৮৭/১৯. দৈত্য^৩
Giant (জায়েন্ট)/ ‘بالشص’ (বিশশিস)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্র’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘শুক্র’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘ধন’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘অমির, আঙ্গুর, ধেনু, নির্যাস, পদ্ম, পিতৃধন ও রুটি’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘দুর্গা, নারাঙ্গী, বেহুলা, রতী, রাধা, সীতা ও সুন্দরী’ এবং এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘আদিপিতা, আদিমানব, আদ্যাশক্তি, দৈত্য^২, মহামায়া, মা ও স্বর্গীয় ফল’। এ পরিভাষাটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’, ‘বলাই’ ও ‘শুক্র’ ইত্যাদি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’র চারিত্রিক ও ছদ্মনাম পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়। এজন্য; বর্ণনার ক্ষেত্র অনুযায়ী এর সঠিক দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করা প্রত্যেক পাঠক-শ্রোতার একান্ত প্রয়োজন। যেসব ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’র অধীনে দৈত্য পরিভাষাটি ব্যবহার হয় তাদের সারণী নিচে দেখানো হলো।

অভিধা (Appellation)
দৈত্য (বাপৌছ)বি অসুর, দানব, বিরাটাকার ব্যক্তি, অসুর প্রকৃতির লোক, giant, ‘بالشص’ (বিশশিস), monster, giant, demon, prodigy, genie, goliath (শ্ববি) শুক্র, শুক্রাণু, বীর্য, বিন্দু, ধাতু, semen, sperm, ‘আ.ﻤﻧﻰ’ (মনি), ‘আ.ﻧﻂﻔﺔ’ (নুত্বফা) (রূপ্রশ) গোবিন্দ, জল, বারি, পিতৃধন,  অহল্যা, কালী, দুর্গা, বৈষ্ণবী, সীতা (ইদে) ‘আ.ﺍﺪﻢ’ (আদম), ‘আ.عزى’ (উয্যা), ‘আ.ﺠﻦ’ (জিন), ‘ফা.ﭙﺮﻯ’ (পরি), ‘الزكاة’ (আজ্ঝাকাত), ‘আ.ﻟﻮﻄ’ (লুত্ব), ‘ﻴﺯﻴﺪ’ (ইয়াজিদ) Jস্ত্রী ‘আ.ﺯﻟﻴﺠﺎ’ (জুলেখা), ‘আ. ‘ﺯﻫﺭﺍﺓ’ (জোহরা), ‘আ.بلقيس’ (বিলকিস) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্র’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. রূপকথার বিশাল আকার ভয়ঙ্কর জন্তুকে দৈত্য বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; পুরুজাতির শুক্রকে রূপকার্থে দৈত্য বলা হয় (বাপৌছ) আদিপিতা, আদিমানব, আদ্যাশক্তি, দৈত্য^২, মহামায়া, মা ও স্বর্গীয় ফল (বাপৌচা) দুর্গা, নারাঙ্গী, বেহুলা, রতী, রাধা, সীতা ও সুন্দরী (বাপৌউ) অমির, আঙ্গুর, ধেনু, নির্যাস, পদ্ম, পিতৃধন ও রুটি (বাপৌরূ) ধন (বাপৌমূ) শুক্র।

দৈত্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of giant)
১.   আরবিতে মালাকি বলে ফার্সিতে ফেরেস্তা কয়, সংস্কৃতিতে দৈত্য-দেবতা বাংলায় দেবতা হয়, জীবদেহে যোগাযোগকারী- জীবমাত্র রয় সবারি, ভাব উপলব্ধিকারী- যত আছে সৃষ্টিকুলে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৯২)।
২.   “জগাই মাধাই দস্যু ছিল, তাদের গুরুর কৃপা হলো, অধীন লালন দোহাই দিলো, সে আশাতে।” (পবিত্র লালন- ৩৯৫/৪)।

দৈত্যের সংজ্ঞা (Definition of giant)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; রূপকথার বিশাল আকার ভয়ঙ্কর জন্তুকে দৈত্য বলে।

দৈত্যের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of giant)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; পুরুজাতির শুক্রকে রূপকার্থে দৈত্য বলে।

দৈত্যের প্রকারভেদ (Variations of giant)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; দৈত্য দুই প্রকার। ১. উপমান দৈত্য ও ২. উপমিত দৈত্য।

১ উপমান দৈত্য (Analogical giant)
সাধারণত; বিশাল আকার অসুরকে উপমান দৈত্য বলে।

২ উপমিত দৈত্য (Compared giant)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; পুরুজাতির শুক্রকে উপমিত দৈত্য বলে।

শুক্রকে দৈত্য বলার কারণ কী? (What cause to say semen giant?)
শ্বরবিজ্ঞানে; দেহকে ঘর, বাড়ি, ভুবন, ভবন, দেহঘড়ি, দেহরাজ্য, দেহতরী ইত্যাদি বলা হয়। যেমন; রূপকথার দৈত্য বা কল্পিত দৈত্যরা খাল খনন, দীঘি খনন, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, রাজ-প্রাসাদ নির্মাণ ইত্যাদি কাজ করে; তাদৃশ শুক্র মাতৃগর্ভে প্রবেশ করে দেহ সদৃশ বিশাল আকার ভবন নির্মাণ করে। এজন্য; শ্বরবিজ্ঞানে শুক্রকে দৈত্য বলা হয়।

দৈত্যের পরিচয় (Identity of giant)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্র’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ। বিশ্বের বিভিন্ন শ্বরবিজ্ঞানে এ পরিভাষাটির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু বিশ্বের একেক দেশে একেক ভাষায় একে উপস্থাপন করা হয় বলে সাধারণ পাঠক শ্রোতা এটি; অনুধাবন করতে পারে না। এ পরিভাষাটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’, ‘বলাই’ ও ‘শুক্র’ এ তিনটি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’রই চারিত্রিক ও ছদ্মনাম পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়। সাধারণ পাঠক-পাঠিকা এদের চরিত্র দেখে এসব বাস্তব বলে প্রায়ই ভুল করে বসে। যে তিনটি মূলকে এ পরিভাষাটি ব্যবহার হয় তার বিবরণ আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি। এখানে; আলোচ্য পরিভাষাটির প্রকৃত ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ হচ্ছে শুক্র।

অত্যন্ত মজার বিষয় হলো সমাজের অধিকাংশ অনুবাদক, অভিধানবিদ, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, লেখক, গবেষক, আলোচক ও পাঠক-শ্রোতা শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত দৈত্য বলতে কল্পিত বিশাল দেহী দৈত্যকেই বুঝেন এবং বুঝিয়ে থাকেন। এসব কারণে বিশ্ববিখ্যাত সাম্প্রদায়িক গ্রন্থাদির মূলশিক্ষা চরমভাবে বিঘ্নিত বা ব্যহত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন হতে। যারফলে; ক্রমে ক্রমে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচলিত সাম্প্রদায়িকতা, আতঙ্কবাদ ও উগ্রবাদের। এখনও যদি আমরা সাম্প্রদায়িক গ্রন্থাদি ও পারম্পরিক উপাখ্যানগুলোর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’র দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করতে না পারি; তবে; ভাবি প্রজন্মকে সাম্প্রদায়িক মতবাদগত ও জাতিগত সহিংসতা হতে অবমুক্ত করতে চরমভাবেই ব্যর্থ হবো। পরিশেষে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই সাম্প্রদায়িক গ্রন্থ ও পৌরাণিক সাহিত্যাদির মধ্যে ব্যবহৃত দৈত্য পরিভাষাটির দ্বারা রূপকথার কল্পিত বিশাল দেহী দৈত্য কখনই বুঝায় না। বরং এ পরিভাষাটির দ্বারা কেবল স্ত্রী জননাঙ্গ, শুক্র ও শিশ্নকেই বুঝানো হয়। উল্লেখ্য যে; বিশ্বের বিভিন্ন শ্বরবিজ্ঞানের মধ্যে- অমুকদেশে এক বিশাল দৈত্য ছিল, অমুক দৈত্য প্রতিদিন ১০১টি মানুষ ভক্ষণ করতো, অমুক দৈত্য ৯৯টি হত্যা করে প্রাতরাস গ্রহণ করতো এমন যত উপখ্যান বর্ণিত হয়েছে; সবগুলোর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ই আলোচ্য ত্রি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’। শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত দৈত্যের বিবরণ দ্বারা কখনই রূপকথার কল্পিত বিশালদেহী দৈত্য বুঝায় না।