৭৪/৩. পরপার
Venturous (ভেন্চারাস)/ ‘مغامر’ (মুগাম্মির)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘মুমুর্ষুতা’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘মুমুর্ষুতা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘নিদান’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘ভগ্নদশা’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘গতায়ু’।

অভিধা (Appellation)
পরপার (বাপৌছ)বি কঠিনপার, বিপদসংকুল পার, পরম কঠিন যে পার, venturous, ‘مغامر’ (মুগাম্মির) (শ্ববি) নিদান, মুমুর্ষুকাল, মরণাপন্ন সময়, dying, ‘انتهاء’ (ইন্তেহা), মৃত্যুকাল প্রায় আসন্ন এমন, ডাইং স্টেট (dying state), হালাতিল ইহতিদার (আ.ﺤﺎﻟﺔ ﺍﻻﺤﺘﺿﺎﺮ) ক্রিবিণ কামের সময়ে, গমনের সময়ে, মিলনের সময়ে, সঙ্গমের সময়ে, পারের বেলা, সাঁই ভজনের বেলা (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘মুমুর্ষুতা’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; পরম কঠিন পারাপারকে পরপার বলা হয় ২. শুক্র নিয়ন্ত্রণ করে বৈতরণী অতিক্রম করাকে পরপার বলা হয় (বাপৌছ) পরপার (বাপৌচা) গতায়ু (বাপৌউ) ভগ্নদশা (বাপৌরূ) নিদান (বাপৌমূ) মুমুর্ষুতা {বাং.পরম+ বাং.পার = পরম্পার> পরপার}

পরপারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of venturous)
১.   “গুরুরূপ যার অন্তরে, অধর-সাঁই তারাই ধরে, যায়রে তারা পরপারে, নিদানের কঠিন ত্রিবেণে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৫২)।
২.   “পরপারের করিলে আশ, সাধু সঙ্গ কর নিবাস, বলন কয় হাজার মাস, বসে থাক প্রেমতলায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০৭)।
৩.   “পরপারের সম্বল বিনে, ঠেকবি গণনার দিনে, কী হবে ছাই ধন স্বজনে, সকলি থাকবে পড়ি।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৭৭)।
৪.   “ভবের কড়ি ঢের যোগালী, পকেট ভরলি গোপনে, পরপারের কড়ির কথা, একবার ভাবছনি মনে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২২১)।
৫.   “যেজন পড়ে আশিক্বি নামাজ, পূর্ণ হয় তার পরপারের কাজ, লালন করে শৃগালের কাজ, দিয়ে সিংহের দায়।” (পবিত্র লালন- ৫৬০/৪)।
৬.   “হলে সাঁই কাঁই সন্ধান করা, মানবকর্মের হয়রে সারা, পরপারে যায় সাধু ঋষিরা, বলন কাঁইজি কয় ভুবনে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৬৭)।

পরপারের সংজ্ঞা (Definition of venturous)
সাধারণত; পরম কঠিন পারাপারকে পরপার বলে।

পরপারের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of venturous)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; শুক্র নিয়ন্ত্রণ করে বৈতরণী অতিক্রম করাকে পরপার বলে।

পরপারের প্রকারভেদ (Variations of venturous)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; পরপার দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান পরপার ও ২. উপমিত পরপার।

১. উপমান পরপার (Analogical venturous)
সাধারণত; পরম কঠিন পারাপারকে উপমান পরপার বলে।

২. উপমিত পরপার (Compared venturous)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; শুক্র নিয়ন্ত্রণ করে বৈতরণী অতিক্রম করাকে উপমিত পরপার বলে।

পরপারের পরিচয় (Identity of venturous)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘মুমূর্ষতা’ পরিবারের অধীন ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ। সাধারণত; অত্যন্ত কঠিন পারাপারকে পরপার বলা হয়। তবে; শ্বরবিজ্ঞানে; শুক্ররুদ্ধ বৈতরণী অতিক্রম করাকে পরপার বলা হয়। কারণ; সাধকের জন্য এর চেয়ে কঠিন আর কোনো পারাপার নেই। ঊর্ধ্বরেতা হওয়া বা অটলত্বলাভ করা প্রত্যেক সাধকের সর্বপ্রথম সাধন। সেজন্য; সাধক মাত্রই শুক্র নিয়ন্ত্রণরূপ বিপদসংকুল পার বা পরপারের সম্মুখীন হয়।

কিন্তু বড় আশ্চর্যের বিষয় হলো বাংভারতের সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, লেখক, গবেষক, অনুবাদক ও অভিধানবিদরা শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত পরপার পরিভাষাটির দ্বারা কেবল পরকালকেই বুঝেন ও বুঝিয়ে থাকেন। এ কারণে; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকরা চিরদিনই প্রকৃত আত্মতত্ত্ব বা আত্মদর্শন হতে চির বঞ্চিত। যেমন; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকরা রূপক ও ব্যাপক পরিভাষাগুলোর প্রকৃত অর্থও জানে না; তেমনই; উক্ত পরিভাষার ‘বাঙালী পৌরাণিক প্রকৃত মূলক সত্তা’ও জানে না। অন্যদিকে; যেমন; আত্মজ্ঞানী মনীষীগণ ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’র উপমিত (বাস্তব) অর্থও জানেন; তেমনই; উপমান (প্রতীকী) অর্থও জানেন। জানা ও না জানা হতে বিশ্ববাসী সর্বদা দুই মেরুতে বিভক্ত। একদল সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক। অন্যদল; বাস্তববাদী বা আত্মজ্ঞানী। আত্মজ্ঞানীদের এদেরকে মরমীবাদী বলা হয়।

পরিশেষে বলা যায়; সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মতবাদে বিশ্বাসী জ্ঞানান্ধ সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকদের কোনো বিষয়বস্তুর সঠিক তত্ত্বভেদ না জেনে ও বুঝেই মরমী ও আত্মজ্ঞানী মনীষীদের ধর্মচ্যুত, ধর্মহীন, নাস্তিক ও বিধর্মী এমন ভাষায় প্রায় গালাগালি করতে দেখা যায়। আত্মদর্শন জ্ঞানহীন সাম্প্রদায়িকরা কেবল তাদের দলবলের শক্তির কারণেই এমন করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে তারা চরম ও পরম ভাবেই জ্ঞানান্ধ। আলোচনার শেষপ্রান্তে উপনীত হয়ে বলা যায় যে; কেবল বৈতরণী পারাপাররূপ পরপার ব্যতীত অন্য কোথাও ভিন্ন কোনো পরপারের অস্তিত্ব নেই।