এছাড়াও; বর্তমানকালে চিচিৎসা বিজ্ঞানের অনেক উন্নতিসাধন হয়েছে। এখন সমস্ত চিকিৎসক একমত যে রজস্বলাদের পবিত্রতার প্রথম দিন হতে ২১ দিন পর্যন্ত জননপথে শুক্র নিক্ষেপ করলে বা অন্য কোনো উপায়ে জরায়ুতে শুক্র স্থাপন করলে সন্তান জন্মগ্রহণ করার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু পবিত্রতার ২২ হতে ২৮ দিন পর্যন্ত জননপথে শুক্র নিক্ষেপ করলে বা অন্য কোনভাবে জরায়ুর মধ্যে শুক্র স্থাপন করলেও সন্তান সৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। নিচে কয়েকটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা হলো।
১. “১একাকারে হুহুংকার মেরে আপনি
সাঁই নিরঞ্জনা,
অন্ধকার ধন্ধকার কুয়াকার নৈরাকার
সৃষ্টি করল কিনা।
২হও বলে এক শব্দ করে,
সেই শব্দে জ্যোতি ঝরে,
মানব সৃষ্টি ছয় প্রহরে,
এমন তার বর্ণনা।
৩ছয় প্রহরে মানব সৃষ্টি সর্ব মতে,
জানা যায় আত্মতত্ত্ব হতে
আকাশ ভূমি সৃজনের ভেদ জানতে
লালন করে বাসনা।” (পবিত্র লালন- ২০২)।
২. “ছয়দিনে গড়ে আকাশ ভূমি
মনের মত করে তিনি
কোন ঘড়িতে দিন গণে
মন চল ঘড়ি সন্ধানে।
সাতাশেতে দিকের কাঁটা
ছয়প্রহরে দিনের ভাটা
সাড়ে তিনে ঘণ্টা কাঁটা
বেল বারটা ত্রিবেণে।
পঞ্চাশহাজার বছর ঘুরে
ত্রিশ হাজার পারাপারে
চুরাশিফের পড়িলে
কাটে না এক জীবনে।
শুক্ল-কৃষ্ণপক্ষের বিচার
না করিলে যায় না বিমার
গণনা সারা নব্বই হাজার
মিলে না গুরু বিনে।
সাতনরক আটস্বর্গ জুড়ি
চারপ্রধান ষোল প্রহরী
চৌদ্দতলা আঠারপুরী
ঘুরাই কাঁটা ছয়জনে।
আকাশ-ভূমি জুড়ে ঘড়িটা
দুইদিকেতে নয়টি ফুটা
মাঝখানেতে একটি খুঁটা
বলন কাঁইজি কয় গণে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১০)।
অন্যদিকে; বড় আশ্চর্য হবার বিষয় হলো সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা শ্বরবিজ্ঞানে বর্ণিত ‘দিন’ পরিভাষাটির দ্বারা কেবল সৌরদিনকেই বুঝেন ও বুঝিয়ে থাকেন। তাই; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকরা চিরদিনের জন্য আধ্যাত্মিক বা আত্মতত্ত্বের জ্ঞানে চিরান্ধ। এমন প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ মার্গিক আলোচনার মূলশিক্ষাকে সমাজের কাজে লাগানো বা সমাজে ছড়িয়ে দিয়ে জনমানবের উপকার করার পরিবর্তে সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, ব্যৈখ্যিক ও টৈকিকরা সমাজে ছড়িয়ে দিয়েছে তাদের অন্তঃসারশূন্য মনগড়া চিন্ত-ক্যান্সার। আর এসব মনগড়া চিন্তা-ক্যান্সার হতেই সমাজে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক সন্ত্রাসবৃত্তি, ধর্মব্যবসা ও ধর্মবাজি।
এখন ভাবতেও অবাক লাগে যে; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, ব্যৈখ্যিক ও টৈকিকরা নিজেদের জ্ঞান-দৈন্যতা ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানহীনতার কারণে সাম্প্রদায়িক পুস্তক-পুস্তিকাগুলোর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জনহিতকর বিষয়াদিকে কিভাবে সমাজ ও দেশ ধ্বংসের উপকরণে পরিণত করে ছেড়েছে। আমরা আশা করি পাঠককুল ভেবে দেখবে বিষয়টি।
সমাজের সুশীল ও বিবেকবানরা যদি উপরোক্ত বিষয় একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেন। তবে; জানতে পারবেন এর মধ্যে কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিহিত রয়েছে। নবদম্পতিরা যদি বিষয়টি ভেবে দেখেন তবে তাদের আর জন্ম-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রয়োজন হবে না। কারণ; ঐ ২১ দিন ইন্দ্রিয় সংযমন করবে এবং পরবর্তী ৭ দিন বিনোদন করবে। এরপরও যদি সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক ঘাড়তেড়া মনীষী, ব্যৈখ্যিক ও টৈকিকদের সুমতির উদয় না হয়; তবে তা হলো তাদের নিয়তি।
কাঁইয়ের সিংহাসন জলের ওপর থাকার রহস্য (The mystery the throne of Lord stay on the water)
কাল্পনিক তত্ত্ব (Mythology)
আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করার সময় কাঁইয়ের সিংহাসনটি ছিল জলের ওপর। এটি; স্বয়ং কুরানের উক্তি। “وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ” উচ্চারণ; “ওয়া কানা আরশুহু আলাল মায়ি।” অর্থ; তখন তার সিংহাসন ছিল জলের “Then his throne was on the water.” এবার প্রশ্ন হলো, যখন আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করার কাজ চলছে কিংবা এখনও সৃষ্টি করা হয় নি তখন জলবা এলো কোথায় হতে, সিংহাসনটিবা এলো কোথায় হতে? জল রাখা হলোবা কিসের ওপর এবং সিংহাসনটিবা পাতা হলো কিসের ওপর? তবে আকাশ-ভূমি সৃষ্টির পূর্বেই কী জল ছিল? তবে তা কিসের ওপর ছিল? আর কাঁইয়ের আকৃতিইবা কিরূপ যে; তিনি জলের ওপর সিংহাসন পেতে বসতে সক্ষম?
আত্মতত্ত্ব ভেদকে পদদলিত করে, দেহতত্ত্বকে অস্বীকার করে, আত্মতদর্শনকে জলাঞ্জলী দিয়ে; বিশ্বের সাম্প্রদায়িক মুসলমান সব মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক ও টৈকিক একত্র হয়ে শেষাসীম সময় প্রচেষ্টা করলেও আলোচ্য সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারবে না। কারণ; এটি; আত্মতত্ত্বের বিষয়। সেজন্য; এর সমাধানও করতে হবে কেবল আত্মদর্শন দ্বারা। যেমন; গণিত সমাজ দ্বারা সমাধান করা যায় না; তাদৃশ আত্মদর্শনও প্রকৃতিদর্শন বা মনগড়া দর্শন দ্বারা সমাধান করা যায় না।
আত্মতত্ত্ব (Theology)
শ্বরবিজ্ঞানে; মানবদেহের নাভির ওপরের অংশকে আকাশ এবং নিচের অংশকে ভূমি বলা হয়। এছাড়াও; বৈকুণ্ঠকে আকাশ ও বৈতরণীকে ভূমি ধরা হয়। এছাড়াও; জরায়ুকে আসন, সিংহাসন বা সাগর বলা হয়। রজস্বলাদের পবিত্রতা পর্বের প্রথম ছয়প্রহর বা ২১ দিনে সাঁই জরায়ুরূপ সিংহাসনে পবিত্র মানবজলরূপ জলের ওপর আসন গ্রহণ করে থাকেন। অতঃপর; কেউ সেখানে শুক্র নিক্ষেপ করলে সাঁই পবিত্র মানবজলরূপ জলের ওপর জরায়ুরূপ সিংহাসন পেতে মানবদেহের নাভির ওপররূপ আকাশ এবং নাভির নিচরূপ ভূমি নির্মাণ করে থাকেন। অর্থাৎ; আলোচ্য ছয়প্রহরে সাঁই জরায়ুর মধ্যে মানবদেহ সৃষ্টি ও লালনপালন করে থাকেন। এ চিরন্তন বিষয়টিকে সাধারণ মানুষ থেকে আড়াল করার জন্য রূপক আকারে বলা হয়েছে, কাঁই/ সাঁই ছয়দিনে আকাশ-ভূমি সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর; তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেছেন। এবং তখন তার সিংহাসনটি ছিল জলের ওপর।
এখানে; আগধড় বা নাভির ওপরের অংশকে বলা হয়েছে ‘আকাশ’ পাছধড় বা নাভির নিচের অংশকে বলা হয়েছে ‘ভূমি’ জরায়ুর মধ্যে সন্তান লালনপালনে নিয়োজিত মানবজলকে বলা হয়েঝে ‘জল’ জরায়ুকে বলা হয়েছে ‘সিংহাসন’ এবং রজস্বলাদের পবিত্রকালের প্রথম ছয়প্রহরকে বলা হয়েছে ‘ছয়দিন’। এবার চির বাস্তব ও চিরন্তন আকাশ, ভূমি, জল, সিংহাসন ও ছয়দিন পাওয়া গেল। এগুলো; যেমন চির বাস্তব; তেমনই চিরন্তন। অন্যদিকে; সাম্প্রদায়িক মুসলমান মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা যেসব মনগড়া ব্যাখ্যা ও যুক্তি প্রদান করেছেন, তা একেবারে অযৌক্তিক, অবৈজ্ঞানিক, অগ্রহণযোগ্য ও অকল্যাণকর। এবার বলতে চাই এত কিছু বলা ও দেখানোর পরও সম্বিত উদয় হবে কী সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকদের?
সাঁই/ কাঁই যে প্রতি মাসে আকাশ-ভূমি অর্থাৎ; মানবদেহ নির্মাণ করার জন্য সিংহাসন অর্থাৎ; জরায়ুতে বসেন এ ব্যাপারে মরমী কবি রাজ্জাকের একটি বাণী আলোকপাত করা যায়।
“ঘাটে একবার আসি একবার যায়
যাইয়া দেখি শ্যাম ঘাটে নাই।
(কোকিলরে বনের কোকিলরে)
আজ নিশিতে দেখলাম স্বপন
প্রাণ বন্ধুর রূপের কিরণ
কালো বরণ গোউর কানাই
আমি বন্ধুর কোলে মন দিয়াছি
প্রেম যমুনায় খেলছি লাই।
(কোকিলরে বনের কোকিলরে)
আমার জ্বলে দুঃখ এই অন্তরে
লিখে দিছে শ্যাম গোপালে
নারীকুলে সুখের আশা নাই
নইলে কেন সীতা সতী
বার বার বনবাসে যায়।
(কোকিলরে বনের কোকিলরে)
চোখ দুটি তোর জলে ভরা
মলিন কেন এই চেহারা
কোন নিঠুরে মারল তিরে ঘায়
কাল কাটালি ডালে ডালে
ঘরবাড়ি বুঝি বাঁধো নাই।
(কোকিলরে বনের কোকিলরে)
গভীর প্রেমে আইলাম কিনা
মন জানে আর কেউ জানে না
কৃষ্ণ বিনা আর বাঁচা আশা নাই
তোরা রাজ্জাক বলে ডাকবি না রে
যেদিন দেখবি রাজ্জাক নাই।”
দেহতাত্ত্বিক দার্শনিক ও মরমী কবি রাজ্জাকের “ঘাটে একবার আসি একবার যায়, যাইয়া দেখি শ্যাম ঘাটে নাই।” এই বাণীটিই পুনঃপুন স্মরণ করে দেয় যে; শ্যাম-কালা/ সাঁই-প্রভু পুনঃপুন ঘাটে আসেন। ভক্তকুল, সাধক ও প্রেমিকদের দর্শনদান করে থাকেন।
আলোচনার যবনিকায় উপনীত হয়ে বলা যায় যে; বিশ্বের সব পুরাণ অর্থাৎ; সাম্প্রদায়িক পুস্তক-পুস্তিকা কেবল আত্মদর্শন বা দেহতাত্ত্বিক। সেজন্য; এসব পুস্তক-পুস্তিকার ব্যাখ্যা, টীকা, অনুবাদ ও অভিধানও করতে হবে কেবল আত্মতত্ত্বমূলক বা আত্মদর্শনভিত্তিক। তবে; সমাজের সর্বস্তরের মানুষ উক্ত গ্রন্থাদি দ্বারা উপকৃত হবে। অন্যদিকে; পৌরাণিক সাহিত্যাদির ব্যাখ্যা, টীকা, অনুবাদ ও অভিধানগুলো প্রকৃতি কেন্দ্রিক বা সৌর কেন্দ্রিক করা হলে, সমাজের মানুষ তো উপকৃত হবেই না বরং উল্টো সমাজে আরও সৃষ্টি হবে সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক আতঙ্কবাদ, উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসীবৃত্তি। সৃষ্টি হবে ধর্ম-ব্যাবসা, পুণ্য-ব্যবসা ও স্বর্গ-বাণিজ্য।
সৌর দিন ও রাত (Solar day and night)
১. পৃথিবীর নিজ অক্ষের ওপর ঘূর্ণনকে কী বলা হয়?
উত্তর; আহ্নিক গতি।
২. পৃথিবীর আহ্নিক গতির ফলে কী সৃষ্টি হয়?
উত্তর; দিবা-রাত্রির সংঘটন।
৩. পৃথিবীর দিবা-রাত্রি সংঘটিত কী কারণে?
উত্তর; আহ্নিক গতির কারণে।
৪. পৃথিবী সূর্যের চারদিকে কত মাইল গতিতে আবর্তন করছে?
উত্তর; প্রতি সেকেন্ডে ১৮.৫ মাইল ও প্রতি ঘণ্টায় ৬৭০০০ মাইল বেগে।
৬. পৃথিবীতে সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান কয় বার?
উত্তর; ২ বার। ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর।
৭. পৃথিবীর সূর্যের নিকটতম স্থানে অবস্থান করে কোন দিন?
উত্তর; ১ জানুয়ারি।
উত্তর গোলার্ধ
১. উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন কোনটি?
উত্তর; ২২ ডিসেম্বর।
২. উত্তর গোলার্ধে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্য সবচেয়ে অধিক দূরত্ব হয় কবে?
উত্তর; ২২ ডিসেম্বর।
৩. উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন কোনটি?
উত্তর; ২১ জুন।
৪. বাংলাদেশে বছরের কোন মাসে সবচেয়ে বড় দিন হয়?
উত্তর; ২১ জুন।
৫. বাংলাদেশের শীতলতম মাস কোনটি?
উত্তর; জানুয়ারি।
দক্ষিণ গোলার্ধ
১. পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন কোনটি?
উত্তর; ২২ ডিসেম্বর।
২. পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন কোনটি?
উত্তর; ২১ জুন।
৩. অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে উষ্ণতম মাস কোনটি?
উত্তর; জানুয়ারি।
পৌরাণিক দিন–রাত নির্মাণ সূত্র (Mythological day-night construction formula)
ভূমিকা (Prolegomenon)
আভিধানিকভাবে সূর্য দৃশ্যমান হওয়ার পর হতে অদৃশ্য হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে দিন বলা হয়। অন্যদিকে; সূর্য অদৃশ্য হওয়ার পর হতে দৃশ্যমান হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে রাত বলা হয়। কিন্তু শ্বরবিজ্ঞান ও পুরাণে বড় ও শক্তিশালী বিষয়বস্তুকে দিন এবং ছোট ও দুর্বল বিষয়বস্তুকে রাত বলা হয়।
পৌরাণিক দিন-রাত সূত্র (The mythological day-night formula)
‘প্রবল কোনো সত্তাকে দিন ধরতে হলে অবশ্যই সমগোত্রীয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোনো সত্তাকে রাত ধরতে হবে।’
পৌরাণিক দিন–রাত সূত্রের সংজ্ঞা (Definition of mythological day-night formula)
পৌরাণিক কাহিনীর দিন-রাত নির্ধারণ নিয়মকে ‘পৌরাণিক দিন–রাত সূত্র’ বলে।
সারা বিশ্বের সব সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক শ্বরবিজ্ঞান, পুরাণ, মরমী বাণী ও গুরুবাদী পুস্তক-পুস্তিকায় বড় ও শক্তিশালী বিষয়বস্তুকে দিন ধরা হয় ও ছোট ও দুর্বল বিষয়বস্তুকে রাত ধরা হয়। আর এগুলোকে ‘পৌরাণিক দিন–রাত’ বলা হয়। এর সূত্রের অধীনে প্রায় ১০টি প্রেক্ষিত রয়েছে।
পৌরাণিক দিন–রাত (Mythological day-night)
(দেহ পঞ্জিকার দিন-রাত) (The day-night of the body almanac)
দিন (Day) রাত (Night)
১. গুরুকে দিন ধরতে হলে; শিষ্যকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
২. জ্ঞানকে দিন ধরতে হলে; মনকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৩. জ্ঞানীকে দিন ধরতে হলে; মূর্খকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৪. সবলকে দিন ধরতে হলে; দুর্বলকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৫. পবিত্রকালকে দিন ধরতে হলে; রজকালকে (ঋতুমতীর ক্ষেত্রে) অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৬. পবিত্রতাকে দিন ধরতে হলে; অপবিত্রতাকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৭. পিতাকে দিন ধরতে হলে; মাতাকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৮. যৌবনকালকে দিন ধরতে হলে; বার্ধক্যকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
৯. সুস্থতাকে দিন ধরতে হলে; অসুস্থতাকে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
১০. বিজয়কে দিন ধরতে হলে; পরাজয়কে অবশ্যই রাত ধরতে হবে।
দিনের পরিচয় (Identity of day)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পবিত্রতা’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ। সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুস্তক-পুস্তিকায় এর ন্যূনাধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে; এ পরিভাষাটি একেক গ্রন্থে একেক ভাষায় ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠক-পাঠিকা ও শ্রোতাদের তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না।
সাধারণত; সূর্য দৃশ্যকালীন সময়কেই দিন বলা হয় কিন্তু শ্বরবিজ্ঞানে; রজস্বলাদের পবিত্রতার ২৭ দিনকেই একত্রে দিন বলা হয়। উল্লেখ্য যে; সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুরাণে ব্যবহৃত দিন পরিভাষাটির দ্বারা কেবল পবিত্রতাকেই বুঝানো হয়। কারণ; মরমী, সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুরাণ কেবলই আত্মতত্ত্বনির্ভর ও আত্মদর্শনপ্রসূত। আত্মতত্ত্বনির্ভর বা আত্মদর্শন কেন্দ্রিক মরমী, সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুরাণকে খুষ্কমুষ্ক সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী ও বক্তারা সৌরজগৎ ও প্রকৃতি কেন্দ্রিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে গিয়েই সব ব্যাখাকে একেবারেই লেজে গোবরে করে ছেড়েছেন। এখনও সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী ও বক্তাদের জানা উচিত যে মরমী, সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুরাণে ব্যবহৃত দিন পরিভাষাটির দ্বারা কখনই সৌরদিন, চান্দ্রদিন কিংবা ১২ ঘণ্টার দিন, ২৪ ঘণ্টার দিন বা পঞ্জিকার দিন বুঝানো হয় না। বরং দিন পরিভাষাটির দ্বারা রজস্বলাদের পবিত্রতার ২৭ দিনকে বুঝায়। অথবা রজস্বলাদের পবিত্রতার ৮ প্রহরের প্রথম ছয় প্রহরকেই বুঝানো হয়।
অন্যদিকে; বড় আশ্চর্য হবার বিষয় হলো সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা শ্বরবিজ্ঞানে বর্ণিত দিন (দিবা ও দিবস দিন পরিভাষা বলে গণ্য) পরিভাষাটির দ্বারা কেবল সৌরদিনকেই বুঝেন ও বুঝিয়ে থাকেন। তাই; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকরা চিরদিনের জন্য আধ্যাত্মিক বা আত্মতত্ত্বের জ্ঞানে চিরান্ধ। আরও অধিক পরিতাপের বিষয় হলো যদিও দিনের এতগুলো অভিধা, এতগুলো সংজ্ঞা ও এতগুলো প্রকারভেদ রয়েছে, তবুও; কেবল ১২ বা ২৪ ঘণ্টানির্ভন সৌরদিন ভিন্ন অন্য কিছু চোখে পড়ে না সারা বিশ্বের সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকদের। তাই; হয়তো লালন সাঁইজি বড় আক্ষেপ করেই বলেছিলেন;
“এসব দেখি কানার হাটবাজার,
বেদ-বিধির ’পর শাস্ত্র কানা,
আরেক কানা মন আমার।” (পবিত্র লালন- ২৩১/১)।
আবার বলন কাঁইজিও বলেছেন;
“পাগল দেখি পাগলের মাস্টার
ছেঁড়া তার সব জোড়া দিয়ে,
বাজায় বসে ট্যাঞ্জিস্টার।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
পরিশেষে বলতে চাই যে; সারা বিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুরাণে ব্যবহৃত ‘দিন, দিবস ও দিবা’ পরিভাষাগুলো দ্বারা কেবল সৌরদিনই বুঝায় না বরং এসব পরিভাষা দ্বারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোথাও রজস্বলাদের পবিত্রতার আটপ্রহর, কোথায় ছয়প্রহর, আবার কোথাও হাজার শ্বাস বুঝানো হয়। পরিভাষাগুলোর ব্যবহারের ক্ষেত্র অনুযায়ী এদের সঠিক অভিধা উদ্ঘাটন করা পাঠক-পাঠিকা মাত্রই একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় পৌরাণিক সাহিত্যাদি কেবল পাঠ করা হবে বটে কিন্তু জ্ঞানার্জন হবে না সামান্যতম। তাই; পাঠককুলের প্রতি মিনতি হচ্ছে পৌরাণিক সাহিত্যাদি পাঠ করার সময় অবশ্যই ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’র দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করতে হবে।
বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, তৌরাত, যাবুর, ইঞ্জিল, কুরান, হাদিস, লালন, বলন, জালাল ও রাধারমণ ইত্যাদি মহাকাব্যের মধ্যে ‘দিন, দিবস ও দিবা’ ইত্যাদি পরিভাষা দ্বারা রজস্বলাদের পবিত্রকালের আটপ্রহর, দিবসের ছয়প্রহর ও সাঁই সাধনের হাজার শ্বাস বুঝানো হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকদের দৈন্যতা, খুষ্কতা ও মূঢ়তার কারণে শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত ‘দিন, দিবস ও দিবা’ ইত্যাদি পরিভাষা দ্বারা সাধারণ পাঠক পাঠিকারা সৌর পঞ্জিকার ২৪ ঘণ্টার দিন ব্যতীত অন্য কিছু বুঝে উঠতে সক্ষম হয় না। এখানে; আলোচ্য দিন হলো রজস্বলাদের পবিত্রতা বা পবিত্রকাল।
তথ্যসূত্র (References)
(Theology's number formula of omniscient theologian lordship Bolon)
১ মূলক সংখ্যা সূত্র (Radical number formula) "আত্মদর্শনের বিষয়বস্তুর পরিমাণ দ্বারা নতুন মূলক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়।"
রূপক সংখ্যা সূত্র (Metaphors number formula)
২ যোজক সূত্র (Adder formula) "শ্বরবিজ্ঞানে ভিন্ন ভিন্ন মূলক সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন যোজক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, গণিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায় না।"
৩ গুণক সূত্র (Multiplier formula) "শ্বরবিজ্ঞানে এক বা একাধিক মূলক-সংখ্যার গুণফল দ্বারা নতুন গুণক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৪ স্থাপক সূত্র (Installer formula) "শ্বরবিজ্ঞানে; এক বা একাধিক মূলক সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে স্থাপন করে নতুন স্থাপক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৫ শূন্যক সূত্র (Zero formula) "শ্বরবিজ্ঞানে মূলক সংখ্যার ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন শূন্যক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
< উৎস [] উচ্চারণ ও ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত () ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত > থেকে √ ধাতু => দ্রষ্টব্য পদান্তর :-) লিঙ্গান্তর অতএব × গুণ + যোগ - বিয়োগ ÷ ভাগ
- A great 70% flat rate for your items.
- Fast response/approval times. Many sites take weeks to process a theme or template. And if it gets rejected, there is another iteration. We have aliminated this, and made the process very fast. It only takes up to 72 hours for a template/theme to get reviewed.
- We are not an exclusive marketplace. This means that you can sell your items on PrepBootstrap, as well as on any other marketplate, and thus increase your earning potential.