১৬/১৩. মাধাই
Nectary (নেক্টারি)/ ‘الرحيقية’ (আররাহিক্বিয়া)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’ পরিবারের অধীন গুরুত্বপূর্ণ ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক অশালীন মূলক সত্তা’ ‘যোনি’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপান্তরিত মূলক সত্তা’ ‘কানাই’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘রজকিনী’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘অন্ধকূপ, করঙ্গ, গোকুল, চিতা, চুলা, পাখি^২ ও  প্রস্তর’। এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘অনন্ত, কবন্ধ, ধন্বন্তরী, বরুণ, বৃত্র ও হিবাচী’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘কলাপী, কালনাগিনী, দস্যু, দানব, ব্রজপুর, মরা^৪ ও রাক্ষস’।

অভিধা (Appellation)
মাধা (বাপৌছ)বি মধুর পাত্র বিশেষ, যে পাত্রে মধু রাখা হয়।

মাধাই (বাপৌচা)বি মাধব, মধু, nectary, ‘الرحيقية’ (আররাহিক্বিয়া), ‘الغدة الرحيقية’ (আলগুদ্দাত আররাহিক্বিয়া), ‘غدة الرحيق في الازهار’ (গুদ্দাত আররাহিক্ব ফি আলয়াঝহার) (প্র) বাঙালী পুরাণ বর্ণিত; মধুদৈত্য; যার সহযোগী দৈত্য ছিল কৈটভ (শ্ববি) যোনি, sex, vagina, ফারজ (আ.ﻔﺮﺝ) (রূপ্রশ) কানাই, অযোধ্যা, গণ্ডগ্রাম, গোকুল, গোষ্ঠ, নাগিনী, নৌকা, পাথর, ব্রজ, রজকিনী, স্রাবস্তী, হিবাচী (ইংপ) destroyer, origin (ইপ) মক্কা (আ.ﻤﻜﺔ) (ইদে) দাজ্জাল (আ.ﺪﺟﺎﻞ), হামান (আ.ﻫﺎﻤﺎﻦ), হারুত (আ.ﻫﺎﺭﻮﺓ), হেরা (ﺤﺭﺍ), হাজরে আসুদ (حجر أسود) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘প্রতীত’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; বাঙালী পুরাণে বর্ণিত; মধুদৈত্যকে মাধাই বলা হয় ২. বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে, যোনিকে রূপকার্থে মাধাই বলা হয় (বাপৌছ) কলাপী, কালনাগিনী, দস্যু, দানব, ব্রজপুর, মরা^৪ ও রাক্ষস (বাপৌচা) অনন্ত, কবন্ধ, ধন্বন্তরী, বরুণ, বৃত্র, মাধাই ও হিবাচী (বাপৌউ) অন্ধকূপ, করঙ্গ, গোকুল, চিতা, চুলা, পাখি^২ ও  প্রস্তর (বাপৌরূ) রজকিনী (বাপৌমূ) কানাই।

প্রপক (Extensive)
লোলার জ্যেষ্ঠ পুত্রের নাম ছিল মধু। পরবর্তীকালে এ মধুই মাধব ও মাধাই নামে প্রকাশিত হন। তিনি একজন মহাসুর ছিলেন। ইনি অত্যন্ত ব্রাহ্মণভক্ত ও আশ্রিত বৎসল ছিলেন। মহাদেব প্রীত হয়ে নিজের শূলের ন্যায় একটি শূল তাঁকে উপহার দিয়ে বলেন; মাধাই দেব ও ব্রাহ্মণের বিরোধিতা না করলে; এ শূল তাঁর কাছেই থাকবে এবং এ শূল শত্রুকে ভস্ম করে মধুর হাতে ফিরে আসবে। তখন; মধু প্রার্থনা করলেন; এ শূল চিরকাল যেন তাঁর বংশের অধিকারে থাকে। মহাদেব এতে অসম্মত হয়ে বললেন; মধুর একপুত্র কেবল এ শূলের অধিকারী হবেন। রাবণ দিগ্বিজয়ে যাত্রা করলে; কুম্ভকর্ণের নিদ্রাকালে ও বিভীষণ তপস্যায় রত থাকার সময়ে মাল্যবান ও অনলার কন্যা কুম্ভীনসীকে মধুদৈত্য হরণ করেন। কুম্ভীনসী সম্পর্কে ছিলেন রাবণের ভগিনী। রাবণ ফিরে এসে এসব ঘটনা জানতে পেরে মধুকে শাস্তি দেবার জন্য মধুপুরে যাত্রা করেন। সেখানে কুম্ভীনসী রাবণের পদসেবা করে স্বামীর প্রাণভিক্ষা করেন। তখন রাবণ ও মধুর মধ্যে সখ্যতা স্থাপিত হয়। মধু ও কুম্ভীনসীর পুত্র লবণ ও কন্যা মধুমতী। লবণ শত্রুঘ্ন কর্তৃক নিহত হন এবং মধুমতীর সাথে সূর্যবংশের হর্যশ্বের বিবাহ হয় (পৌরাণিক অভিধান)।

মাধাইয়ের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of nectary)
১.   “জগাই মাধাই দস্যু ছিল, তাদের গুরুর কৃপা হলো, অধীন লালন দোহাই দিলো, সে আশাতে।” (পবিত্র লালন- ৩৯৫/৪)।
২.   “জগাই মাধাই দুটি ভাই, কাদা ছুঁড়ে মারল গায়, তাদের তো নিলে, আমি পাপী তাইতো; ডাকি, দয়া হয় কোন কালে।” (পবিত্র লালন- ৪১৭/২)।
৩.   “জগাই মাধাই পাপী ছিল, কাদা ফেলে গায় মাখল, তাতে প্রভুর দয়া হলো, আমায় দয়া হয় কোন কালে।” (পবিত্র লালন- ৪৩২/৩)।

মাধাইয়ের সংজ্ঞা (Definition of nectary)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে বর্ণিত; মধুদৈত্যকে মাধাই বলে।

মাধাইয়ের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of nectary)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; যোনিকে মাধাই বলে।

মাধাইয়ের প্রকারভেদ (Variations of nectary)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে মাধাই দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান মাধাই ও ২. উপমিত মাধাই।

১. উপমান মাধাই (Analogical nectary)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মধুদৈত্যকে উপমান মাধাই বলে।

২. উপমিত মাধাই (Compared nectary)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; যোনিকে উপমিত মাধাই বলে।

মাধাইয়ের পরিচয় (Identity of nectary)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ বিশেষ। বাংলা পরিভাষা ‘মধু’ হতে মধুয়াই> মাধাই পরিভাষাটির উদ্ভব হয়েছে। ‘মাধাই’ অর্থ মধু ধারণকারী বা মধু আহরণকারী। এ সূত্র হতে মধু আহরণকারী ও মৌচাক উভয়কেই ‘মাধাই’ বলা যায়। বাঙালী পুরাণ মতে; ‘জগাই-মাধাই’ নামে সহোদর দুইজন দুর্ধর্ষ দৈত্য ছিলেন। বাঙালী পুরাণে এদের অন্য নাম হলো ‘শুম্ভ-নিশুম্ভ’। আরবীয় পুরাণে ‘হাবিল-কাবিল’ ও ‘হারুত-মারুত’ বলা হয়। অন্যদিকে; গ্রিক পুরাণে (ইঞ্জিলে) ‘শিমন-পিতর’ বলা হয়। এসব সত্তার ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘উপস্থ’। উপস্থের দুটি সত্তা। যথা; শিশ্ন ও যোনি। অন্যদিকে; শ্বরবিজ্ঞানে; যোনিকে মাধাই বলা হয়। স্ত্রী জননাঙ্গের মাধ্যমে সুধা ও মধু আহরণ করা হয়। এজন্য; এর এমন নামকরণ করা হয়েছে। পরিশেষে বলা যায়; যোনিকে রূপকার্থে ‘মাধাই’, মধুদৈত্য বা কানাই ইত্যাদি নামে ডাকা হয়।