বাংভারতের উরস আরবের বিবাহবার্ষিকী

বাংভারতের উরস আরবের বিবাহবার্ষিকী

উরস শরীফ/ উরস মোবারক

Marriage ceremony/ (عرس شريف)/

 (مراسم الزواج) (মারাসিমুঝ ঝাওয়াঝা)

ভূমিকা (Introduction)

উরস (عرس) আরবি পরিভাষা। এর নিজস্ব অর্থ আছে। এর আভিধানিক অর্থ বিবাহ। এর বহুবচন হয় আ’রাস’ ও ‘উরূসাত’ (اعراس وعروسات) [আল-মুনজিদ]। বর ও কনে উভয়কে আরবীতে ‘আরূস’ (عروس) বলা হয়। বাসর, প্রীতিভোজ, ওলীমাহ্ (وليمه – طعام – زفاف) কেও উরস বলা হয়। আরবি আরুস (عروس) অর্থ কনে। আর আরীস (عريس) অর্থ বর।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া কুরআনের আলোচনা করলেই জেল-জরিমানা

কিন্তু অসহায় বাঙালীরা উরুস বলতে সাধারণত কোনো পির, ফকির ও আওলিয়ার মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে উদযাপিত অনুষ্ঠানকে বুঝে ও বুঝিয়ে থাকে। তাই; বাংভারতর অনেক স্থানে পির, ফকির ও আওলিয়ার মৃত্যু দিবসকে উরস নামে পালন করা হয়। এখানে আরো স্মরণীয় যে; বর্তমান বাংলাদেশে কিছু কিছু বাঙালী সাধকের সমাধিতেও উরস করা হয়। যেমন; ডালচাল মিয়া (মাযার; চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের পূর্ব পার্শ্বস্থ ঢিবি হাসপাতাল সংলগ্ন); কোট পাগলা (মাযার; জুরাইন বাজার, শ্যামপুর, ঢাকা)। এছাড়াও; কদম শাহ, কদম ‍রসুল, কুত্তা শাহ, গোরু শাহ, কাউয়া শাহ, চ্যাংড়া শাহ, দেওয়ান বাগী, রাজারবাগী, আটরশি, সাতরশি, বারোরশি, নেংটা বাবা, চট পাগলা, কুত্তা পাগলা ও মরিয়ম বিবির মাযারেও উরস হয়।

আরবিতে আরুস (বর) আর আরীসের (কনে) মিলন সময়কে বলা হয় উরস (عرس)। অর্থাৎ; বিবাহের মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর প্রথম মিলনের দিনকে বলা হয় উরস (عرس)। উরুস বার্ষিকী অর্থ বিবাহ বার্ষিকী। যেখানে আরবদের বিবাহ দিন হচ্ছে উরুস; সেখানে বাংভারতীয় পির, ফকির, আওলিয়ার মৃত্যুর দিন হচ্ছে উরুস। শুনতে কেমন লাগে, কোথায় বিবাহ দিন আর কোথায় মৃত্যু দিন!

বাংভারতের উরসবাদীরা আরো বলে যে; আমাদের উরুস শব্দের অর্থ বুঝার জন্য জানতে হবে, আশেক আর মাশুকে। পির সাহেবের কিতাবের ভাষায় আশেক আর মাশুক হচ্ছে; যাকে অতিশয় ভালবাসে তাঁকে বলে মাশুক, আর যে ব্যক্তি অতিশয় ভালবাসে তাঁকে বলে আশেক। যারা মাওলা পাকের আশেক, তারা মাশুকের কাছে যা পাইতে চায়; তা পূর্ণ হয় মিলনে। আশেক মাশুকের মিলন উরুস। আশেক লোকালয় থেকে দেহত্যাগ করার পর পর্দার আড়ালে চলে যান। যেহেতু; তাহাদের মৃত্যু সাধরণ মৃত্যু নয়। তারা পর্দার আড়াল বা স্থানান্তরে চলে যান। এজন্য; তাদের সমাধিকে কবর বা গোর বলা উচিৎ নয় বরং মাযার বলতে হবে। অর্থাৎ; দর্শন বা প্রদক্ষিণের স্থান বলতে হবে। আর  তাদের মৃত্যু দিনকে মৃত্যু দিন না বলে মিলনের দিন বা উরুস বলতে হবে।[১]

কিন্তু হাস্যকর বিষয় হলো; ভারতীয় উপমহাদেশে সাধকগণের মৃত্যু দিবসকে উরস বলা হয়। আবার কুরান হাদিস দ্বারা এসবের প্রমাণ দেওয়ার দালালিও করা হয়। বিবাহ দিনকে মৃত্যু দিন বলা; আবার এর পক্ষে দালালি করা এসব বোকামি! ভণ্ডামি! নাকি ব্যবসা? নিচে বাংভারতের উরসবাদীদের উরুসের ইসলামী দলিল দেখানো হলো। এই দলিল দিয়েছে; গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখা, চট্টগ্রাম

উরুসের ভিত্তি হাদিসে বর্ণিত আছে; মুন্কার ও নাকীর যখন মৃত ব্যক্তির কবরে এসে প্রশ্ন করবে, তখন ওই প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদান করতে সক্ষম হলে মৃত ব্যক্তিকে বলা হয়; “نَمْ كَنَوْمَةِ الْعَرُوْسِ الَّذِىْ لاَيُؤْقِظُه اِلاَّ اَحَبُّ اَهْلِه اِلَيْهِ” অর্থাৎ; ঐ দুলহানের মত ঘুমিয়ে যাও; যাকে পরিবারে তার প্রিয়তম ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ জাগাবে না। ঐ দিন মুন্কার ও নাকীর ফিরিস্তা দুইজন তাকে ‘আরূস’ (عَرُوْس) নামে আখ্যায়িত করে। এজন্য; ঐ ওফাত দিবসকে ‘উরস’ (عُرْس) বলা হয়।

অথবা মৃত ব্যক্তি নেক্কার হওয়ার কারণে; বিশেষ করে বুযুর্গ হওয়াতে সমাধির মধ্যে নবির নূরানী সৌন্দর্য দেখার সৌভাগ্য হবে। যখন; মুন্কার ও নাকীর জিজ্ঞাসা করবেন; “مَا كُنْتَ تَقُوْلُ فِىْ حَقِّ هذَا الرَّجُلِ” অর্থাৎ; নবির দিকে ইশারা করে বলবেন; এ সত্তা সম্পর্কে তুমি কিরূপ বিশ্বাস করতে? তখন; ঐ ব্যক্তি নবির প্রশংসামূলক উত্তর দেবেন। উভয় জগতের প্রভুর দর্শনলাভ করে ধন্য হওয়াতে ঐ সময় উক্ত ব্যক্তির জন্য অনেক আনন্দের মুহূর্ত হয়। তাই; ঐ দিনকে ‘উরস’ (عُرْس)-এর দিন বলা হয়।

উরস পালনের শরঈ ভিত্তি বা দলীল

(The communal basis or document of the Ooras (marriage) celebrations)

১.   প্রতি বছর মৃত্যু দিবসে মৃত ব্যক্তি সমাধি বা সাধকদের সমাধি দর্শন করা, শাস্ত্রীয় গ্রন্থ পাঠ করা, দান-দক্ষিণা দেওয়া, পশু বধ করে প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। এসব কাজ ‘উরস’ ‘(عرس) উপলক্ষে করা হয়। ইসলামী সাম্প্রদায়িক বিধি মতে; এসব কর্মসূচী শুধু বৈধ নয়, বরং অনেক পুণ্যে কাজও বটে।

২.   ইবনে আবী শায়বাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বর্ণনা করেছেন যে; “اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ ىَأْتِىْ شُهَدَآءَ أُحُدٍ عَلى رَأْسِ كُلِّ حَوْلٍ” অর্থাৎ; নিশ্চয় নবি (সাঃ) প্রত্যেক বছরের মাথায় উহুদের শহীদগণের কবরগুলোর নিকট তাশরীফ নিয়ে যেতেন।

৩.   “عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ أَنَّه كَانَ يَأْتِىْ قُبُوْرَ شُهَدَآءَ عَلى رَأْسِ كُلِّ حَوْلٍ فَيَقُوْلُ سَلاَمٌ عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ فِنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِوَالْخُلَفَآءُ اَلْاَرْبَعَةُ هٰكَذَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ” অর্থাৎ; নবি (সাঃ) প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট তারিখে উহুদের শোহাদা-ই কেরামের মাযারে হাযির হতেন এবং তাদেরকে সালাম পেশ করে দো‘আ করতেন। খোলাফা-ই রাশেদীনও এ আমল করতেন।

৪.   শায়খ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রঃ) বর্ণনা করেন; “دوم آنكه بهيئت اجتماعى مردمان كثير جمع شوند وختم كلام الله فاتحه برشيرينى وطعام نموده تقسيم درميان حاضران كنند ايں قسم معمول درزمانه پيغمبرخدا صلى الله عليه وسلم وخلفاۓ راشدين نه بود اگر كسےايں طور كند باك نيست بلكه فائده احياء اموات راحاصل مى شود ” অর্থাৎ; দ্বিতীয়ত অনেক লোক একত্রিত হয়ে খতমে কুরান করবে, খাবার ও ফাতেহার মাধ্যমে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রসাদ বন্টন করবে। যদিও এ কাজ নবি (সাঃ) ও খোলাফা-ই রাশেদীনের যুগে ছিল না; কিন্তু এটা শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো অসুবিধা নেই; বরং এতে জীবিত ও মৃত সকলেরই উপকার হয়।

৫.   মাওলানা আব্দুল হাই লক্ষ্মৌভী বর্ণনা করেন যে; “كه شيخ عبد الحق محدث دهلوى از شيخ خود نقل مى سازد كه فرمود كه ايں عرس در زمان سلف نبود از مستحسنات متأخرين است ” অর্থাৎ; শেখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (রঃ) নিজ ওস্তাদের সূত্রে বর্ণনা করেন যে; প্রচলিত উরস শরীফ সালফ-ই সালেহীনের যুগে ছিল না। তবে; পরবর্তী ওলামা-ই কেরামের মতে; মুস্তাহাসান, কুরান-সুন্নাহর আলোকে সাব্যস্ত আমল।

৬.   হযরত গাযী-ই দ্বীন ও মিল্লাত আল্লামা আযীযুল হক্ব শেরে বাংলা (রঃ) তাঁর ফাতাওয়া-ই আযীযিয়াতে উল্লেখ করেন; “ وَفِىْ سِرَاجِ الْهِدَايَةِ َلِمَوْلاَنَا جَلاَلُ الدِّيْنِ الْبُخَارِىِّ عَلَيْهِ الرَّحْمَةُ فِىْ حَاشِيَةِ الْمَظْهَرِىِّ وَتُحْتَاطُ فِىْ السَّاعَةِ الَّتِىْ نُقِلَ رُوْحَه فِيْهَا فَاِذَا اَرْوَاحُ الْاَمْوَاتَ تَأْتُوْنَ فِىْ اَيَّامِ الْاَعْرَاسِ فِىْ كُلِّ عَامٍ فِىْ ذَالِكَ الْمَوْضِعِ فِىْ تِلْكَ السَّاعَةِ وَيَنْبَغِىْ يُطْعَمَ الطُّعَامُ وَالشَّرَابُ فِىْ تِلْكَ السَّاعَةِ فَاِنَّ ذَالِك يُفْرَحُ اَرْوَاحَهُمْ وَاِنَّ فِيْهِ تَأْثِيْرًا بَلِيْغًا (هدية الحرمين)” অর্থাৎ; মাওলানা জালালুদ্দীন বোখারী হাশিয়া-ই মাযহারীতে ‘সিরাজুল হেদায়া’য় বর্ণনা করেন; ঐ সময়কে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে; যখন; বুযুর্গ বা মৃত ব্যক্তির আত্মা গ্রহণ করা হয়েছে। কেননা; মৃতদের আত্মা প্রত্যেক বছর উরস চলাকালীন সময়ে ঐ স্থানে উপস্থিত হয়। অতএব; সে সময় খাবার-প্রসাদ পরিবেশন করা উত্তম। এতে তাদের আত্মা আনন্দিত হয়।

৭.   হাজী এমদাদুল্লাহ্ মুহাজিরে মক্কী (দেওবন্দী আলিমদের পির) ‘ফয়সালা-ই হাফতে মাসয়ালা’য় উরস বৈধ বলে জোর দিয়ে বলেন; ফকীর (নিজের) এ বিষয়ে তরীক্বা এই যে; আমি প্রত্যেক বছর আমার পির মুরশিদের জন্য ঈসালে সাওয়াবের ব্যবস্থা এভাবে করি যে; প্রথমে কুরান পাঠ করা হয়। আর মাঝে মধ্যে সময়ানুপাতে মিলাদ শরীফও পাঠ করা হয়। এরপর; উপস্থিত সবাইকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

উপরোল্লিখিত দলীলাদির দালালির আলোকে সাব্যস্ত হলো যে; উরস শরীফ পালন করা ইসলামী অনুষ্ঠানাদির অন্তর্ভুক্ত। এটা শুধু জায়েয নয়; বরং সাওয়াবের কাজ। আর সমাধি প্রদক্ষিণ করা কুরান-সুন্নাহ্ দ্বারা প্রমাণিত। হাদিসে বর্ণিত আছে যে; “نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ فَزُرُوْهَا رَوَاهُ مُسْلِمٌ عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُوْرِ فَزُرُوْا فِاِنَّهَا تُزْهِدُ فِى الدُّنْيَا وَتُذْكِرُ الْاخِرَةَ (ابن ماجة)” অর্থাৎ; আমি তোমাদেরকে প্রথমে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। তবে; এখন তোমরা যিয়ারত করো। কেননা; এটা পার্থিবতা বিমুখতাকে বাড়িয়ে দেয় এবং পরকালকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

বাংভারতের উরসবাদীদের আরো কিছু যুক্তি নিচে তুলে ধরা হলো।

.   উরস অনুষ্ঠানে কুরান পাঠ ও অন্যান্য নাম যপনা সহ যেসব শাস্ত্রকর্ম করা হয়; তা কুরান-সুন্নাহ মতে সম্পূর্ণ ভালো কাজ।

.   উরস অনুষ্ঠানে মৃত সাধক ব্যক্তির স্মারক আলোচনা করা হয়। হাদিসে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; “عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُذْكُرُوْا مَحَاسِنَ مَوْتَاكُمْ وَكُفُّوْا عَنْ مَسَاوِيْهِمْ (ابوا داؤدـ ترمزى ـ حاكم ـ بيهقى ـ الجامع الصغير)” অর্থাৎ; হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন; রাসুল (সাঃ) বলেছেন যে; তোমরা তোমাদের বিশ্বাসী মৃত ব্যক্তিদের ভালো দিকগুলো তুলে ধরো এবং তাদের মন্দ বিষয়সমূহের চর্চা থেকে বিরত থাকো।

.   হাদিসে আরো উল্লেখ আছে যে; “ذِكْرُ الْاَنْبِيَآءِ مِنَ الْعِبَادَةِ وَذِكْرُ الصَّالِحِيْنَ كَفَّارَةٌ وَذِكْرُ الْمَوْتِ صَدَقَةٌ وَذِكْرُ الْقَبْرِ يُقَرِّبُكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ ” অর্থাৎ; নবিদের আলোচনা, উপাসনা, পুণ্যবান লোকদের আলোচনা প্রায়শ্চিত্ত, মৃত্যুকে স্মরণ করা, দান এবং সমাধির আলোচনা তোমাদেরকে স্বর্গের নিকটস্থ করে দেয়।

.   উরস অনুষ্ঠানে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। অপরকে প্রসাদ পরিবেশন সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে; “اَىُّ الْاِسْلاَمِ خَيْرٌ قَالَ تُطْعِمُ الطَّعَامَ تَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَّمْ تَعْرِفْ ـ وَقَالَ اَيْضًا اَطْعِمُوْا الطَّعَامَ وَأَفْشُوْا السَّلاَمَ تُوَرِّثُوْا الْجِنَانَ ” অর্থাৎ; ইসলামের উত্তম কাজ খাদ্য খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে অধিক হারে অভিবাদন করা। এটাও বলেছেন যে; তোমরা খাদ্য খাওয়াও আর অধিক পরিমাণে অভিবাদন করো। তাহলে তোমরা স্বর্গের অধিকারী হতে পারবে।

.   উরস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিরাই হলো অতিথি, আর অতিথির অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন করা বিশ্বাসের পরিপূর্ণতা। যেমন; হাদিসে উল্লেখ রয়েছে; “مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَبِالْيَوْمِ الْاخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَه” অর্থাৎ; যে কাঁই ও পরকালের ওপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার অতিথির সমাদর করে। উপরোক্ত কাজসমূহের সমন্বয়ে উরস উদ্যাপিত হয়, তাই উরস পালন ইসলামের অনুষ্ঠানাদি পালনের মধ্যে অন্যতম এবং সাওয়াবের কাজ।[২]

এইভাবে প্রায় ৮,০০০[৩] আরবি পরিভাষার আভিধানিক অর্থ পরিবর্তন করে সৃষ্টি করা হয়েছে বাংভারতীয় ইসলামী মতবাদ। আভিধাকি অর্থ পরিবর্তন কৃত কয়েকটি আরবি পরিভাষা হলো;

  1. আলমাশয়ারি আলহারাম ‘الْمَشْعَرِ الْحَرَامِ’ (কুরান; ২.১৯৮),
  2. আল্লাহ (الله),
  3. উরস (عرس),
  4. কাবা (ﻛﻌﺑﺔ) (Ka’bah),
  5. ক্বিয়াম (قياما) (Standing),
  6. ক্বিয়ামত (ﻗﻴﺎﻤﺔ) (Resurrection),
  7. কুরবানি (ﻗﺮﺒﺎﻨﻰ) (Slaughter),
  8. কুরান (قران),
  9. ক্বেবলাহ (ﻘﺑﻠﺔ) (Qibla),
  10. কোজাগর (Kozagor),
  11. জমজম (زمزم‎) (Divine dungeon),
  12. সাফামারওয়া ‘صفا ومروة’/ (Straight and Vagina),
  13. সাফা/ ‘صفا’/ (Straight),
  14. মারওয়া/ ‘مروة’/ (Vagina),
  15. জিন (ﺠﻦ) (Giant),
  16. ঝাবানিয়া ‘زبَانِيَةَ’ (কুরান; সুরা; আলাক্ব-১৮)
  17. দাজ্জাল ‘ﺪﺠﺎﻞ’ (Dajjal),
  18. মাহাদি ‘ﻤﻬﺪﻯ’ (মাহাদি)/ Refresher,
  19. নামাজ (ﻧﻤﺎﺯ) (Heating),
  20. মক্কা (ﻤﻛﺔ) (Mecca),
  21. মদিনা (ﻤﺪﻴﻧﺔ) (Madina),
  22. মাক্বামি ইব্রাহিম (مقام إبراهيم) (Abraham’s standing place),
  23. মিরাজ (ﻤﻌﺭﺍﺝ) (Ascender),
  24. যাকাত (ﺯﻜﻮﺍﺓ) (Essence) (Zakat),
  25. রোজা ‘ﺮﻮﺯﻩ’ (Fasting),
  26. সালাত (صلاة)/ তাপন/ Heating (হিটিং),
  27. সিয়াম (ﺼﻴﺎﻡ) (Fasting),
  28. হজ (ﺤﺞ) (Pilgrimage),
  29. হাজরে আসওয়াদ (حجر أسود) (Black stone)

উপসংহার (Conclusion)

আরো ভয়ঙ্কর কথা হলো; বর্তমানকালের বাংভারতীয় ইসলামী মোল্লা-মুন্সিরা বলতে আরম্ভ করেছে যে; “সৌদি আরব ইসলামের কেউ না। সৌদি আরবে ইসলাম নেই। তাই; সৌদি আরব ইসলামের মডেল নয়। তারা আরো বলে যে; সৌদিয়ানরা ওহাবী। তারা সুন্নী নয়। তাই; তাদের মান্য করা যাবে না। আমাদের মডেল হলো কুরান ও সুন্না” ইত্যাদি।

কুরান ও সুন্না তাদের ভিত্তি। কথা ঠিক আছে। কিন্তু এগুলো এলো কোথায় থেকে? তাহলে এদের মূল কোথায়? তাহলে কী তারা এমনটা বুঝাচ্ছে যে; “মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি।”

মানুষের মৌলিক কাজকর্ম জলাঞ্জলি দিয়ে আব্বাসীয় রাজবংশ প্রচলিত ইসলামের সূচনা করেছে। তারা প্রায় ছয়শত বছর সারা মধ্যপ্রাচ্য শাসন করেছে। তারাই সাধনের মূল ধারা পরিত্যাগ করে ছিন্নমূল ইসলামের প্রচার করেছে। তাদের ছিন্নমূল ইসলাম বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রচলিত। এখন আবার বাংভারতে নতুন নতুন ইসলামের উদ্ভব করা হচ্ছে। আর তা মাইক লাগিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এখানে সুন্নীরা বলছে আমাদের ইসলাম সঠিক। আহলে হাদিসরা বলছে আমাদের ইসলাম সঠিক। এই ইসলামগুলো সৌদি আরবের সঙ্গে মেলার প্রয়োজন নেই। কারণ; তারা ওয়াবী! তবে; এসব ছিন্নমূল হতে ছিন্নমূল ইসলাম নয় কি?

বাংভারতের মোল্লা-মুন্সিরা মনে করে আরবীয় পুরাণ, মিশরীয় পুরাণ, গ্রিক পুরাণ, মধ্যপ্রাচ্যের পৌরাণিক কাহিনী, আরব্য রজনীর গল্প ও কারবালা উপন্যাস হলো বাংভারতের ইসলাম। তাই; তারা এসব পৌরাণিক কাহিনী নির্ভর ইসলাম প্রচার আরম্ভ করেছে।

তারপর; ইসলামের ছিন্নমূল এসব উপদলের ওয়াজ প্রতিদিন রাস্তাঘাটে চলছে। এখনো বাঙালীরা জানে না এর পরিণাম কত ভয়াবহ! আমাদের এই বাংলা একবার ব্রিটিশদের কাছ থেকে, একবার পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীন করতে হয়েছে। আবার হয়তো মোল্লা-মুন্সির কাছ থেকে সোনার বাংলা স্বাধীন করতে হবে! এখনই যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে এদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়; ভবিষ্যতে রাষ্ট্র কী পারবে এদের নিয়ন্ত্রণ করতে?

তথ্যসূত্র (References)

  1. পির এ কামেল হওয়ার প্রথম ছবক
  2. গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখা, চট্টগ্রাম
  3. প্রচলিত নামাজের রূপরেখা; হাক্কানী মিশন; মিরপুর কর্তৃক প্রকাশিত।

বহিঃসংযোগ (External links)

1.     সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া কুরআনের আলোচনা করলেই জেল-জরিমানা

2.     অনুমতি ছাড়া কুরআন নিয়ে কথা বললেই জেল-জরিমানা

3.     চীনে মসজিদে লাউডস্পিকার ব্যবহার নিষিদ্ধ

 

তথ্যসূত্র (References)

(Theology's number formula of omniscient theologian lordship Bolon)

১ মূলক সংখ্যা সূত্র (Radical number formula)
"আত্মদর্শনের বিষয়বস্তুর পরিমাণ দ্বারা নতুন মূলক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়।"

রূপক সংখ্যা সূত্র (Metaphors number formula)

২ যোজক সূত্র (Adder formula)
"শ্বরবিজ্ঞানে ভিন্ন ভিন্ন মূলক সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন যোজক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, গণিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায় না।"

৩ গুণক সূত্র (Multiplier formula)
"শ্বরবিজ্ঞানে এক বা একাধিক মূলক-সংখ্যার গুণফল দ্বারা নতুন গুণক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"

৪ স্থাপক সূত্র (Installer formula)
"শ্বরবিজ্ঞানে; এক বা একাধিক মূলক সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে স্থাপন করে নতুন স্থাপক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"

৫ শূন্যক সূত্র (Zero formula)
"শ্বরবিজ্ঞানে মূলক সংখ্যার ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন শূন্যক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"

< উৎস
[] উচ্চারণ ও ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত
() ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত
> থেকে
√ ধাতু
=> দ্রষ্টব্য
 পদান্তর
:-) লিঙ্গান্তর
 অতএব
× গুণ
+ যোগ
- বিয়োগ
÷ ভাগ

Here, at PrepBootstrap, we offer a great, 70% rate for each seller, regardless of any restrictions, such as volume, date of entry, etc.
There are a number of reasons why you should join us:
  • A great 70% flat rate for your items.
  • Fast response/approval times. Many sites take weeks to process a theme or template. And if it gets rejected, there is another iteration. We have aliminated this, and made the process very fast. It only takes up to 72 hours for a template/theme to get reviewed.
  • We are not an exclusive marketplace. This means that you can sell your items on PrepBootstrap, as well as on any other marketplate, and thus increase your earning potential.

পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী

উপস্থ (শিশ্ন-যোনি) কানাই,(যোনি) কামরস (যৌনরস) বলাই (শিশ্ন) বৈতরণী (যোনিপথ) ভগ (যোনিমুখ) কাম (সঙ্গম) অজ্ঞতা অন্যায় অশান্তি অবিশ্বাসী
অর্ধদ্বার আগধড় উপহার আশ্রম ভৃগু (জরায়ুমুখ) স্ফীতাঙ্গ (স্তন) চন্দ্রচেতনা (যৌনোত্তেজনা) আশীর্বাদ আয়ু ইঙ্গিত ডান
চক্ষু জরায়ু জীবনীশক্তি দেহযন্ত্র উপাসক কিশোরী অতীতকাহিনী জন্ম জ্ঞান তীর্থযাত্রা দেহাংশ
দেহ নর নরদেহ নারী দুগ্ধ কৈশোরকাল উপমা ন্যায় পবিত্রতা পাঁচশতশ্বাস পুরুষ
নাসিকা পঞ্চবায়ু পঞ্চরস পরকিনী নারীদেহ গর্ভকাল গবেষণা প্রকৃতপথ প্রয়াণ বন্ধু বর্তমানজন্ম
পালনকর্তা প্রসাদ প্রেমিক বসন পাছধড় প্রথমপ্রহর চিন্তা বাম বিনয় বিশ্বাসী ব্যর্থতা
বিদ্যুৎ বৃদ্ধা মানুষ মুষ্ক বার্ধক্য মুমুর্ষুতা পুরুষত্ব ভালোবাসা মন মোটাশিরা যৌবন
রজ রজপট্টি রজস্বলা শুক্র মূত্র যৌবনকাল মনোযোগ রজকাল শত্রু শান্তি শুক্রপাত
শুক্রপাতকারী শ্বাস সন্তান সৃষ্টিকর্তা শুক্রধর শেষপ্রহর মূলনীতি সন্তানপালন সপ্তকর্ম স্বভাব হাজারশ্বাস
ADVERTISEMENT
error: Content is protected !!