নারী-ন্যায়বিচার-দাঁড়িপাল্লা এবং নারী ভাস্কর্য দেশে দেশে
(Woman-justice-scales; and woman sculptures in the several countries)
সারা বিশ্বের প্রায় সব বিচারালয়ই পুরুষ নিয়ন্ত্রিত, পুরুষ শাসিত ও পুরুষ দ্বারা পরিচালিত। তবুও; ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফাতেমা বিবি নামে একজন মুসলিম নারীকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট প্রথম নারী বিচারক রূপে নিয়োগ দেয়।

তামিলনাড়ু গভর্নর
বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই নারী বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের কোন দেশ কখন কোন কোর্টে নারী বিচারপতি নিয়োগ দেয় এবং তাদের নাম কী? এজন্য; নিচের লিংটি দেখুন। http://www.ranker.com/list/famous-female-judges/reference
আমেরিকার কোন কোর্টে কখন কোন নারীকে বিচারপতি রূপে নিয়োগ দেওয়া হয় তার জন্য দেখুন; List of American women’s firsts.
নারীদের মাথার ঘিলুর পরিমাণ গড়ে ১২৫০ গ্রাম। অন্যদিকে; পুরুষদের মাথার ঘিলুর পরিমাণ গড়ে ১৩৬০ গ্রাম। অর্থাৎ; পুরুষদের চেয়ে নারীদের মাথার ঘিলুর পরিমাণ গড়ে ১১০ গ্রাম ন্যূন থাকে।[1] [2]
ইসলামী মতবাদে কোনকিছুর সাক্ষ্যদান ব্যাপারে বলা আছে যে; একজন পুরুষ সাক্ষী দিবে। পুরুষ না পাওয়া গেলে দুইজন নারী সাক্ষী দিবে। আবার; পৈতৃক সম্পদ ভাগের ব্যাপারে বলা আছে যে; এক ভাইয়ের অংশের সমান পাবে দুই বোন। সন্তানের সম্পত্তির অংশের ব্যাপারে বলা আছে যে; পিতার অর্ধেক পাবে মাতা। অর্থাৎ; দেখা যাচ্ছে যে; নারী জন্মগতভাবেই দুর্বল। আবার; তাদের সম্পত্তির অংশের ব্যাপারেও দুর্বল করেই রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে; পুরুষ প্রধান সমাজে (Men’s society) নারী সারা জীবনই পরাধীন। কন্যা সন্তান শৈশব ও কৈশোরে পিতামাতার অধীন; যৌবনে স্বামীর অধীন ও পৌঢ় বয়সে সন্তান ও জামাতার অধীন। তবে; নারী প্রধান সমাজের (Women’s society) কথা ভিন্ন। সেখানে নারীরাই প্রধান।
নারীদের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিলে তারা ন্যায়বিচার করবে কিভাবে? আর নারী ন্যায় বিচারের প্রতীক হয় কিভাবে? সারা বিশ্বের মানুষ কেন নারী মূর্তিকে ন্যায়বিচারের প্রতীক রূপে গ্রহণ করেছে? এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর অন্বেষণ না করলে বাংলাদেশে ঢাকার হাইকোর্ট চত্বরে স্থাপিত নারী মূর্তি বা নারী ভাস্কর্যের বৈধতা বিচার করা যাবে না।

ঢাকার হাইকোর্টের সামনে থেকে সরকার কর্তৃক ভাস্কর্যটি সরানোর পর তা ইতিহাস হয়ে যায়।
সারা বিশ্বের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ মনে করেন যে;
মানুষের বিবেকই ন্যায়বিচারের আদালত। অন্যদিকে; সারা বিশ্বের আত্মতাত্ত্বিক গবেষকগণ ধারণা করেন যে; মানুষের মধ্যেই ন্যায়বিচারের প্রতীক রয়েছে। মানুষের দুটি অংশ। যথা; পুরুষ অংশ। যাকে বলা হয় ‘অর্ধাঙ্গ’। অন্যটি নারী অংশ। যাকে বলা হয় ‘অর্ধাঙ্গী’। অর্থাৎ; অর্ধাঙ্গ ও অর্ধাঙ্গী মিলেই পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়। এই সূত্র ধরে বলা যায় যে; কেবল পুরুষ অর্ধ মানুষ এবং শুধু নারীও অর্ধ মানুষ। যেমন; কেবল পুরুষও পূর্ণাঙ্গ মানুষ নয়, তেমনই; কেবল নারীও পূর্ণ মানুষ নয়। যেমন; হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার মিলে কম্পিউটার হয়, তেমনই; মানুষের পুরুষ ও নারী মিলেই মানুষ হয়।
মরমী কবি আলাউদ্দিন লেখেছেন; “দুনিয়ায় সাড়ে তিন হাত লম্বা মানুষ অর্ধেক ফাড়া, সেই মানুষের ভিতরে অহঙ্কার ভরা।” বর্তমান বিশ্বও এই মতবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
যেমন; পুরুষের জ্ঞান অধিক হলেও ভুলের ঊর্ধ্বে নয়, তেমনই; নারীর জ্ঞান ন্যূন হলেও ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তাই; বিচারপতি নারী নাকি পুরুষ হবে; তা নিয়ে ঝগড়া করার অবকাশ নেই। দেশের সরকার ইচ্ছে করলে নারী বিচারপতি বা পুরুষ বিচারপতিও নিয়োগ দিতে পারে।
মাথার ঘিলু কমবেশী যাই হোক না কেন; নারীও মানুষ, পুরুষও মানুষ। বিচারপতি নারী হবে, নাকি পুরুষ হবে; এটি নির্ধারণ করবেন সরকার। আমরা এ গ্রন্থে কেবল নারী ন্যায়বিচারের প্রতীক হবার কারণ বর্ণনা করতে চাই।
মানুষ পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয় (Sense organ) দ্বারা যা অনুভব করে; জ্ঞান দ্বারা তা বিশ্লেষণ করে মনের সাহায্যে পঞ্চ কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা সম্পাদন করে। এখানে; স্বাভাবিকভাবে বলা যায় যে; যার জ্ঞান অধিক সে যেমন বিশ্লেষণ করতে পারবে, যার জ্ঞান কম সে তেমন বিশ্লেষণ করতে পারবে না। তাই; এমন কথা বলায় দোষের কিছ নেই যে; “পুরুষের চেয়ে নারীর বিশ্লেষণ ক্ষমতা কম।” সেজন্য; নির্দ্বিধায় বলা যায় যে; বিচারপতি পদের জন্য নারীর চেয়ে পুরুষের অগ্রাধিকার অধিক। পুরুষরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষমতা রাখে অধিক। পুরুষ প্রধান সমাজের প্রয়োজন অধিক। বিশ্বে শান্তি শৃঙ্খলা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য পুরুষ বিচারপতির বিকল্প নেই।
নারী ও পুরুষ কেউই ন্যায়বিচার করার ক্ষমতা রাখে না। কারণ; মানুষ মাত্রই ভুল করে (To err is human)। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে; অবশ্যই জৈব যন্ত্র (Organic device) বা ভৌত যন্ত্র (Material device) ব্যবহার করা উচিত। কারণ; যন্ত্রের সমাধান কখনও ভুল হয় না। যন্ত্রকে যা শেখানো হয়, তাই করে। ভৌত যন্ত্রকে শিক্ষা দেয় মানুষ। অন্যদিকে; জৈব যন্ত্র জন্মগতভাবেই শিক্ষিত। তবে; সন্তানের বয়সের সাথে সাথে এগুলো সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় হয়।
জৈব যন্ত্র (Organic device/ Cervix/ Estuary)


এটি; নারীদেহের সঠিক তাপমাত্রা পরিমাপক জৈব যন্ত্র। এটি; কামলীলার সময়ে নারীদেহের সঠিক তাপ নিরূপণ করে।
ভৌত যন্ত্র (Material device/ Watch)

এটি; সঠিকভাবে সময় নিরূপণ করে।
ন্যায়বিচারের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা
(The symbolic scales of justice)
সাধারণত কোনকিছুর ভর পরিমাপ করার নিক্তিকে দাঁড়িপাল্লা বা তুলাদণ্ড বলা হয়। যেমন;

বস্তুর ভর পরিমাপের ভিন্ন ভিন্ন দাঁড়িপাল্লা আছে। যেমন;


এজন্য; দাঁড়িপাল্লা বলা বা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই চিত্র ১ এর মতো ভাবা উচিত নয়। এছাড়াও; একেক বিষয়বস্তু পরিমাপ করার একেক ধরণের নিক্তি আছে। যেমন;
সময় পরিমাপ করার জন্য ঘড়ি। দৈর্ঘ্য পরিমাপ করার জন্য ফিতা। উচ্চতা পরিমাপ করার জন্য টেপ
(Tape)। তাপমাত্রা পরিমাপ করার জন্য উষ্মমাপক (Thermometer)। বাতাসের চাপ পরিমাপ করার জন্য আবহমানযন্ত্র (Barometer)। এগুলো সবই নিক্তি। তাই; বলা যায় যে; সব নিক্তি একই প্রকার নয়। অর্থাৎ; সব দাঁড়িপাল্লা এক রকম নয়।
এবার আমরা দেখতে চাই যে; পবিত্র গ্রন্থগুলোর মধ্যে দাঁড়িপাল্লা বিষয়ে কী কী বর্ণনা আছে? যেমন; পবিত্র কুরানে আছে;
১ “وَلَا تَقْرَبُوا مَالَ الْيَتِيمِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ حَتَّىٰ يَبْلُغَ أَشُدَّهُ ۖ وَأَوْفُوا الْكَيْلَ وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ ۖ لَا نُكَلِّفُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا ۖ وَإِذَا قُلْتُمْ فَاعْدِلُوا وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَىٰ ۖ وَبِعَهْدِ اللَّهِ أَوْفُوا ۚ ذَٰلِكُمْ وَصَّاكُم بِهِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ” অর্থ; “তোমরা অনাথের সম্পদের নিকটবর্তী হয়ো না, সুন্দর পন্থা ছাড়া। যতক্ষণ না সে পরিণত বয়সে উপনীত হয়; পরিমাপ পাত্রে বা তুলাদণ্ডে যথাযথ দাও। আমরা কাউকে তার সাধ্য ছাড়া দায়িত্ব অর্পণ করি না। যখন তোমরা কথা বলবে; তখন সুবিচার করো, যদিও সে আত্মীয় হয় এবং কাঁইয়ের অঙ্গীকার পূর্ণ করো। এগুলো তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।” (কুরান, সুরা আনয়াম- ১৫২)।
২ “وَإِلَىٰ مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا ۗ قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ ۖ قَدْ جَاءَتْكُم بَيِّنَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ ۖ فَأَوْفُوا الْكَيْلَ وَالْمِيزَانَ وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسَ أَشْيَاءَهُمْ وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ” অর্থ; “মাদইয়ানে (প্রেরণ করেছিলাম) তাদের ভাই শুয়াইবকে। সে বললো, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কাঁইয়ের উপাসনা করো। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো (সত্য) উপাস্য নেই। তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। সুতরাং; তোমরা পরিমাপ পাত্রে বা তুলাদণ্ডে যথাযথ দাও এবং মানুষকে তাদের পণ্যে অল্প দেবে না; তোমরা ভূমিতে ঝঞ্ঝাট করবে না; তা সংশোধনের পর। এগুলো তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।” (কুরান, সুরা আরাফ- ৮৫)।
৩ “وَإِلَىٰ مَدْيَنَ أَخَاهُمْ شُعَيْبًا ۚ قَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللَّهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَٰهٍ غَيْرُهُ ۖ وَلَا تَنقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ ۚ إِنِّي أَرَاكُم بِخَيْرٍ وَإِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ مُّحِيطٍ” অর্থ; “মাদইয়ানে আমরা (পাঠিয়েছিলাম) তাদের ভাই শুয়াইবকে। সে বললো; ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কাঁইয়ের উপাসনা করো, তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো (সত্য) উপাস্য নেই এবং পরিমাপ পাত্রে বা তুলাদণ্ডে অল্প দিও না; আমি তোমাদের প্রাচুর্যশীল দেখছি, কিন্তু আমি তোমাদের ওপর এক সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তির ভয় করছি।” (কুরান, সুরা হুদ- ৮৪)।
৪ “وَيَا قَوْمِ أَوْفُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ بِالْقِسْطِ ۖ وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسَ أَشْيَاءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْأَرْضِ مُفْسِدِينَ” অর্থ; “হে আমার সম্প্রদায়! পরিমাপ পাত্রে বা তুলাদণ্ডে যথাযথভাবে দাও এবং মানুষকে তাদের পণ্য অল্প দিও না; ভূমিতে ঝঞ্ঝাট সৃষ্টি করে বেড়িও না।” (কুরান, সুরা হুদ- ৮৫)।
৫ “اللَّهُ الَّذِي أَنزَلَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ وَالْمِيزَانَ ۗ وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّ السَّاعَةَ قَرِيبٌ” অর্থ; “কাঁই, যিনি সত্য গ্রন্থ ও তুলাদণ্ড অবতীর্ণ করেছেন। কিসে তোমাকে জানাবে; হয়তো থাম্যদিন অত্যন্তই নিকটবর্তী?” (কুরান, সুরা শুরা- ১৭)।
৬ “وَالسَّمَاءَ رَفَعَهَا وَوَضَعَ الْمِيزَانَ” অর্থ; “তিনি আকাশকে সমুন্নত করেছেন এবং দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করেছেন।” (কুরান, সুরা রহমান- ৭)।
৬ “أَلَّا تَطْغَوْا فِي الْمِيزَانِ” অর্থ; “তোমরা তুলাদণ্ড লঙ্ঘন করতে পারো না।” (কুরান, সুরা রহমান- ৮)।
৭ “وَأَقِيمُوا الْوَزْنَ بِالْقِسْطِ وَلَا تُخْسِرُوا الْمِيزَانَ” অর্থ; “তোমরা সঠিক পরিমাপ প্রতিষ্ঠা করো এবং তুলাদণ্ডে অল্প দিও না।” (কুরান, সুরা রহমান- ৯)।
৮ “لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ الْكِتَابَ وَالْمِيزَانَ لِيَقُومَ النَّاسُ بِالْقِسْطِ ۖ وَأَنزَلْنَا الْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ اللَّهُ مَن يَنصُرُهُ وَرُسُلَهُ بِالْغَيْبِ ۚ إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ” অর্থ; “নিশ্চয় আমরা আমাদের সাঁইকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে গ্রন্থ ও তুলাদণ্ড অবতীর্ণ করেছি; যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমরা আরও অবতীর্ণ করেছি লোহা, তাতে প্রচণ্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে। যাতে কাঁই জেনে নিতে পারেন যে; কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর সাঁইকে সাহায্য করে। অবশ্যই কাঁই মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।” (কুরান, সুরা হাদিদ- ২৫)।
বহুবচন (Plural)
আরবি মিঝান (مِيزَان) পরিভাষাটি একবচন। এর বহুবচন মাওয়াঝিন (مَوَازِينُ)। তাই; নিচে মাওয়াঝিনের আয়াতগুলো তুলে ধরা হলো।
১ “وَالْوَزْنُ يَوْمَئِذٍ الْحَقُّ ۚ فَمَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ” অর্থ; “সেদিন পরিমাপ হবে যথাযথ। সুতরাং; যারা তুলাদণ্ডে ভারী হবে; তারাই হবে সফলকাম।” (কুরান, সুরা আরাফ- ৮)।
২ “وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا ۖ وَإِن كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا ۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَاسِبِينَ” অর্থ; “থাম্যদিনের জন্য আমরা যথাযথভাবে তুলাদণ্ড স্থাপন করব। সুতরাং; কারো প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না। কারো কর্ম যদি সরিষা পরিমাণও হয়; আমরা তা উপস্থিত করব। গণনা গ্রহণকারী রূপে আমরাই যথেষ্ট।” (কুরান, সুরা আম্বিয়া- ৪৭)।
৩ “فَمَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ” অর্থ; “অতঃপর; যারা তুলাদণ্ডে ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম।” (কুরান, সুরা মুমিনুন- ১০২)।
৪ “فَأَمَّا مَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ” অর্থ; “অতঃপর; যারা তুলাদণ্ডে ভারী হবে।” (কুরান, সুরা ক্বারিয়া- ৬)।
৫ “وَأَمَّا مَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ” অর্থ; “যারা তুলাদণ্ডে পাতলা হবে।” (কুরান, সুরা ক্বারিয়া- ৮)।
সাধারণ অর্থে বলা হয়েছে; যেমন; “وَأَوْفُوا الْكَيْلَ إِذَا كِلْتُمْ وَزِنُوا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِيمِ ۚ ذَٰلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا” অর্থ; “যখন; তোমরা পরিমাপ করো; পরিমাপের তুলাদণ্ড প্রতিষ্ঠিত করো। এটা কল্যাণকর ও পরিণামে ভালো।” (কুরান, সুরা বনি ইস্রাইল- ১৭)।
“মুনিগণ যাকে আহ্বান করেন, সে স্বর্গীয় হব্যবাহক ত্রিত বায়ু ও অগ্নি, স্বর্গের অধিপতি অর্থাৎ; সূর্যের সাথে তুলাদণ্ড রূপ আনন্দ ভাগী হয়ে এবং পূষা, ভগ্ন ও যারা বিশ্বের রক্ষাকর্তা এরা সকলে শীঘ্র যজ্ঞস্থলে আসুক, যেরূপ বেগবান অশ্বগণ সংগ্রামে বেগ ধাবিত হয়।” (বেদ; পঞ্চম মণ্ডল, সূক্ত- ৪১/৫)। “আপনাকে তুলাদণ্ডে পরিমাপ করা হয়েছে এবং দেখা গেছে যে আপনার মধ্যে যথেষ্ট ধার্মিকতা নেই।” (বাইবেল; দেওয়াল লিখন- ৫)।
ওপরে বেদ; বাইবেল ও কুরানের উদ্ধৃতি হতে পরিষ্কারভাবেই বুঝা যায় যে; বর্ণিত তুলাদণ্ড বা দাঁড়িপাল্লা সাধারণ নিক্তি নয়। এটি; স্বয়ং প্রভুর প্রতিষ্ঠিত; স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এমনকি; স্বয়ং স্রষ্টা কর্তৃক অবতরণকৃত। যেমন; ১ “কাঁই, যিনি সত্য গ্রন্থ ও তুলাদণ্ড অবতীর্ণ করেছেন।” (কুরান, সুরা শুরা- ১৭)। ২ “নিশ্চয় আমরা তাদের সাথে গ্রন্থ ও তুলাদণ্ড অবতীর্ণ করেছি; যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।” (কুরান, সুরা হাদিদ- ২৫)। এখানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে; তুলাদণ্ডটি অবতরণকৃত। অন্যদিকে; বেদে বলা হয়েছে যে; তুলাদণ্ড ‘আনন্দ ভাগী’। আবার বাইবেলে উল্লেখ করা হয়েছে যে; “ঐ তুলাদণ্ডে পরিমাপ করে দেখা গেছে, আপনার মধ্যে ধার্মিকতা নেই।” আলোচ্য তুলাদণ্ডটি বা নিক্তিটি হলো; প্রাপ্তবয়স্ক রমণীর ভৃগু (Estuary)। ভৃগুকে তুলাদণ্ড বলার কারণ হলো; নারী-পুরুষ যখন নরলীলা বা কামলীলা করে, তখন; নির্দিষ্ট তাপে ভৃগু প্রসারিত হয়। অতঃপর; তার জরায়ুতে যে জল সঞ্চিত হয়, তা নিঃসরণ করে চরমপুলক লাভ করে। যেমন; পুরুষরা শুক্রপাত দ্বারা চরমপুলক লাভ করে, তেমনই; নারীরাও জরায়ুর সঞ্চিত জল নিঃসরণে চরমপুলক লাভ করে।
নারীর চরমপুলক লাভের সময়সীমা ব্যাপারে বলা হয়েছে; “لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ” অর্থ; “সেই মহান সময়টি সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম।” (কুরান; সুরা ক্বদর-৩)। পুরাণ বা পৌরাণিক সাহিত্যে এক শ্বাসকে এক মাস বলা হয়। এ সূত্র অনুযায়ী সহস্র মাস সমান সহস্র শ্বাস। আর গড়ে ২৪ শ্বাস সমান এক মিনিট। এবার ১,০০০ কে ২৪ দ্বারা ভাগ করলে ৪১.৬৬ মিনিট হয়। অঙ্কশাস্ত্র অনুযায়ী কোনো ভগ্নাংশ ৫০ এর ওপরে হলে; ভগ্নাংশ তুলে দিয়ে ১ যোগ করতে হয়। অর্থাৎ; এখানে; ৪১.৬৬ এর স্থলে ৪২ লেখা যায়। তাই; পুরাণ বা পৌরাণিক সাহিত্যে বলা হয়; প্রভু দর্শন সাধন সময় ৪২ মিনিট। এই সময়ে নিরাকার প্রভু জরায়ুতে জলবৎ আকার ধারণ করে। আর এই জল রূপ প্রভু বের হলেই একজন কামিনী পূর্ণ চরমপুলক লাভ করে।
এখানে আরও; স্মরণীয় যে; পুরুষের শুক্রপাতের কোনো সময়সীমা নেই। তাই; পুরুষকে শুক্র রক্ষা করার জন্য সাধন করতে হয়। অন্যদিকে; নারীর প্রেমরস বের হওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। ঐ সময়ের পূর্বে কোনমতেই প্রেমরস নিঃসৃত হয় না। উল্লেখ্য; কামলীলা আরম্ভ করার পূর্বেই কামরস বের হয়। তাই; কামরসকে প্রেমরস ভাবার কোনো অবকাশ নেই। নারীদের কামরস জননপথ পিচ্ছিল করে। অন্যদিকে; প্রেমরস নারীকে চরমপুলক দান করে। আরও স্মরণীয় যে; বিশ্বের সব সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুস্তক-পুস্তিকায় বিষয়টি রূপক কাহিনীর মাধ্যমে সবিস্তারে বর্ণিত আছে।
অন্যদিকে; বেদে যে ‘আনন্দ ভাগী’ তুলাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। তা দ্বারা কেবল ভৃগুকেই বুঝায়। কারণ; আনন্দ দান করার ছলনার সাথে সাথে একমাত্র ভৃগুই পুরুষকে পরিমাপ করে। তাই; বেদে ভৃগুকে ‘আনন্দ ভাগী’ তুলাদণ্ড বলা হয়েছে। আর; বাইবেলের বর্ণনা হলো; “তুলাদণ্ডে পরিমাপ করে দেখা গেছে, আপনার মধ্যে যথেষ্ট ধার্মিকতা নেই।” এই কথা দারাও ভৃগুকে বুঝায়। কারণ; সাধুশাস্ত্রে ধর্ম ধারণকারীকে ধার্মিক বলা হয়। অর্থাৎ; কামলীলায় শুক্র ধারণকারীকে ধার্মিক বলা হয়। কামলীলায় ৪২ মিনিট শুক্র ধারণ করতে সক্ষম কামিনকে (Prurient) ধার্মিক বলা হয়। অন্যথায়; তার মধ্যে ধার্মিকতা নেই।
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে; একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ঘিলু একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের চেয়ে ১১০ গ্রাম ন্যূন। তাই; নারীকে কোনমতেই ন্যায়বিচারের প্রতীক বলা যায় না। এছাড়াও; নারীর রূপ, গুণ, নৈপুণ্য, প্রেম ও প্রজ্ঞা কোনকিছুই ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না।
বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে; মহা শক্তিশালী ভৃগুই ন্যায়বিচারের স্বর্গীয় নিক্তি, তুলাদণ্ড, দাঁড়িপাল্লা বা মাণদণ্ড। আর ভৃগু নারীদেহে অবস্থিত বিধায় নারীকে ন্যায়বিচারের প্রতীক ধরা হয়। এখন পরিষ্কারভাবে বলা যায় যে; একটি স্বর্গীয় নিক্তি, তুলাদণ্ড বা দাঁড়িপাল্লা নারীদেহে বিদ্যমান; যা মানুষের দ্বারা নির্মিত নয়; যা মানুষ পরিবর্তন করতে পারে না। যাতে মানুষ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এমনকি; কোনো নারীও ইচ্ছা করে তার পরিবর্তন করতে পারে না। মূলতঃ এখান থেকেই পূর্বকালের বা আদিমযুগের মানুষ নারীকে ন্যায়বিচারের প্রতীক নির্ধারণ করেছিলেন। যা এখন সভ্য জগতের মানুষও মেনে নিতে বাধ্য।
যেমন; ভারতীয় পুরাণে গান্ধারী, গ্রিক পুরাণে এ্যাথিনা (Athina)। এছাড়াও; গ্রিকরা বিচারের দেবী রূপে থেমিসকে (Themis) মান্য করেন। রোমীয় পুরাণে এ দেবীকে বলা হয় জাস্টিশিয়া (Justicia)।


ন্যায়বিচারের প্রতীক নারী মূর্তি
(The symbolic woman statue of justice)
নারী মূর্তির প্রচলন কখন থেকে আরম্ভ হয় তা সঠিকভাবে নির্ণয় করা দুষ্কর। তবে; জার্মানির সিডামো প্রদেশের একটি গুহার মধ্যে প্রায় ৩৫,০০০ বছর আগের একটি ভাস্কর্যের সন্ধান পাওয়া গেছে। সম্ভবত; এটিই সর্ব প্রাচীন ভাস্কর্য।

ওপরের ছবিটির মধ্যে দেখা যায়; একজন মাতা তার এক সন্তানকে বুকে ধারণ করে আছে। এটি; আবিষ্কার হয়েছে জার্মানিতে। হাতির দাঁতের ওপর খোদাই করা নারী মূর্তিটির দৈর্ঘ্য মাত্র ছয় সেন্টিমিটার। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন; মূর্তিটি নির্মাণ করা হয় কমপক্ষে ৪০ হাজার বছর আগে। জার্মানির দক্ষিণে দানিউব নদীর উপত্যকায় এ মূর্তিটি পাওয়া গেছে। বিশ্বে কোনো মানুষের এতো অধিক প্রাচীন মূর্তির খোঁজ এর আগে আর পাওয়া যায় নি। নেচার পত্রিকায় এ খবর প্রচার করা হয়েছে।
জার্মানির টুরিসে শহরে এ নারী মূর্তি বুধবার উপস্থাপন করতে গিয়ে পুরাতত্ত্ববিদ নিকোলাস কনরাড বলেন; হাতির দাঁতের নির্মিত এ মূর্তিটি নির্মিত হয়েছিল কমপক্ষে ৪০ হাজার বছর আগে। এ মূর্তির সন্ধান পুরাতত্ত্বের ক্ষেত্রে এক সারা জাগানো ঘটনা। এটা ইউরোপ তথা সারাবিশ্বে শিল্পকর্মের আদি উৎসের ওপর নতুন করে আলো ফেলবে। তবে; এ মূর্তি থেকে আমরা এখনও বিস্তারিত তথ্য বের করতে পারি নি। মূর্তিটি খোদাই করা হয় নিখুঁতভাবে। শিল্পী তার প্রাণশক্তি দিয়ে খুবই অভিব্যক্তিময়ভাবে মূর্তিটি নির্মাণ করেছিলেন। এ পর্যন্ত ‘ভেনাস অফ হোল ফেলস’ নামের এই মূর্তিটির ছয়টি টুকরা পাওয়া গেছে। এখনও; এর বাঁ হাত ও কাঁধের একটি অংশ খুঁজে পাওয়া যায় নি। প্রথম টুকরাটি পাওয়া গেছে গত বছরের সেপ্টেম্বরে। তারপর; একে একে ছয়টি টুকরাকে জোড়া লাগানো হয়েছে। ভেনাস নামের এ মূর্তির মাথাটি খুবই ছোট। তবে; কাঁধ বেশ চওড়া।
মজার ব্যাপার হচ্ছে; এ নারী মূর্তিটির রয়েছে বিশাল স্তনযুগল ও সুডৌল নিতম্ব। একটি হাতের আঙুল বেশ নিপুণভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে; এর পা দুটি শরীরের তুলনায় বেশ ছোট ও অস্পষ্ট। ধারণা করা হচ্ছে; গর্ভবতী নারীর অনুকরণে এটা নির্মিত হয়েছে। তবে; নির্মাণ করার পর এটার ওপর কোনো রঞ্জন পদার্থ ব্যবহার করা হয় নি।
প্রফেসর কনরাড বলেন; সম্ভবত এটা আধুনিক মানুষের আবির্ভাবের প্রথম দিককার নির্মাণ। তিনি বলেন; আমরা এর আগে গুহাবাসী মানবের সঙ্গীতের যন্ত্রাংশ, বিভিন্ন অলঙ্কার, কল্পকাহিনীর মানুষের মুখের মতো সিংহের মাথা, বিভিন্ন পাথরের নির্মাণ অস্ত্র, হাড়ের নির্মাণ অস্ত্র, হাতির দাঁতের নির্মাণ অস্ত্র ইত্যাদি পেয়েছি। কিন্তু মানব মূর্তি পাওয়া এটাই প্রথম। বিজ্ঞানীরা বলছেন; রেডিও কার্বনের মাধ্যমে মূর্তিটি ঠিক কতো বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। কারণ; এ পর্যন্ত প্রাচীন প্রস্তর যুগের প্রথম পর্বের যতকিছুর সন্ধান মিলেছে, তা শুধু পশুর অবয়বের শিল্প রূপ মাত্র। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে এ প্রাচীন মূর্তিটি জনসাধারণের দেখার জন্য রাখা হবে স্টুটগার্ট শহরের শিক্ষা ভবনে। বিজ্ঞানীদের ভাষায়; এ নারী মূর্তিটি যে দক্ষতা ও নিখুঁতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, শুধু গ্রিক সেই সৌন্দর্যের দেবী ভেনাসের সঙ্গেই এর তুলনা করা সম্ভব। (তথ্যসূত্রঃ বিবিসি অবলম্বনে ফেরদৌস মামুন)। বিস্তারিত জানার জন্য নিচের লিংকটি দেখুন। https://taiyabs.wordpress.com/2009/05/16/venus.
সারা বিশ্বে তখন হতে এখন পর্যন্ত যতো ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে; তার অধিকাংশই নারী মূর্তি। বিশ্বে যতো পৌরাণিক চরিত্র আছে তারও অধিকাংশই নারী চরিত্র।
নারী মূর্তি বা নারী ভাস্কর্য হাইকোর্ট প্রাঙ্গনে শোভা পেল কিভাবে? এরূপ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় যে; নারীদেহে ভৃগু (Estuary) জৈব যন্ত্র। এটি কামাগুনের তাপমাত্রা (Concupiscence temperature) পরিমাপ করতে পারে। যখন; দম্পতি কামলীলায় রত হয় তখন; উভয়েরই অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। সাধক সাধিকা নিজেরা নিজেদের তাপমাত্রা বৃদ্ধির বিষয়টি সামান্যই অনুভব করতে পারে। তবে; ভৃগু যান্ত্রিক অনুধাবকের (Mechanical sensor) কাজ করে। যেমন; ভৌত অনুধাবকগুলো নিখুঁতভাবে কাজ করে, তেমনই; ভৃগুও জৈব অনুধাবক রূপে নিখুঁতভাবে কাজ করে। দেহতাত্ত্বিক দার্শনিকগণের মতে; ভৃগু কামুক–কামিনীর প্রদত্ত তাপমাত্রা একেবারে সঠিকভাবেই নিরূপণ করতে পারে। তাই; নির্দিষ্ট পরিমাণ তাপমাত্রায় পৌঁছার পর; তার চির রুদ্ধ দুয়ার খুলে দেয়।
এই ভৃগু ব্যাপারে বলা হয়েছে; “তোমরা তুলাদণ্ড লঙ্ঘন করতে পারো না।” (কুরান, সুরা রহমান- ৮)। আবার; বলা হয়েছে; “তোমরা সঠিক পরিমাপ প্রতিষ্ঠা করো এবং তুলাদণ্ডে অল্প দিও না।” (কুরান, সুরা রহমান- ৯)। অন্যত্র বলা হয়েছে; “কাঁই, যিনি সত্য গ্রন্থ ও তুলাদণ্ড অবতীর্ণ করেছেন। আরও বলা হয়েছে; “তিনি আকাশকে সমুন্নত করেছেন এবং দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করেছেন।” (কুরান, সুরা রহমান- ৭)।
এটি সর্বদা সঠিক পরিমাপ প্রদান করে। এটি নারীদেহে অবস্থিত। এখান থেকেই নারীকে ন্যায়বিচারের প্রতীক রূপে প্রতীয়মান করা হয়েছে। তাই; আত্মতাত্ত্বিক দার্শনিকগণের অভিমত হলো; ‘নারী ইমাম ও নারী নেতা’। যেমন; লালন সাঁইজি লিখেছেন;
“১আছে আদি-মক্কা এ মানবদেহে, দেখনা রে মন ধেয়ে, দেশ দেশান্তর দৌড়ে এবার, মরিস কেন হাঁপিয়ে। ২করে অতি আজব ভাক্কা, গঠেছে সাঁই মানুষ-মক্কা, কুদরতি নূর দিয়ে, চার-দ্বারে চার নূরের ইমাম, মধ্যে সাঁই বসিয়ে। ৩মানুষ-মক্কা কুদরতি কাজ, উঠছেরে আজগুবি আওয়াজ, সাততলা ভেদিয়ে, আছে সিংদরজায় দ্বারী একজন, নিদ্রাত্যাগী হয়ে। ৪তিল পরিমাণ জায়গার ওপর, গঠেছেন সাঁই ঊর্ধ্বনগর, মানুষ-মক্কা এ, কত লাখ লাখ হাজি করছেন হজ, সে জায়গায় গিয়ে। ৫দশ-দুয়ারী মানুষ-মক্কা, গুরু পদে ডুবে দেখগা, ধাক্কা সামলিয়ে; লালন বলে সে গুপ্ত-মক্কার, আদি-ইমাম সে-ই মেয়ে।”
(পবিত্র লালন- ৮০/১-৫)।
উপরোক্ত সূত্র ধরেই; ন্যায়বিচারের প্রতীক রূপে স্থান করে নিয়েছে নারী ভাস্কর্য। মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক রূপে স্থান করে নিয়েছে নারী ভাস্কর্য। আমেরিকার স্বাধীনতার প্রতীক রূপে স্থান করে নিয়েছে নারী ভাস্কর্য।



বিভিন্ন দেশের বিচারালয় চত্বরে নারী মূর্তি
(Women statues in the judicial premises of different countries)
বিশ্বের কোন দেশের কোন কোর্টের সামনে নারী ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।















Statue of Contemplation of Justice by James Earle Fraser on the U.S. Supreme Court Building’s main steps










আইসিস; মাতৃত্ব, যাদু এবং ঊর্বরতার মিশরীয় দেবী
আইসিস অথবা আরও বেশি বিশ্বাসযোগ্যভাবে আসেট (প্রাচীন গ্রিক: Ἶσις) হলো প্রাচীন মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসে মাতৃত্ব, যাদু এবং ঊর্বরতার দেবী। মূলত মিশরীয় ধর্মবিশ্বাসের দেবী হলেও, আইসিসের উপাসনা প্রাচীন মিশরের বাইরে গ্রিক-রোমান বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়েছিল। আদর্শ মা, স্ত্রী, প্রকৃতি ও যাদুর পৃষ্ঠপোষক রূপে আইসিসের উপাসনা করা হত। দাস, কারীগর, পাপী-তাপী জন থেকে আরম্ভ করে ধনবান, অভিজাত, শাসনকর্তা, কুমারী নারী- সবার প্রার্থনাই আইসিস শুনতেন।
লিখিত ভাবে আইসিসের উপাসনার উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ এর অল্প কিছু কাল পরেই, পঞ্চম রাজবংশের সময়ে। সূচনার দিকে, মিশরীয় পুরাণ অনুসারে আইসিস হলেন নুট ও গেবের প্রথমা কন্যা, হোরাসের মা। কালের প্রবাহে হাথরের কিছু বৈশিষ্ট্যও আইসিসের মধ্যে আসতে দেখা যায়। পরের দিকে দেখা যায়, আইসিসের একজন ভাইও রয়েছেন, ওসাইরিস, যিনি পরে তাঁর স্বামী হন এবং তারা জন্ম দেন তাদের সন্তান হোরাস কে। ওসাইরিসের পূনর্জাগরণের ঘটনায় আইসিসের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। অপর এক দেবতা, সেতের এর হাতে ওসাইরিসের মৃত্যু হয়। আইসিস নিজের যাদু ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সেই মৃতদেহের সমস্ত বিচ্ছিন্ন অংশ গুলো জড়ো করেন এবং তাতে প্রাণ সঞ্চালন করেন। পরবর্তীতে পুরাণের এই ঘটনা মিশরীয়দের ধর্মবিশ্বাসের উপর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।
আইসিসের অন্যান্য পরিচয়ের মধ্যে রয়েছে সারল্যের দেবী, মৃতদের রক্ষাকারিনী, শিশুদের দেবী যার থেকে সবকিছুর আরম্ভ হয়, রুটি, পানীয় এবং সবুজ ক্ষেতের দেবী। পরের দিকে মিশরীয় পুরাণে এই বিশ্বাস দেখা যায় যে, স্বামী ওসাইরিসকে হারানোর শোকে ক্রন্দরতা আইসিসের অশ্রূ থেকেই নীল নদ প্লাবিত হয়। প্রতি বছর ওসাইরিসের মৃত্যু এবং পুনর্জাগরণকে বিভিন্ন রকম আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হত। মিশর ছাড়িয়ে আইসিসের উপাসনা ছড়িয়ে পড়েছিল গ্রিক-রোমান বিশ্বেও। খ্রিস্টিয় মতবাদের প্রচার আরম্ভ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আইসিসের উপাসনা চালু ছিল সে সব অঞ্চলে।
তেহরানের জাস্টিশিয়া ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সুপ্রিম কোর্ট কে کاخِ دادگستریِ تهران (Kakh Dadgostari Tehran) বলা হয়। ইংরেজিতে Court house of Tehran. কোর্ট হাউসের সামনের অংশের বাম পাশের দেয়ালে রয়েছে জাস্টিশিয়ার মূর্তি। একই সাথে মোট ছয়টি মূর্তির একটি প্যাকেজ। যেখানে একজন নারী ও একজন শিশু রয়েছে।
তুরস্কের জাতীয় সংস্কৃতির ধারক রূপে আংকারেতে ইন্ডিপেন্ডেন্স টাওয়ারের পাদদেশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে তিন নারী মূর্তি। এই তিন নারী মূর্তিই তুরস্কের নারীদের প্রতীক রূপে দাঁড়িয়ে আছে। তিন নারী মূর্তির মধ্যে সামনে দুইজন, যাদের এক হাতে একটি বিশাল জয়মাল্য আর অন্য হাত তুলে আতাতুর্কের জন্য প্রার্থনা করছেন। মাঝের নারী মূর্তি হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কাঁদছেন। এই ভাস্কর্যটি ১৯৫৩ সালে স্থাপন করা হয়।
তুরস্ক জুড়ে এমন আছে আরো অনেক ভাস্কর্য। যেমন; আন্তালিয়ায় এডুকেশন এক্টেভিস্ট তুরকান সায়লানের ভাস্কর্য। এছাড়াও; আছে ভেনাস স্টেটিউট, ওয়ার্কার এন্ড সন নামে আরো অনেক ভাস্কর্য। এই সব ভাস্কর্যগুলো তুরস্কের ঐতিহ্যের গর্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেক দিন ধরে।
তথ্যসূত্র; (মূর্তি ভাঙ্গা মূর্তি গড়া; লেখক বলন কাঁইজি)।
বহিঃসংযোগ (External links)
1. BLOG – www.blue-gum.net.
2. Answers.com.
তথ্যসূত্র (References)
(Theology's number formula of omniscient theologian lordship Bolon)
১ মূলক সংখ্যা সূত্র (Radical number formula) "আত্মদর্শনের বিষয়বস্তুর পরিমাণ দ্বারা নতুন মূলক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়।"
রূপক সংখ্যা সূত্র (Metaphors number formula)
২ যোজক সূত্র (Adder formula) "শ্বরবিজ্ঞানে ভিন্ন ভিন্ন মূলক সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন যোজক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, গণিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায় না।"
৩ গুণক সূত্র (Multiplier formula) "শ্বরবিজ্ঞানে এক বা একাধিক মূলক-সংখ্যার গুণফল দ্বারা নতুন গুণক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৪ স্থাপক সূত্র (Installer formula) "শ্বরবিজ্ঞানে; এক বা একাধিক মূলক সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে স্থাপন করে নতুন স্থাপক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৫ শূন্যক সূত্র (Zero formula) "শ্বরবিজ্ঞানে মূলক সংখ্যার ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন শূন্যক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
< উৎস [] উচ্চারণ ও ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত () ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত > থেকে √ ধাতু => দ্রষ্টব্য পদান্তর :-) লিঙ্গান্তর অতএব × গুণ + যোগ - বিয়োগ ÷ ভাগ
- A great 70% flat rate for your items.
- Fast response/approval times. Many sites take weeks to process a theme or template. And if it gets rejected, there is another iteration. We have aliminated this, and made the process very fast. It only takes up to 72 hours for a template/theme to get reviewed.
- We are not an exclusive marketplace. This means that you can sell your items on PrepBootstrap, as well as on any other marketplate, and thus increase your earning potential.