২৭/০৪. পাতাল
Hades (হেডেস)/ ‘هاوية’ (হাবিয়া)
ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘জরায়ু’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘জরায়ু’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘নিধুয়া’। এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘কুঞ্জ, ঢাকা, ফুল২ ও স্বর্গপুর’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘অম্বর, আকাশ, বৈকুণ্ঠ ও মিথিলা’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘কাশী, দেবধাম, ব্রজধাম, মথুরা ও স্বর্গধাম’। এ পরিভাষাটি শ্বরবিজ্ঞানের ‘পাছধড়’, ‘জরায়ু’ ও ‘বৈতরণী’ ইত্যাদি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’তে বর্ণিত ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’র ব্যাপক পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়।
সংস্কৃত, বাংলা, গ্রিক ও আরবীয় নরক পরিভাষার সুসামঞ্জস্য (Adjustment of Sanskrit, Bengali, Greek and Arabian gehenna terminology)
ক্র | সংস্কৃত | বাংলা | গ্রিক | আরবীয় | মূলক |
০. | নরক | নিরয় | Gehenna (গেহেনা) | ‘جهنم’ (জাহান্নাম) | অশান্তি |
৩. | পাতাল | Hades (হেডেস) | ‘هاوية’ (হাবিয়া) | জরায়ু |
অভিধা (Appellation)
পাতাল (বাপৌউ)বি ভূগর্ভ, মর্ত্যধাম, মর্ত্যভূমি, মর্ত্যলোক, নরককুণ্ড, নরকবাস, নরকলোক, নিম্নলোক, সর্পলোক, নাগলোক, ভূমির সর্বনিম্নতল, hades, ‘هاوية’ (হাবিয়া) (আল) নরক, নিরয় (প্র) ১. বাঙালী পুরাণ মতে; রূপকথার একটি নরক বিশেষ ২. বাঙালী পুরাণ অনুসারে; স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল- ত্রিভুবনের সর্বনিম্নস্থ ভুবন ৩. বাঙালী পুরাণে বর্ণিত; অতল, বিতল, তলাতল, সুতল, রসাতল, পাতাল ও মহাতল- এ সপ্ততলের ষষ্ঠতম তলবিশেষ ৪. বাঙালী পুরাণ মতে; অবীচি, কল্মষ, পাতাল, পুত, ভূলোক, মর্ত্য ও রৌরব- এ সপ্তনরকের একটি (ব্য্য) শুক্রপাত সদৃশ মৃত্যু দ্বারা মানুষকে জরায়ুর মধ্যে সন্তান রূপে প্রায় ৩০৯ দিন বন্দী রেখে পূর্ব স্মৃতি বিস্মৃত করে ও চামড়া পরিবর্তন করে সন্তান রূপে মুক্তি দেওয়া হয় বলে শ্বরবিজ্ঞানে জরায়ুকে পাতাল সদৃশ নরক বলা হয়। অন্যদিকে; জরায়ুকে স্বর্গও বলা হয় (শ্ববি) জরায়ু, গর্ভাশয়, uterus, ‘الرحم’ (আররেহেম) (রূপ্রশ) কাশী, ঢাকা, নিধুয়া, মথুরা, বৈকুণ্ঠ, মূলাধার, স্বর্গ, স্বাধিষ্ঠান (ইংপ) heaven, paradise (ফাপ) বেহেস্ত (ফা.ﺒﻬﺷﺖ) (ইপ) জান্নাত (আ.ﺠﻨﺎﺖ), আরশ (আ.ﻋﺭﺶ), ক্বলব (আ.ﻗﻟﺐ), মদিনা (আ.ﻤﺪﻴﻧﻪ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘জরায়ু’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; বাঙালী পুরাণ মতে; পৃথিবীর ষষ্ঠতম তলকে পাতাল বলা হয় ২. বাঙালী পুরাণ মতে; রূপকথার একটি নরককে পাতাল বলা হয় ৩. বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে, ঋতুমতীর জরায়ুকে রূপকার্থে পাতাল বলা হয় (বাপৌছ) কাশী, দেবধাম, ব্রজধাম, মথুরা ও স্বর্গধাম (বাপৌচা) অম্বর, আকাশ, বৈকুণ্ঠ ও মিথিলা (বাপৌউ) কুঞ্জ, ঢাকা, পাতাল, ফুল২ ও স্বর্গপুর (বাপৌরূ) নিধুয়া (বাপৌমূ) জরায়ু।
পাতালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some important quotations of hades)
১. “আকাশে হয় ভাটা জোয়ার, কূল ভাঙ্গে পাতালে তার, ঢাকানগরের অবাক ব্যাপার, টার্মিনাল মহাখালে।” (বলন তত্ত্বাবলী)। (মুখ; “কাঁই কাঁইরে মজার খাল কেটেছে ভারি কৌশলে, একবিন্দু জল নাইরে খালে, কাপড় ভিজে ঝাঁপ দিলে”)।
————————————————————————————–
১. “ঊনকোটি দেবতা, সঙ্গে আছে গাঁথা, ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব নারায়ণ জয় জয় জয়, সে চাঁদ পাতালে– উদয় ভূমণ্ডলে, মহিন্দ্রযোগে সে চাঁদ দেখা যায়।” (পবিত্র লালন- ৯৯৬/২)। (মুখ; “হীরা কাঞ্চন জহরত কোটিময়”)।
২. “পাতালে চোরের বহর, দেখায় আকাশের ওপর, তিন তারে হচ্ছে খবর, শুভাশুভ যোগ মতে।” (পবিত্র লালন- ৫৬৬/২)। (মুখ; “ধরো চোর হাওয়ার ঘরে …….”)।
৩. “মহাভূতের বাসভবন- পাহারা দেয় তিন’জন, বন্দুক কাঁন্ধে করি- বলন কয় গুরুর ঘর- আশিজনের কাঁধের ’পর, সে থাকে পাতালপুরী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৯৭)। (মুখ; “গুরু তুমি ভূতের ব্যাপারী আজকে দিব, ভুতঝাড়ি, ডাইনে বামে যতই ঘুরো উত্তর দাও সত্য করি”)।
৪. “শূন্যের ওপর শয্যা করে, পাতালপুরে শরণ দেয়, অরসিক বেড়ায় ঘুরে, ঘোর ধাঁধায়।” (পবিত্র লালন- ৮৫৯/২)। (মুখ; “রসের রসিক না হলে”)।
৫. “সপ্ততল পাতালের তলে, মূল রয়েছে অতি গোপনে, মূল-মানুষ স্থলে রেখে, কী ধন খুঁজ বনে বনে।” (পবিত্র লালন- ৩১৬/৪)। (মুখ; “কী সন্ধানে যাই সেখানে মনের-মানুষ যেখানে, আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি, দিবারাতি নাই সেখানে”)।
৬. “সাঁই আকাশে ঠিকানা দিয়া, বাস করে পাতালে গিয়া, যত রাখ মোহ দিয়া, হারা হবি তার নাগাল।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২২০)। (মুখ; “কার মায়ায় মজিলিরে অবোধ মন বাঙাল, মায়ারশি টেনে ছিঁড়ে প্রাণ অজানায় দিবে উড়াল”)।
৭. “সে আকাশে ঠিকানা দিয়ে, ঠাঁই নিয়েছে পাতালে গিয়ে, উত্তর কী দক্ষিণ বায়ে, কৃষ্ণকালা ভবের ব্রজ্যা।” (বলন তত্ত্বাবলী)। (মুখ; “যার ভাবে এ কোপনি মজা, শ্বেত বসনে সাধু সাজা, জাতি কুল সব ত্যাজিয়ে, সেজেছে সে পথের রাজা”)।
৮. “স্বর্গ-মর্ত্য পাতাল জুড়া তিন ভূতের করাল থাবা, সেথা পঞ্চভূতে করছে খেলা ফাঁক দিলে গোল খাবা।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২২৬)।
পাতালের কয়েকটি সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of hades)
১. “আকাশ ভূমি বিশ্বব্যাপী একটি শশী দেখা যায়, সপ্ততল পাতালে দেখ দুটি চন্দ্র শোভা পায়, একটি চন্দ্র দেখে সবে, দুটি মেঘের আড়ালে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১২৮)।
২. “আকাশে মই লাগিলে উড়ে পাতালে যায় বাতাসে, সাদা কালো দুটি চন্দ্র তার হাতে আসে অনায়াসে, পায় না চাঁদ অস্ত গেলে, পাহাড় সাগর খগোলে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১২৮)।
৩. “আত্মতত্ত্বে পড়েছে যার নজর, পাতালে পায় আসমানি খবর, আপন ঘর ভুলে- লালন ভেড়ে, কেন দেশ-বিদেশে ধায়।” (পবিত্র লালন- ৪৩৬/৪)।
৪. “একদিন যার ধেনু হরে, নিলেন ব্রহ্মা পাতালপুরে, ব্রহ্মা দোষী হয়- সবাই জানতে পায়, তুমি জানো না বৃন্দাবনে।” (পবিত্র লালন- ৪২১/৩)।
৫. “ওরে পাঁচশত বছরে ঝরে পাতালে মেঘের বারি, ধরো তারে কৌশল করে হাজার বছর পাঞ্জালড়ি, বলনের বচন হলে মরণ, পড়বি চুরাশি ফেরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৫)।
৬. “গয়া কাশী বৃন্দাবনে- উদয় হয়রে কত নামে, যে যায় মক্কা মদিনে- নিতে তারই চরণধুলা- সপ্ততল পাতালে গিয়ে- লুকায় সেথা নীর হয়ে, বাতাস রূপে দ্বিদ্বারে- চালায় তার অবলীলা।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১১)।
৭. “গহীন পাতালে লীলাপুরী, ত্রিকারায় তিন প্রহরী, মণিপুর যোনিপুর ঘুরি, যেতে নাহি দেয় মদনে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৮৪)।
৮. “গুরু গো পাতালেতে ঘর গড়িয়া তুমি থাক আকাশে, আবার মাটির ঘরে আমায় রেখে তুমি ঘুর বাতাসে, একদিন আর খোঁজ নিলে না, শিষ্য কোথায় রয়েছে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৭১)।
৯. “জল বয়িবে রক্তিমা রঙ- পাতালে উড়িবে নিশান, অনর্গল গুলি বরষণ- করিবে এক জলযান- অগ্নিকন্যা আসবে ছুটে- জীবকুল পড়বে লুটে, ভূপাতিত হবে তাপের চোটে, বিশ্বে বয়িবে অগ্নিবান।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৪৬)।
১০. “তিন তিনটি চন্দ্র উদয় আকাশ ভূমি পাতালে, পশ্চিমে সূর্য উদয় হয়গো ভরা সন্ধ্যাকালে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১২৮)।
১১. “তেড়ে আসবে অগ্নিবালা- ছুড়িবে আগুনের গোলা, পাতালগামী কলের নালা- তল ছাড়া কত গহীন- লাখে লাখে নগরবাসী- আপন গলে পরবে ফাঁসি, আপনি মরবে জলে ভাসি-কত জগৎ হবে বিলীন।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৪৮)।
১২. “দক্ষিণা বাতাসের পরে, ঐ মহাযোগ ভরা জোয়ারে, সাধিবে তিন যুগ ধরে, বলন কয় নিরালায়, সপ্ততল পাতাল হতে, ভেঁসে উঠবে দয়াল সাঁই।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৭)।
১৩. “দালানকোঠা ঘরবাড়ি- যাবে সব ধ্বসিয়া পড়ি, দিবে পশুপক্ষী গড়াগড়ি- রবে না কারো চিন- লাখে লাখে পাতালভেদী– দাঁড়াবে বিচার লাগি, বলন কয় মুক্তি পাবে- কর্মবাদী সাধুকুলিন।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৪৮)।
১৪. “পাতালের চাঁদ উদয় আকাশে, তিনদিন রয় সাধনপুরে, দ্বিখণ্ড হয় অনায়াশে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৮১)।
১৫. “পাতালে সাঁই রূপের বাহার, স্বরূপেতে রয় স্বর্গের ওপর, বলন কয় কী মনোহর, জীবনে যেজন হেরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৮৬)।
১৬. “ফাল্গুন মাসের তিন তারিখ শনিবার যেদিন, ধাতব-পাখি হানবে আঘাত করিবে জনহীন, পাতালভেদী কত মানুষ- কর্মদায়ে রবে বেহুঁশ, কাঁধে লয়ে আপনার দোষ পূর্বেতে করবে ধিয়ান।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৪৭)।১৭. “মন আপন বশে, মদনরসে আপনি মিশে, বেড়াই হায়রে, লালন বাক্য ছেড়ে- গলা নেড়ে, গোলে পড়ে পাতালপুরে।” (পবিত্র লালন- ৭৫৩/৪)।
১৮. “মূল শাখা ডাল আকাশে গাছের ফল ধরে পাতালে, গুরু কৃপায় কারো ভাগ্যে সেই তাজা ফলটি মিলে, উল্টোবৃক্ষে ফল পাকিলে- গুরু খাইয়া শিষ্যে দিলে, মরার আগে মরিলে- যমদুত ভয়ে পালায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৬)।
১৯. “যেমন সবাই বলে দেহের সূর্য আকাশে নিয়া, তেমন আকাশের সাঁই ধরা পড়ে পাতালে গিয়া, বলন কয় খুঁজ সদাই, সাঁই ঘুরে নাকের কাছে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৪৯)।
২০. “যোগমায়া যারে বলি, শূন্যে যোগ পাতালে তলি, লালন কয় স্মরণ নিলি, যায় স্বদেশে।” (পবিত্র লালন- ৯৬/৩)।
২১. “রাখালের উচ্ছিষ্ট খায়, একদিন ব্রহ্মা দেখতে পায়, তাইতো; রুষ্ট হয়ে ভারী- না চেনে হরি, ধেনুবৎস হরে লয়ে যায় পাতালে।” (পবিত্র লালন- ২০৯/২)।
২২. “শুভ নিশিতে গুরুর সাথে যার হইয়াছে মিলন, সপ্ততল পাতালে পায় সে রূপ অমূল্য রতন, গুরুর বাড়ি শিষ্যের বাড়ি, এক ঘরে রয় দুইধনী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৮২)।
২৩. “সপ্ততল পাতালে ঘর, চাবি রাখা আকাশের পর, খুলে ঘর দিনে দু’বার, অরসিক পায় চোরের হানা।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০৪)।
২৪. “সপ্ততল পাতালের ভানু উদয় হলো গগণে, শুভলগ্ন হারাইলে বান্ধব পাবে না জীবনে, মনের-মানুষ দোল দিয়ে যায়, হায়রে উত্তরা বাতাসে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৫১)।
২৫. “সপ্ততল পাতালে যে রূপভরা স্বরূপ কারা, ঐ অচিনপুরে বসত করে গুরু সাঁই বিষ্ণু বরা, উত্তরা বায় গেলে সেথায়, যায় সহজে সাঁই ধরা।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৫)।
২৬. “সপ্ততল পাতালে সাঁই নীরাকার ডিম্ব ছিল, আকাশের তাপ লইয়া সে আত্মপ্রকাশ করিল, কত শত জীবন খাইয়া- নিজকে গুপ্ত রাখিয়া, কী চমৎকার নাম ফুটাইল দয়াবান।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৯)।
২৭. “সহি হলে হাজার সন, পাতালেতে হয় বরিষণ, ভেবে কয় কাঙাল বলন, সেই হলো সাঁই ভজন।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৪৪)।
২৮. “সাঁই নীরাকারে বুলি বলে, থেকে সপ্ততল পাতালে, বলন কাঁইজি ভাবিয়া বলে, ঐ ঠিকানা বায়ুর ঘরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৪৭)।
২৯. “সিজদা করেছে সেতো, স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল জুড়া, কোন জায়গা সে বাদ রেখেছে, দেখ রে তোরা।” (পবিত্র লালন- ১৯০/২)।
৩০. “স্বরূপ রূপে রূপের কিরণ, স্বর্গ মর্ত্য পাতাল ভুবন, সিরাজ সাঁইজি কয়রে লালন, দেখ নয়ন খুলে।” (পবিত্র লালন- ৯৭৫/৪)।
৩১. “হলে বায়ুর সঠিক নির্নয়, পাতালেতে হয় সাঁই উদয়, বলন কয় দেখে সদাই, সুরসিক সুজন সন্ধানী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৮০)।
সাধারণ পাতাল অর্থে ‘পাতাল’ পরিভাষাটির ব্যবহার(Using the terminology hades sense for hades)
“ডুবে দেখ দেখি মন, কিরূপ লীলাময়, যারে আকাশে পাতালে খুঁজি, এ দেহে সে রয়।” (পবিত্র লালন- ৪৮০/১)।
পাছধড় অর্থে ‘পাতাল’ পরিভাষাটির ব্যবহার(Using the terminology hades sense for end torso)
১. “আকাশ-পাতাল মিলে দেহরতী, উপাসনায় চাই সে মোতি, যদি চেতনগুরু পাই- তারে শুধাই, লালন বলে ঘুচাই মনের দিশে।” (পবিত্র লালন- ৩৬১/৪)।
২. “দেহের আকাশ দেহের পাতাল, নিরূপণ করতে হইওনা বেতাল, ধর্মকর্ম ও ধার্মিকের আল, করতে হয় লঙ্ঘনা।” (পবিত্র লালন- ৭৭৯/৩)। (মুখ; “মানবদেহ ঠিক করে করো সাধনা, নইলে পরে পড়বি ফেরে, কাঁদলে আর সারবে না”)।
বৈতরণী অর্থে ‘পাতাল’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology hades sense for styx)
১. “আকাশে আখেটি করতে পাশ পাতে পাতালে, বাতাসে কৌশল করিয়া বসিয়া রহে জলে, প্রেমের রশি লাগায়- বাঁন্ধিয়া রাখে কারায়, যদি ধরা পড়ে হায়, মুক্তি পাবার সাধ্য নাই।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৬০)।
২. “গঙ্গা যমুনা আর সরস্বতী নদী, ওঠেছে ঢেউ পাতালভেদী, পার হয়ে যাও, অকূল সমুদ্দরি।” (পবিত্র লালন- ৭৭৪/২)।
৩. “ধন্যরে আশিক্বজনা এ দিন দুনিয়ায়, আশিক্ব জোরে গগনের চাঁদ পাতালে নামায়।” (পবিত্র লালন- ৫৬০/১)।
পতনমুখী অর্থে ‘পাতাল’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology hades sense for stumble)
১. “অধঃপাতী প্রেমতরণী, তিনদিনেতে পাতালগামী, কাঁন্দি বসে দিনরজনী, এখন চোখেতে দেখি না।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১০০)।
২. “বাহার তো গেছে চলে, পথে যাও ঠ্যালা পেলে, কোন দিন পাতাল ধাবা, তবু তোমার গেল না, তেড়া চলন বদলোভা।” (পবিত্র লালন- ৭৫১/২)। (মুখ; “মন সহজে কী সহিহ হবা, চিরদিন ইচ্ছেমত আইল ডেঙ্গিয়ে ঘাস খাবা, গাদার ’পর মুগুর পড়লে, সে দিনেগা টের পাবা”)।
৩. “বেতালা বাউল বাতাসে, পাতালগামী হয় নিমিশে, কেমনে যাই বন্ধুর দেশে, কেমনে হবো মধুকর।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৩১)। (মুখ; “মণিপুরী প্রেমতরী, কোন দিন হবে ক্ষীরধর, প্রেমযমুনার ত্রিমোহনায়, শ্যামবন্ধুর ঘর”)।
৪. “ভবকূপেতে আমি, ডুবে হলাম পাতালগামী, অপারের কাণ্ডারী তুমি, লও কিনারে।” (পবিত্র লালন- ৬২৬/৩)। (মুখ; “পার করো দয়াল আমায় কেশে ধরে, পড়েছি এবার আমি ঘোর সাগরে”)।
৫. “মনের মত মন পেলাম না, কিরূপে আজ করি সাধনা, লালন বলে আমি- হলাম পাতালগামী, কী করতে এসে গেলাম কী করে।” (পবিত্র লালন- ৭৪৪/৪)। (মুখ; “মন বিবাগী বাগ মানে না রে, যাতে অপমৃত্যু হয় তাই সদাই করে”)।
পাতালের সংজ্ঞা (Definition of hades)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; পৃথিবীর ষষ্ঠতম তলকে পাতাল বলে।
পাতালের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of hades)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; স্ত্রী জননতন্ত্রের সন্তান ধারণ ও লালনপালনে নিয়োজিত অন্ত্রকে জরায়ু বা রূপকার্থে পাতাল বলে।
পাতালের প্রকারভেদ (Variations of hades)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; পাতাল দুই প্রকার। যথা; ১.উপমান পাতাল ও ২.উপমিত পাতাল।
১. উপমান পাতাল (Analogical hades)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; পৃথিবীর ষষ্ঠতম তলকে উপমান পাতাল বলে।
২. উপমিত পাতাল (Compared hades)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; ঋতুমতীর জরায়ুকে উপমিত পাতাল বলে।
পৌরাণিক আকাশ–ভূমি সূত্র (Mythological sky-land formula)
সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার শ্বরবিজ্ঞান, পুরাণ, মরমী গীতি এবং সাম্প্রদায়িক-পারম্পরিক শাস্ত্রীয় পুস্তক-পুস্তিকায় আকাশ–ভূমি, আকাশ–পাতাল ও দ্যুলোক–ভূলোক ইত্যাদি পরিভাষার অসংখ্য ব্যবহার দেখা যায়। আর সাধারণত সাম্প্রদায়িক-পারম্পরিক ঠাক-পুরুৎ, মোল্লা-মুন্সি, প্রেমিক, অনুসারী, অনুরাগী, পাঠক, শ্রোতা, বক্তা, ওয়ায়েজিন, আলোচক, পালাগান গায়ক, বৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা উক্ত আকাশ–ভূমি, আকাশ–পাতাল ও দ্যুলোক–ভূলোক ইত্যাদি পরিভাষা দ্বারা কেবল নভমণ্ডল ও ভূমণ্ডলকে বুঝে ও বুঝিয়ে থাকে। কিন্তু পৌরাণিক বিশ্বে আকাশ ও দ্যুলোক পরিভাষা দ্বারা কখনই কেবল নভমণ্ডলকে যে বুঝানো হয় না; বরং আগধড়, আত্মা, আলো, গুরু, জরায়ু, জ্ঞান, দ্যুলোক, নাভির ঊর্ধ্বাংশ, পুরুষ, বৈকুণ্ঠ, পিতা ও সুস্থতা বুঝানো হয়। অনুরূপভাবে; পৌরাণিক বিশ্বে ভূমি ও পাতাল পরিভাষা দ্বারা কখনই কেবল ভূমণ্ডলকে যে বুঝানো হয় না; বরং ক্ষেত্রবিশেষে অন্ধকার, অসুস্থতা, দেহ, জননপথ, নাভির নিম্নাংশ, নারী, পাছধড়, পুত্র, বৈতরণী, ভূলোক মন ও শিষ্য ইত্যাদি বুঝানো হয়। বিষয়টি তারা জানেও না বুঝেও না। আর না বুঝার কারণেই সাম্প্রদায়িক-পারম্পরিক অঙ্গনে এত জাতিভেদ ও দলাদলি। আবার; একই সম্প্রদায়ের মধ্যে অসংখ্য শাখা-প্রশাখা ও দল উপদল। আর যুগে যুগে সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকরাই রাজনৈতিক বলির পাঁঠা। তাই; সাম্প্রদায়িক-পারম্পরিকদের উদ্দেশ্যে নিচে বিষয়টি সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হলো।
পৌরাণিক আকাশ–ভূমি সূত্র (Mythological sky-land formula)“কোনো প্রবল শক্তিশালী সত্ত্বাকে আকাশ ধরতে হলে অবশ্যই সমগোত্রীয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল সত্ত্বাকে পাতাল ধরতে হবে।” (“Any strong entity is catch up the sky; Of course equivalent relatively weak entity will be catch the subway”)
পৌরাণিক আকাশ–ভূমি সূত্রের সংজ্ঞা (Definition of mythological sky-land formula)
পৌরাণিক কাহিনী নির্মাণের সময়ে মানুষে বিদ্যমান প্রবল কোনো সত্তাকে আকাশ ধরা ও সমগোত্রীয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল সত্তাকে ভূমি ধরার নিয়মকে ‘পৌরাণিক আকাশ–ভূমি সূত্র’ বলে।
পৌরাণিক আকাশ-ভূমি সূত্রের প্রায় অনেক প্রেক্ষিত রয়েছে। তারমধ্যে; ১৫টি প্রেক্ষিত নিচে দেখানো হলো।
আকাশ (Sky) ভূমি (Land)
১. আগধড়কে আকাশ ধরতে হলে; পাছধড়কে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
২. আত্মাকে আকাশ ধরতে হলে; দেহকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৩. আলোকে আকাশ ধরতে হলে; অন্ধকারকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৪. গুরুকে আকাশ ধরতে হলে; শিষ্যকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৫. জরায়ুকে আকাশ ধরতে হলে; জননপথকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৬. জ্ঞানকে আকাশ ধরতে হলে; মনকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৭. নাভির ঊর্ধ্বাংশকে আকাশ ধরতে হলে; নাভির নিম্নাংশকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৮. পুরুষকে আকাশ ধরতে হলে; নারীকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
৯. বৈকুণ্ঠ আকাশ ধরতে হলে; বৈতরণীকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
১০. পিতাকে আকাশ ধরতে হলে; পুত্রকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
১১. ভৃগুকে আকাশ ধরতে হলে; ভগকে অবশ্যই পাতাল ধরতে হবে।
১২. সবলকে আকাশ ধরতে হলে; দুর্বলকে অবশ্যই পাতাল ধরতে হবে।
১৩. সাঁইকে আকাশ ধরতে হলে; রতীকে অবশ্যই পাতাল ধরতে হবে।
১৪. সুস্থতাকে আকাশ ধরতে হলে; অসুস্থতাকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
১৫. স্বর্গকে আকাশ ধরতে হলে; মর্ত্যকে অবশ্যই ভূমি ধরতে হবে।
অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো; শ্বরবিজ্ঞানের আকাশ ও পাতাল পুরোটাই কেবল বাক্যের ভাবের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মনীষী, বক্তা, বৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক শ্বরবিজ্ঞান, পুরাণ মরমী-বাণী ও বিভিন্ন পুস্তক-পুস্তিকার মধ্যে আকাশ-পাতাল পরিভাষা দেখামাত্রই মানুষের মাথার ওপরে অবস্থিত মহাশূন্য ও ভূমির ষষ্ঠতম তল বুঝে এবং বুঝিয়ে থাকে। যেমন; এতে কোনো জ্ঞান অর্জিত হয় না; তেমনই; কোনো উপকারেও আসে না। আত্মদর্শনকে বলা হয় মহাদর্শন বা সর্বোচ্চ দর্শন (super philosophy)। যদি এ দর্শনকে কেউ জ্যোতির্বিদ্যা মনে করে; কিংবা মহাকাশ বিজ্ঞান মনে করে; তবে তার মতো নরাধম আর কেবা থাকতে পারে? এ সূত্রটি না জানার কারণে; সাম্প্রদায়িকরা যার যার শ্বরবিজ্ঞান, পুরাণ ও মরমী বাণীতে বর্ণিত আকাশ ও পাতালের অভিধা নির্ণয় করতে প্রায় ভুল করে। কাল্পনিক সৃষ্টিকর্তার কাল্পনিক মহিমা ও ভুয়োসি প্রশংসা করতে করতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। সঠিকভাবে শাস্ত্রীয় আকাশ-পাতাল হতে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। এখন কাল্পনিক ও নিরাকার সৃষ্টিকর্তার খপ্পর হতে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে।
পাতালের পরিচয় (Identity of hades)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘জরায়ু’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ। বাঙালী পুরাণ মতে; পৃথিবীর ষষ্ঠতম তলকে উপমান পাতাল বলা হয়। কিন্তু শ্বরবিজ্ঞানে; জরায়ু, পাছধড়, নারী, মর্ত্য, শিষ্য, মন, দেহ, বৈতরণী, ভগ, রতী ও দুর্বল ইত্যাদিকে পাতাল বলা হয়। তবে; এখানে; কেবল জরায়ুকেই পাতাল বলা হয়েছে। উল্লেখ্য যে; বলন কাঁইজির একটি পৌরাণিক সূত্রের দ্বারা ইচ্ছেমতো আকাশ-পাতাল নির্ধারণ করা যায়। আরো স্মরণীয় যে; পৌরাণিক আকাশ-পাতাল সূত্রকেই পৌরাণিক আকাশ-ভূমি সূত্র বলা হয়।
তথ্যসূত্র (References)
(Theology's number formula of omniscient theologian lordship Bolon)
১ মূলক সংখ্যা সূত্র (Radical number formula) "আত্মদর্শনের বিষয়বস্তুর পরিমাণ দ্বারা নতুন মূলক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়।"
রূপক সংখ্যা সূত্র (Metaphors number formula)
২ যোজক সূত্র (Adder formula) "শ্বরবিজ্ঞানে ভিন্ন ভিন্ন মূলক সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন যোজক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, গণিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায় না।"
৩ গুণক সূত্র (Multiplier formula) "শ্বরবিজ্ঞানে এক বা একাধিক মূলক-সংখ্যার গুণফল দ্বারা নতুন গুণক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৪ স্থাপক সূত্র (Installer formula) "শ্বরবিজ্ঞানে; এক বা একাধিক মূলক সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে স্থাপন করে নতুন স্থাপক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৫ শূন্যক সূত্র (Zero formula) "শ্বরবিজ্ঞানে মূলক সংখ্যার ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন শূন্যক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
< উৎস [] উচ্চারণ ও ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত () ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত > থেকে √ ধাতু => দ্রষ্টব্য পদান্তর :-) লিঙ্গান্তর অতএব × গুণ + যোগ - বিয়োগ ÷ ভাগ
- A great 70% flat rate for your items.
- Fast response/approval times. Many sites take weeks to process a theme or template. And if it gets rejected, there is another iteration. We have aliminated this, and made the process very fast. It only takes up to 72 hours for a template/theme to get reviewed.
- We are not an exclusive marketplace. This means that you can sell your items on PrepBootstrap, as well as on any other marketplate, and thus increase your earning potential.