৮৭/২১. মা
Mother (মাদার)/ ‘أم’ (আম্মা)
ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্র’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘শুক্র’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘ধন’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘অমির, আঙ্গুর, ধেনু, নির্যাস, পদ্ম, পিতৃধন ও রুটি’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘দুর্গা, নারাঙ্গী, বেহুলা, রতী, রাধা, সীতা ও সুন্দরী’ এবং এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘আদিপিতা, আদিমানব, আদ্যাশক্তি, দৈত্য২, মহামায়া ও স্বর্গীয় ফল’। এ পরিভাষাটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’, ‘জরায়ু’, ‘দেহ’, ‘নারী’, ‘রজ’ ও ‘শুক্র’ ইত্যাদি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’রই রূপক ও ব্যাপক পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়। সেজন্য; কেবল ব্যবহারের ক্ষেত্র অনুযায়ী এর সঠিক দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করা সর্ব শ্রেণির পাঠক ও গবেষকের একান্ত প্রয়োজন।
অভিধা (Appellation)
মা (বাপৌছ)বিস্ত্রী মাতা, জননী, গর্ভধারিণী, mother/ ‘أم’ (আম্মা) অব্য বিস্ময়, ভয়, আতঙ্ক (ওমা) (সনৃ) স্বরগ্রামের মধ্যম বা চতুর্থ সুর (প্র) মাতৃস্থানীয়া, কন্যা বা কন্যা স্থানীয়া নারীর প্রতি সম্বোধন (শ্ববি) শুক্র, শুক্রাণু, বীর্য, বিন্দু, ধাতু, semen, sperm, ‘আ.ﻤﻧﻰ’ (মনি), ‘আ.ﻧﻂﻔﺔ’ (নুত্বফা) (রূপ্রশ) গোবিন্দ, জল, বারি, পিতৃধন অহল্যা, কালী, দুর্গা, বৈষ্ণবী, সীতা (ইদে) ‘আ.ﺍﺪﻢ’ (আদম), ‘আ.عزى’ (উয্যা), ‘আ.ﺠﻦ’ (জিন), ‘ফা.ﭙﺮﻯ’ (পরি), ‘الزكاة’ (আজ্ঝাকাত), ‘আ.ﻟﻮﻄ’ (লুত্ব), ‘ﻴﺯﻴﺪ’ (ইয়াজিদ) ‘আ.ﺯﻟﻴﺠﺎ’ (জুলেখা), ‘আ. ‘ﺯﻫﺭﺍﺓ’ (জোহরা), ‘আ.بلقيس’ (বিলকিস) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্র’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; গর্ভধারিণীকে মা বলা হয় ২. শ্বরবিজ্ঞানে; শুক্রকে মা বলা হয় (বাপৌছ) আদিপিতা, আদিমানব, আদ্যাশক্তি, দৈত্য২, মহামায়া, মা ও স্বর্গীয় ফল (বাপৌচা) দুর্গা, নারাঙ্গী, বেহুলা, রতী, রাধা, সীতা ও সুন্দরী (বাপৌউ) অমির, আঙ্গুর, ধেনু, নির্যাস, পদ্ম, পিতৃধন ও রুটি (বাপৌরূ) ধন (বাপৌমূ) শুক্র।
মায়ের ওপর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of mother)
১. “কোন প্রেমের প্রেমিকা ফাত্বিমা, সাঁইকে করেন পতি ভজনা, কোন প্রেমের দায়- ফাত্বিমাকে সাঁই, মা বোল বলেছে।” (পবিত্র লালন- ৬০০/৩)।
২. “চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে, আমরা ভেবে করব কী, ঝিয়ের পেটে মায়ের জন্ম, তাকে তোমরা বলো কী।” (পবিত্র লালন- ৪৪০/১)।
৩. “নিগূঢ় বিচারে সত্য গেল যে জানা, মায়েরে ভজলে হয় বাপের ঠিকানা।” (পবিত্র লালন- ৬০১/১)।
৪. “নিগূঢ়ভেদ নাহি জেনে, কেবা সে মায়েরে চেনে, যার ওপর দুনিয়ার ভার, দিলেন রাব্বানা।” (পবিত্র লালন- ৬০১/২)।
৫. “বাবা মায়ের বিবাহের দিন সন্তানরা ধার্য করে, (গুরু) অহরহ ঘটে ঘটন কোন অচিন শহরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২০৬)।
৬. “শিশুকালে মরে গেছে মা, গর্ভে থুয়ে পিতা মরল, তারে চোখে দেখলাম না, কে করবে লালনপালন, কে দিবে সান্তনা।” (পবিত্র লালন- ৩৮৯/২)।
মায়ের ওপর কয়েকটি সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of mother)
১. “অটল রূপের সরোবর, শ্রীরূপ সে ঘাটের ঘেটেলা, যাও যদি মন সে শহরে, মায়ের চরণ ধরো এ বেলা।” (পবিত্র লালন- ৪৭/১)।
২. “আছে মায়ের ওতে জগৎপিতা ভেবে দেখ মনা, হেলা করো না, বেলা মেরো না।” (পবিত্র লালন- ৮৬/১)।
৩. “এ ধন যৌবন চিরদিনের নয়, বিনয় করে নিমাই মায়েরে কয়।” (পবিত্র লালন- ২১৭/১)।
৪. “ঐরূপ দেখে মরিমরি, মা ফাত্বিমার নিত্যপুরী, হযরত আলির ঝাড়িঝুড়ি, মনের খাপে খাপি খায়।” (পবিত্র লালন- ৩১২/৩)।
৫. “ও মা যশোদা গো তা আর বললে কী হবে, গোপালকে যে এঁটো দিই মা, কেন যে এ ভবে।” (পবিত্র লালন- ২৫৫/১)।
৬. “কত করে বলিরে মন, কর আগে মায়ের যতন, পাবিরে পিতার দরশন, প্রেমতরণী ডিঙ্গি নায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৮০)।
৭. “কানাই একবার এ ব্রজের দশা দেখে যারে, তোর মা যশোদা, কিরূপ হালে আছেরে।” (পবিত্র লালন- ২৭২/১)।
৮. “কেমন পিতা কেমন মা সে, চিরকাল সাগরে ভাসে, লালন বলে করো দিশে, ঘরের মাঝে ঘরখানা।” (পবিত্র লালন- ৮৬/৪)।
৯. “কোন প্রেমে মা কালী, পদতলে করে মহেশ্বর বলি, লালন বলে ধন্য দেবী, জয় জয় হরি।” (পবিত্র লালন- ৬৫০/৪)।
১০. “ক্ষুধাতে মন আকুল হয় মা, ধেনু রাখার বল থাকে না, বলাই দাদা বোল বুঝে না, কথা কয় হেনে।” (পবিত্র লালন- ৬৭৬/৩)।
১১. “গোপালকে আজ মারলি গো মা, কোন পরানে, সে কী সামান্য ছেলে মা, তাই ভাবলি মনে।” (পবিত্র লালন- ৪২১/১)।
১২. “ছেলের মাতা-পিতার ঠিকানা নাই, নামটি তার দিগ্বিজয় শুনতে পাই, এমন ছেলে ভূমণ্ডলে, কে হয় জন্মদাতা।” (পবিত্র লালন- ৫৫২/২)।
১৩. “জগৎপতি সুবহানে, বরকতে মা বললেন জেনে, তার পতি কী নয় সেজনে, লালন ভাবে তাই।” (পবিত্র লালন- ২৮৬/৪)।
১৪. “জল থেকে হয় মাটির সৃষ্টি, জাল দিলে হয় গো মাটি, বুঝে দেখ এ কথাটি, ঝিয়ের পেটে মা জন্মায়।” (পবিত্র লালন- ৯৫৫/২)।
১৫. “তার ওপরে আছে মা, জানো না মন তার মহিমা, কেউ কেউ তার পায় গো সীমা, সাধনের জোরে।” (পবিত্র লালন- ৯৯/৪)।
১৬. “তুই শিশু ছেলে আমার, মা হয়ে ভেদ পাই না তোর, লালন বলে শচীকুমার, জগৎ ফেলবে চমৎকারে।” (পবিত্র লালন- ৬৭২/৪)।
১৭. “তোর ছেলে যে গোপাল, সে সামান্য নয় মা, আমরা পেয়েছি তারে তুই ভাবিস যা।” (পবিত্র লালন- ৪৯৯/১)।
১৮. “ধড় নাই শুধুই মাথা, ছেলের মা রইল কোথা।” (পবিত্র লালন- ৫৫২/১)।
১৯. “ধন্য মায়ের নিমাই ছেলে, এমন বয়সে নিমাই, ঘর ছেড়ে ফকিরি নিলে।” (পবিত্র লালন- ৫৫৯/১)।
২০. “না ছিল আসমান জমিনি দিনরজনী, আলেক রূপে রয় ক্বাদিরগনি, তাঁর নূরে মা জননী, তাঁর সাথে হলো মিলন।” (পবিত্র লালন- ৯১/২)।
২১. “নিষ্কামী নির্বিকার হয়ে, দাঁড়াও মায়ের স্মরণ লয়ে, বর্তমানে দেখ চেয়ে, স্বরূপে রূপনিশানা।” (পবিত্র লালন- ৮৬/৩)।
২২. “পরের ছেলের দেখে হাল, শোকানলে আমরা বেহাল, না জানি এ শোকের কী হাল, জ্বলছে গো মা জননী।” (পবিত্র লালন- ৩০২/৩)।
২৩. “বনে আজ হারিয়ে তোরে, গৃহে যাব কেমন করে, কী বলবো মা যশোদারে, ভাবনা হলো তাই।” (পবিত্র লালন- ৩৫২/২)।
২৪. “বনে এসে হারালাম কানাই, বাড়ি গিয়ে কী বলবো মা যশোদারে, ভেবে দিশে না পাই।” (পবিত্র লালন- ৬৬৯/১)।
২৫. “বলরে সে মনের-মানুষ কোনজনা, মা করে পতি ভজনা, মাওলা তারে বলে মা।” (পবিত্র লালন- ৬৭৪/১)।
২৬. “বলাই দাদার দয়া নাই মনে, গোষ্ঠে আর যাব না মা, বলাই দাদার সনে।” (পবিত্র লালন- ৬৭৬/১)।
২৭. “মায়ের গুরু পুতের শিষ্য, দেখে জীবের জ্ঞান নৈরাশ্য, তার মনের কী উদ্দেশ্য, ভেবে বুঝা যায় কিসে।” (পবিত্র লালন- ৪৮৬/৩)।
২৮. “মায়ের বাম অঙ্গে কেবা, বাবা দায়ে ঠেকায় সেবা, লালন ভনে তাপিত মনে, জ্ঞান-নয়নে দিবেন বলে।” (পবিত্র লালন- ১৩৯/৪)।
২৯. “মুচির চামকুঠিতে গঙ্গা মা, কোন গুণে যায় দেখ না, কেউ ফুল দিলেও পায় না তো, মন রাজি নয়- পূজলে কী হয় ফুল দিয়ে শতশত।” (পবিত্র লালন- ১৯৩/৩)।
৩০. “মুহাম্মদ আব্দুল্লার ছেলে, রজবীজে জন্ম নিলে, আমিনাকে মা বলে, প্রকাশ হলেন মদিনায়।” (পবিত্র লালন- ৮৬৮/২)।
৩১. “যখন ছিল বিম্বমণি, গর্ভে ধরেছিল মা জননী, ডিম্বে উষুম পেয়ে শুনি, ধরে ব্রহ্মা আকার।” (পবিত্র লালন- ৫০৮/৩)।
৩২. “যখন তোমার জন্ম হলো, বাবা তখন কোথায় ছিল, কার সঙ্গে মা যুগল হলো, কে তোমারে জন্ম দিলে।” (পবিত্র লালন- ১৩৯/২)।
৩৩. “যখন নবিজি ভূমিষ্ঠ হলো, মা তখন অচেতন ছিল, কোন জায়গায় তারে নিয়ে গেল, লালন ফকির ভাবছে তাই।” (পবিত্র লালন- ৩৬০/৪)।
৩৪. “যার কারণে বাইরে বাঁধা, শোন বলিরে সুদাম দাদা, ও সে নন্দের পিতা, গুরু ভেবে বলছে লালন, ধন্যরে মা যশোদা।” (পবিত্র লালন- ১৬৩/৪)।
৩৫. “রও শচী মা গৃহে গিয়ে, আমারে বিসর্জন দিয়ে, এ বলে নিমাই- ধরে মায়ের পায়, লালন বলে ধন্য ধন্য নিমাই।” (পবিত্র লালন- ২১৭/৪)।
৩৬. “রাধার কথা কী বলবো মা, তার গুণের নাই সীমা, মুনি ঋষি ধ্যানীজ্ঞানী, না পেল তার চরণ কমলে।” (পবিত্র লালন- ৮৮১/২)।
৩৭. “রাম রহিম গোউরশাহ বলে, জাতি হয় সে মুচির ছেলে, মা গঙ্গা তারে দেখা দিলে, চামড়ার কুঠরায়।” (পবিত্র লালন- ১০৪/২)।
৩৮. “লাল রঙে রঙিনী যিনি, আদ্যাশক্তি মা প্রসবিনী, সিতারারূপ ধরে তখনি, লালন কয় আগম অনুসারে।” (পবিত্র লালন- ৬০৫/৪)।
৩৯. “শচীকুমার যশোদায় বলে, অবহেলায় হারালি মা, তোর ঘরের ছেলে।” (পবিত্র লালন- ৮৮১/১)।
৪০. “শিশুকালে বিন্দুনালে মায়াজালে মা হারাইয়া রই, অন্ধকারে ঘুর্ণাকারে কারাগারে কত জ্বালা সই, কেমনে পাব বাপের দেখা, ঘুচবে ভব যন্ত্রনা।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৩৩)।
৪১. “শুনি মায়ের পালিত ছেলে, দুটি গর্ভে জন্ম হলে, কার গর্ভে কয়দিন ছিলে, হায়াত মউত কে লেখলে।” (পবিত্র লালন- ১৩৯/৩)।
৪২. “শুনেছি মা তুমি অবিম্বধারী, বেদান্তের পর দম্ভ তারই, ওরে মন আমার- তারে চেনা হলো ভার, ভুলে রইলি ভবের ভাবভূষণে।” (পবিত্র লালন- ৭০৮/৩)।
৪৩. “সত্য হলে মায়ের বচন, পাবিরে বাপের দরশন, তখনই হয় সাধন ভজন, সত্যমূলে যায় সবে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৯৭)।
৪৪. “সিফাতে নবির বিবি তিনজনা, সুসন্তানের হয়েছে মা, আলিফ লাম মীম দেখ রে কানা, তিনজন বিবি সায়্যিদিনা।” (পবিত্র লালন- ২৬৮/৩)।
মায়ের ওপর কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ বলন (Some full Bolon on the mother)
১. “আমার মায়ের মতো আপন কেহ না
আরে এ জগতে, মায়ের মতো আপন কেহ না।
মাসী বলো পিসী বলো
মায়ের মতো কেউ না
মা জননী নাইরে যাহার
সেই জানে বেদনা।
দিদি বৌদির অধিক প্রেমে
থাকতে পারে ছলনা
মা জননীর ভালোবাসার
নাইরে কোন তুলনা।
সুখে থাকি ভালো থাকি
এই তো মায়ের কামনা
অধীন বলন ভেবে কয়
মায়ের ভজন ছেড় না।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
২. “দে মা কৃষ্ণধনকে গোষ্ঠে যাব
পাশাখেলিতে
ব্রহ্মা ডাকে নারদমুনিকে
নাগরদোলায় দুলিতে।
আজ ফাগুনে নিধুবনে
কৃষ্ণলীলা গোপীর সনে
যাব সঙ্গোপনে নিরজনে
বৈষ্ণবেরা ব্রাহ্মণ সাধিতে।
গঙ্গা মা ঐ ডাকে শুনি
সঙ্গে তাহার নারদমুনি
পরশিব চরণখানি
গঙ্গা স্নানের নিশিতে।
অষ্টকরে বাজিয়ে বেণু
বাথানে রাখিব ধেনু
বলন কয় সঙ্গে কানু
ভয় কী মা পালেতে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৪৬)।
৩. “বসুমতি মা কাতরে বিনয় করি রাঙ্গা চরণে
তোর দয়া বিনা স্বরূপনদ পাড়ি দিব কেমনে।
ও মা হস্ত পদ বান্ধিয়া
মারিস না নিষ্ঠুর হইয়া
কে আমায় করবে দয়া
এ বান্ধব নাই ভুবনে।
সাধুকুল হারাইয়া আমি
কাঁদি বসে দিনরজনী
ঝরার খালে ঝরছে মণি
দেখা দাও চাঁদবদনে।
স্বরূপনদ ত্রিরূপ কারা
পাড়ি দিলে কর্ম সারা
বলন কয় মা দয়া ছাড়া
পাড়ি দিব কেমনে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২০০)।
৪. “বসুমতি লীলাবতী মাগো ছাঁয়া দে মা চরণতলে
গোষ্ঠ খেলে কষ্ট পেলে মরিমরি দুষ্ট ছেলে।
মায়াকানন কুসুমবাগে
সাদা কালো দুই শশী জাগে
বাছাধন কেষ্ট মাঙ্গে
তোর দুয়ার দে খুলে।
কতদিন পরেতে বনে
কালোফুল নিতে এসে রণে
মাগো তোর চরণ বিহনে
যাই বুঝি গো রসাতলে।
চরণ ধরি মিনতি করি
একূল ওকূল দু’কূল ঘুরি
আজি দে গো পারের কড়ি
বলন কাঁইজিকে দয়া বলে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২০১)।
৫. “মা করে লালনপালন মা মারে সন্তানের প্রাণ
প্রণাম জননীর চরণে প্রণাম।। (গো)
বিরজা ফল্গু গয়াধামে
ভক্তি দাও মায়ের চরণকোনে
নিরীক্ষ রেখে নয়নে-
বৃন্দাবন আর কৈলাশটিলে
মাকে রাখো আদ্যামূলে
মা জননী সাতরাজার সমান।।
দেশ ছেড়ে বিদেশে যাই
কত জনরে মা বুলাই
মায়ের মত আপন কেউ নাই-
যদি করে মায়ের ভজন
পেতে চাই সাঁইদরশন
সাঁইজি তার তড়িৎ প্রমাণ।।
মায়ের পরে যে বড়াই করে
যেমন আগুনে পতঙ্গ মরে
দোষ কী আগুনে করে- বলন কয় যে অধিক নড়েচড়ে
নিজের মরা নিজেই মরে
শেষে সে সংসারে কুড়ায় দুর্ণাম।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৫১)।
৬. “হায়ঃ হায়ঃ আর কত পুড়াবি
মা তোর ননির দায়
আমার সাধনভজন সবই হইল ছাই।
কঠিন হইয়া মা যখনে
সাধের বলাই দেয় আগুনে
ছেলের কান্না মা না শোনে
হৃদয়ে দয়া-মায়া নাই।
ছেলের ভীরু অশ্রুজলে
মায়ের কভু হৃদ না গলে
মাপেতে সঠিক না হলে
দুইমুখে কামড়াইয়া খায়।
বিনয় করে বলে বলন
জগৎ সৃজন ননির কারণ
ননিই গুরুর রাঙাচরণ
ননিই হলো জগৎসাঁই।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩১৩)।
৭. “বাবা মায়ের বিবাহের দিন সন্তানরা ধার্য করে
(গুরু) অহরহ ঘটে ঘটন কোন অচিন শহরে।
একটা লালশালু পরে নাতি ঘটক হয়ে যায়
বড়-সন্তান কাজি হয়ে মাকে সামনে বসায়
পাঁচ হাজার তিনশত সাত- শাঁড়িটি পরায় বারহাত
বাপের মাথায় মায়ের হাত- কখন কোন আসরে।
সাতাশজন বরযাত্রীসহ সন্তান দশজন
হাজার টাকা ধার্য করে মায়ের বিবাহের পণ
মা জননীর ছয়’ননদী- সবাই সে পণ বিরোধী
সবাই রঙ্গিন সাজে সাজি- বিয়ে হয় বারটা পরে।
তিনশত ষাটজন অতিথী সাক্ষী রয় তিনজনা
বত্রিশজনে শেষ করে আশিজনের খানা
উনিশজনা দর্শনার্থী- সত্তরজন প্রতিবেশী
বলন কয় সে বিয়েটি- সদাই হয় আঁধার ঘরে।”
(বলন তত্ত্বাবলী- ২০৬)।
মায়ের ওপর কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ লালন (Some full Lalon on the mother)
১. “১আছে মায়ের ওতে জগৎপিতা
ভেবে দেখ মনা,
হেলা করো না বেলা মেরো না।
২কুরানে তার ইশারা দেয়,
আলিফ যেমন লামে লুকায়,
তেমনি, আকারে সাকার ছাপা রয়,
সামান্যে কী যায় জানা।
৩নিষ্কামী নির্বিকার হয়ে,
দাঁড়াও মায়ের স্মরণ লয়ে,
বর্তমানে দেখ চেয়ে,
স্বরূপে রূপ নিশানা।
৪কেমন পিতা কেমন মা সে,
চিরকাল সাগরে ভাসে,
লালন বলে করো দিশে,
ঘরের মাঝে ঘরখানা।” (পবিত্র লালন- ৮৬)।
২. “১আমার শুনতে বাসনা দিলে,
গুরু সে কথাটি বলো খুলে।
২যখন তোমার জন্ম হলো,
বাবা তখন কোথায় ছিল,
কার সঙ্গে মা যুগল হলো,
কে তোমারে জন্ম দিলে।
৩শুনি মায়ের পালিত ছেলে,
দুটি গর্ভে জন্ম হলে,
কার গর্ভে কয়দিন ছিলে,
হায়াত মউত কে লেখলে।
৪মায়ের বাম অঙ্গে কেবা,
বাবা দায়ে ঠেকায় সেবা,
লালন ভনে তাপিত মনে,
জ্ঞান নয়নে দিবেন বলে।” (পবিত্র লালন- ১৩৯)।
৩. “১আর আমারে মারিস না মা,
বলি মা তোর চরণ ধরে,
ননি চুরি আর করব না।
২ননির জন্য আজ আমারে,
মারলি মাগো বেঁধে ধরে,
দয়া নাই মা তোর অন্তরে,
স্বল্পেতে গেলো জানা।
৩পরে মারলে পরের ছেলে,
কেঁদে এসে মাকে বলে,
মা জননী নিষ্ঠুর হলে,
কে বুঝে শিশুর বেদনা।
৪ছেড়ে দে মা হাতের বাঁধন,
যায় যেদিকে যায় দুই নয়ন,
পরের মাকে ডাকব এখন,
তোর গৃহে আসব না।
৫যে না বুঝে ছেলের বেদন,
সে মায়ের বৃথা জীবন,
বিনয় করে বলছে লালন,
করো মা আজ করুণা।” (পবিত্র লালন- ১৬৫)।
৪. “১ও মা যশোদা কৃষ্ণধনকে,
দে মা গোষ্ঠে যাই,
সব রাখাল গেছে গোষ্ঠে,
বাকি কেবল কানাই বলাই।
২উঠরে ভাই নন্দের কানু,
বাথানেতে বাঁধা ধেনু,
গগনে ওঠেছে ভানু,
আর তো নিশি নাই,
মায়ের কোলে ঘুমিয়ে রইলি
এখনও কী ঘুম ভাঙ্গে নাই।
৩গো চারণে গোষ্ঠের পথে,
কষ্ট নাই মা গোষ্ঠে যেতে,
আমরা সবে কাঁন্ধে করে,
গোপাল লয়ে যাই,
তোর গোপালের ক্ষুধা পেলে,
দণ্ডে দণ্ডে ননি খাওয়াই।
৪আমরা যত রাখালগণে,
ফিরি সবে বনে বনে,
মুনিগণের দ্বারে দ্বারে,
কত ভিক্ষা চাই,
লালন কয় আগে খেয়ে মিঠা হলে
তোর গোপালকে খাওয়াই।” (পবিত্র লালন- ২৫৬)।
৫. “১কী ভাব নিমাই তোর অন্তরে,
মা জননীরে চক্ষের দেখা,
তাতে কী তোর ধর্ম যায়রে।
২কল্পতরু পাও গো যদি,
তবু মা বাপ গুরুনিধি,
এ গুরু ছাড়তে বিধি,
কে তোরে দিয়েছে হাঁরে।
৩আগে যদি জানতে ইহা,
তবে কেন করলে বিয়া,
এখন সে বিষ্ণু-প্রিয়া,
কেমনে রাখব ঘরে।
৪নদীয়ার ভাবের কথা,
লালন কী জানে তা,
হা হুতাশে শচীমাতা,
বলে নিমাই দেখা দেরে।” (পবিত্র লালন- ৩১১)।
৬. “১তোর ছেলে যে গোপাল,
সে সামান্য নয় মা,
আমরা পেয়েছি তারে
তুই ভাবিস যা।
২কার্য দ্বারা জ্ঞান হয় যে;
অটলচাঁদ নেমেছে ব্রজে,
নইলে সে বিষম বিষে,
কালীদহে বাঁচত না।
৩যে ধন বাঞ্ছিত সদাই,
তোর ঘরে মা সে দয়াময়,
নইলে কী তার বাঁশীর সুরে,
আর ফিরে গঙ্গা।
৪যেমন ছেলে গোপাল তোমার,
তেমনই; ছেলে আছে কার,
লালন কয় গোপাল হতে,
গোপাল হয় মা।” (পবিত্র লালন- ৪৯৯)।
৭. “১সকালে যাই ধেনু লয়ে,
এ বনে বাঘ আছে ভাই,
মা আমায় দিয়েছে কয়ে।
২আজকার খেলা এ অবধি,
ফিরারে ভাই ধেনু আদি,
প্রাণে বেঁচে থাকি যদি,
কাল আবার খেলব এসে।
৩নিত্যনিত্য বন ছাড়ি,
সকালে যেতাম বাড়ি,
আজ মোদের দেখে দেরি,
মা আছে পন্থপানে চেয়ে।
৪বলেছিল মা যশোদে,
বলাইকে দিলাম কানাইয়ের হাতে,
লালন কয় মরলে তাতে,
কী বলবে মাকে গিয়ে।” (পবিত্র লালন- ৯০৩)।
মায়ের ওপর আরও কিছু উদ্ধৃতি (Also some quotation on the mother)
“মায়ের কান্দন যাবতজীবন
দুই-চারমাস রয় বোনের কান্দন
ঘরের রমণীর কান্দন কয়েকদিন পর থাকে না
গর্ভধারিণী মা, জনমদুঃখিনী মা
দুঃখের দরদী আমার জনমদুঃখী মা।
দশমাস দশদিন মায়ে গর্ভে দিল ঠাঁই
রক্ত-মাংস খাইয়া মায়ের ভবে আইলাম তাই
ভূমিষ্ঠ হইয়া আমি উঠিলাম কান্দিয়া
শান্ত করিল মায়ে বুকের দুগ্ধ দিয়া
মায়েরও প্রসবের কালে
বুক ভেসে যায় নয়ন জলে
ও মা সন্তানেরে লইয়া কোলে
ভুলে প্রসব যন্ত্রণা।
হাতে পায়ে তোলে মাইখা মা দিল শক্ত করি
প্রসাব পায়খানা সবই মায়ের কোলেই করি
তবুও; না মা রাগ হয় ভিজে গুয়ে মুতে
আমায় শুকনায় রাখিয়া মা থাকে ভিজাতে
অসুখ হলে দেখি চাইয়া
মা রইসে বিছানায় বইয়া
বলে আমায় আল্লাহ যাও গো লইয়া
আমার সন্তানেরে নিয়ো না।
ল্যাংড়া আতুড় কানা খোড়া হইলে পরে ছেলে
ধুলা ঝাইড়া মায়ে তবু টান দিয়া লয় কোলে
পুত্র যদি কুপুত্র হয় মায়ে নাহি ফেলে
হাজার দোষ রাখিয়া গোপন মায়ে তবু পালে
শাহা আলম ভেবে বলে
জান্নাত মায়ের চরণতুলে
তোরা দেখ নবির হাদিস খুলে
করছে নবি ঘোষণা।” (শাহ আলম সরকার)।
গর্ভধারিণী (মা) অর্থে ‘মা’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology mother sense for generatrix)
১. “ধূলোর পাশা ফুলের গুটি, তাই নিয়ে মন আঁটাআঁটি, যখন চার ইয়ারে বাঁধবে কটি, কাঁদবেরে ভাই মা বাপে।” (পবিত্র লালন- ৪৮১/৩)।
২. “বলার যোগ্য নয় সে কথা, সাগরে ভাসে জগৎমাতা, লালন বলে মনরে- পিতা জন্মে মাতার উদরে, পত্নীর দুগ্ধ পান করল কিনা।” (পবিত্র লালন- ৫২৭/৪)।
৩. “মায়েরে মিছে প্রবোধ দিয়ে, নিমাই যায় সন্ন্যাসী হয়ে, লালন বলে ধন্য হিয়ে, ঘটে কী সামান্য জ্ঞানে।” (পবিত্র লালন- ৮৫১/৪)।
৪. “যখন ছিলি মায়ের উদরে, বলেছিলি গুরু ভজব গিয়ে সংসারে, বিষয়রাশি পেয়ে- মত্ত হয়ে, হলিরে মন ছারখার।” (পবিত্র লালন- ১০৭/২)।
কানাই অর্থে ‘মা’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology mother sense for leaky)
১. “আর আমারে মারিস না মা, বলি মা তোর চরণ ধরে, ননি চুরি আর করব না।” (পবিত্র লালন- ১৬৫/১)।
২. “ছেলের ভীরু অশ্রুজলে, মায়ের কভু হৃদ না গলে, মাপেতে সঠিক না হলে, দুইমুখে কামড়াইয়া খায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩১৩)।
৩. “নিত্য ভেবে নিত্য রেখ, লীলার বশে যেও নাকো, যে দেশেতে মহাপ্রলয়, মায়েতে পুত্র ধরে খায়, ভেবে বুঝে দেখ মনরায়, এমন দেশে কাজ কী গিয়ে।” (পবিত্র লালন- ৫৬৪/৩)।
৪. “বাবা মায়ে দিলো বিয়ারে, তিন-সতিনের ঘরে, সাড়ে তিন হাত দেহখানি, লুইটা খাইল পরেরে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২০৭)।
৫. “বাবা মায়ে যুক্তি করে- বিয়া দেয় সতিনের ঘরে, একদিনও সংবাদ নিলো না- দুই-সতিনে যুক্তি করে- পতি রাখে সিন্দুকে ভরে, পতি সোহাগ পাইলাম না।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১৩)।
৬. “মা করে লালনপালন মা মারে সন্তানের প্রাণ, প্রণাম জননির চরণে প্রণাম।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৫১)।
৭. “মিঠার জন্য এঁটো দিই মা, পাপ-পুণ্য-জ্ঞান থাকে না, গোপাল খেলে হই সান্ত্বনা, পাপ-পুণ্য কে ভাবে।” (পবিত্র লালন- ২৫৫/২)।
জরায়ু অর্থে ‘মা’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology mother sense for uterus)
১. “খিরকা ছিল মায়ের উদরে, নেংটা এলাম ভব মাঝারে, লালন বলে বিচার করে, তখন লজ্জা শরম ছিল না।” (পবিত্র লালন- ৯৩৭/৪)।
২. “দে মা কৃষ্ণধনকে গোষ্ঠে যাব, পাশাখেলিতে, ব্রহ্মা ডাকে নারদমুনিকে, নাগরদোলায় দুলিতে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৪৬)।
নারী অর্থে ‘মা’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology mother sense for female)
“শুনেছি ত্রিবেণীর ঘাটে, আজগুবি এক ফুল ফুটে, সে ফুল থাকে মায়ের পেটে, রসিক ধরে ফুল প্রেমডুরিতে।” (পবিত্র লালন- ৮৩১/৩)।
রজ অর্থে ‘মা’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology mother sense for menses)
“আদম বলো কোন নূরে হয়, মা হাওয়া সেকি নূর নয়, কয় রতী নূর ঝরে কোথায়, এর ভেদ খুলে বলো।” (পবিত্র লালন- ৬০৮/৪)।
মায়ের সংজ্ঞা (Definition of firstman)
সাধারণত; গর্ভধারিণীকে মা বলে।
মায়ের আধ্যাত্মিকর আধ্যাত্মিক (Theological definition of mother)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; শুক্রকে মা বলে।
মায়ের প্রকারভেদ (Variations of mother)
মা বা মাতা কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন; গর্ভধারিণী মা, দুধ মা, ভিক্ষা মা ও শ্বাশুড়ী মা। তবে; বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মা দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান মা ও ২. উপমিত মা।
ভিক্ষামা (বাপৌছ)বি ব্রাহ্মণের উপনয়নের সময়ে যে নারীর নিকট ভিক্ষা নিয়ে তাকে মা বলে গ্রহণ করা হয়।
১. উপমান মা (Analogical mother)
সাধারণত; গর্ভধারিণীকে উপমান মা বলে।
২. উপমিত মা (Compared mother)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; শুক্রকে উপমিত মা বলে।
মায়ের পরিচয় (Identity of mother)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শুক্র’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ বিশেষ। সারা বিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মতবাদে ‘মা’ পরিভাষাটির অত্যধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এটি; শ্বরবিজ্ঞানের ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘কানাই’, ‘জরায়ু’, ‘দেহ’, ‘নারী’, ‘রজ’ ও ‘শুক্র’ ইত্যাদি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’র রূপক ও ব্যাপক পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়। সেজন্য; এর সঠিক দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করা প্রত্যেক পাঠকের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। কদাচিৎ দুয়েক স্থানে ‘মা’ পরিভাষাটিকে গর্ভধারিণী রূপেও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। তবে; এমন ব্যবহার গণনাযোগ্য নয়। কারণ; গর্ভধারিণী মা সম্পর্কে বর্ণনা করা শ্বরবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু নয়। এজন্য; সমাজ বিজ্ঞান নামক পৃথক একটি বিষয়ই বিদ্যমান রয়েছে।
বড় দুঃখ ও অনুতাপের বিষয় হলো সারা পৃথিবীর সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী, বক্তা, আলোচক, ব্যৈখ্যিক, টৈকিক, অভিধানবিদ ও অনুবাদকরা শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত ‘মা’ পরিভাষাটির অভিধা বলতে কেবল গর্ভধারিণীকেই বুঝেন ও বুঝিয়ে থাকেন। সাম্প্রদায়িকরা যেন আত্মদর্শন জ্ঞানে চিরকালের চিরান্ধ। তাই; তারা মা কালী, মা দুর্গা, মা শচী, মা যশোদা, মা ফাতিমা, মা আয়েশা, মা খাদিজা ব্যাপারে কিছু লৌকিকা ব্যতীত আর কোনো দর্শন উপস্থাপন করতে পারে না। পারে না এদের পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষা প্রদান করতে। যেমন; মুসলমানদের মধ্যে একটি বাণী আছে- “ﺍﻟﺟﻨﺔ ﺗﺤﺖ ﺍﻘﺪﺍﻡ ﺍﻻﻤﻬﺎﺖ” উচ্চারণ; (আজ্জান্নাত তাহতা আক্বদামুল উম্মাহাত) “মাতার পদতলে স্বর্গ।” (The heaven underfoot of the mother)। আজ পর্যন্ত কোনো মুসলমান মনীষী, বক্তা ও আলোচক প্রমাণ করতে পেরেছে কী, কিভাবে মাতার পদতলে স্বর্গ? কথাটি একেবারেই সত্য। কিন্তু এর কল্পিত Mythological কোনো প্রমাণ (Evidence) নেই। তবে; এর আত্মাতাত্ত্বিক ঞযবড়ষড়মরপধষ প্রমাণ অবশ্যই রয়েছে।
উল্লেখ্য যে; শ্বরবিজ্ঞানে; মা হচ্ছে ‘শুক্র’ পা হচ্ছে ‘শিশ্ন’ এবং স্বর্গ হচ্ছে ‘জরায়ু’। সৃষ্টিজগতের সব দ্বিপস্থ প্রাণীর শুক্ররূপ মায়ের শিশ্নরূপ পায়ের নিচেই জরায়ু অবস্থিত। সেজন্য; এমন বলা হয়। স্মরণযোগ্য যে শ্বরবিজ্ঞানে; আগধড়, জরায়ু ও শান্তি ইত্যাদিকে স্বর্গ এবং পাছধড়, বৈতরণী ও অশান্তিকে নরক বলা হয়। অর্থাৎ; এখানে; ‘মা’, ‘পদ’, ‘সন্তান’ ও ‘স্বর্গ’ এ চারটিই ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’। শ্বরবিজ্ঞানে; ব্যবহৃত এসব ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’র সঠিক ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ না জানা ও না বুঝার পূর্বে কোনো এমন বাক্যের সঠিক শিক্ষা উদ্ঘাটন করতে পারবে না। শ্বরবিজ্ঞানের স্বর্গ-নরক এবং মাতা-পুত্র সূত্রদ্বয় নিচে তুলে ধরা হলো;
শ্বরবিজ্ঞানের স্বর্গ-নরক সূত্র (Heaven-Hades formula of the Theology)
১. বৈতরণীকে নরক ধরলে অবশ্যই বৈকুণ্ঠকে স্বর্গ ধরতে হবে।
২. মনকে নরক ধরলে অবশ্যই জ্ঞানকে স্বর্গ ধরতে হবে।
৩. পাছধড়কে নরক ধরলে অবশ্যই আগধড়কে স্বর্গ ধরতে হবে।
৪. শিষ্যকে নরক ধরলে অবশ্যই গুরুকে স্বর্গ ধরতে হবে।
৫. দেহকে নরক ধরলে অবশ্যই জরায়ুকে স্বর্গ ধরতে হবে।
৬. মন্দকে নরক ধরলে অবশ্যই ভালোকে স্বর্গ ধরতে হবে।
শ্বরবিজ্ঞানের মাতা-পুত্র সূত্র (Mother-Son formula of the Theology)
১. শুক্রকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই শিশ্নকে পুত্র ধরতে হবে।
২. দেহকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই শিশ্নকে পুত্র ধরতে হবে।
৩. কানাইকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই শিশ্নকে পুত্র ধরতে হবে।
৪. নারীকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই নরকে পুত্র ধরতে হবে।
৫. রজকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই সুধাকে পুত্র ধরতে হবে।
৬. জরায়ুকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই শিশ্নকে পুত্র ধরতে হবে।
৭. জরায়ুকে মাতা ধরতে হলে অবশ্যই সুধাকে পুত্র ধরতে হবে।
এখানে; ১.বৈতরণীর ক্ষেত্রে বৈকুণ্ঠকে স্বর্গ ধরা হয়েছে এবং ১.শুক্রের ক্ষেত্রে শিশ্নকে পুত্র ধরা হয়েছে। অর্থাৎ; মায়ের পদতলে স্বর্গ বাণীটি প্রমাণিত হলো।
আরও উল্লেখ্য যে; উপরোক্ত প্রায় শতাধিক উদ্ধৃতির মধ্যে মাত্র ৪টি হলো গর্ভধারিণী অর্থে। অবশিষ্টগুলো অন্যান্য অর্থে। এছাড়াও; আলোচ্য বাণীটির মধ্যে সন্তান পরিভাষাটির তো উল্লেখ নেই। কিন্তু এ উপমহাদেশের সর্বপ্রকার মুসলমান মনীষী, বক্তা ও আলোচকরাই তো বলে বেড়াচ্ছে- “মায়ের পদতলে সন্তানের স্বর্গ।” কেউ তো এ ভুলের প্রতিবাদ করছে না। অবস্থাদৃষ্টে বলা যায় ভুল হতেই ভুলের সৃষ্টি। আলোচনার উপসংহারে এসে শক্ত করেই বলা যায় যে শ্বরবিজ্ঞানে; বর্ণিত ‘মা’ পরিভাষাটির দ্বারা কখনই গর্ভধারিণী বুঝায় না বরং এর দ্বারা ‘কানাই’, ‘জরায়ু’, ‘দেহ’, ‘নারী’, ‘রজ’ ও ‘শুক্র’ ইত্যাদি বুঝায়। তবে; এখানে; বিশেষ করে শুক্রকে বুঝানো হয়েছে। আলোচনাটিও ছিল শুক্র প্রসঙ্গে। এমনই ভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার পরও শুভ বোধোদয় হবে কী সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকদের?
ভাত সব টিপে দেখার প্রয়োজন হয় না। কেবল দুয়েকটি টিপে দেখলেই চলে। এ সূত্র ধরেই বলা যায়; ওপরে লালন ও বলন উপস্থাপন করা হয়েছে। এর সাথে পবিত্র বেদ, ত্রিপিটক, তৌরাত, যাবুর, ইঞ্জিল, কুরান, হাদিস, তাফসির, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ ও আগম ইত্যাদি উপস্থাপন করলেও ফলাফল একই আসবে। সর্বশেষ নিবেদন হলো; সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক গোঁড়ামি ও সাম্প্রদায়িক অন্ধবিশ্বাস পরিত্যাগ করে আসুন আত্মদর্শন বা আত্মতত্ত্ব ভেদ গ্রহণ করি। নিজকে নিজে জানি এবং আত্মনির্মাণ করি।
তথ্যসূত্র (References)
(Theology's number formula of omniscient theologian lordship Bolon)
১ মূলক সংখ্যা সূত্র (Radical number formula) "আত্মদর্শনের বিষয়বস্তুর পরিমাণ দ্বারা নতুন মূলক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়।"
রূপক সংখ্যা সূত্র (Metaphors number formula)
২ যোজক সূত্র (Adder formula) "শ্বরবিজ্ঞানে ভিন্ন ভিন্ন মূলক সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন যোজক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, গণিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায় না।"
৩ গুণক সূত্র (Multiplier formula) "শ্বরবিজ্ঞানে এক বা একাধিক মূলক-সংখ্যার গুণফল দ্বারা নতুন গুণক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৪ স্থাপক সূত্র (Installer formula) "শ্বরবিজ্ঞানে; এক বা একাধিক মূলক সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে স্থাপন করে নতুন স্থাপক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৫ শূন্যক সূত্র (Zero formula) "শ্বরবিজ্ঞানে মূলক সংখ্যার ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন শূন্যক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
< উৎস [] উচ্চারণ ও ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত () ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত > থেকে √ ধাতু => দ্রষ্টব্য পদান্তর :-) লিঙ্গান্তর অতএব × গুণ + যোগ - বিয়োগ ÷ ভাগ
- A great 70% flat rate for your items.
- Fast response/approval times. Many sites take weeks to process a theme or template. And if it gets rejected, there is another iteration. We have aliminated this, and made the process very fast. It only takes up to 72 hours for a template/theme to get reviewed.
- We are not an exclusive marketplace. This means that you can sell your items on PrepBootstrap, as well as on any other marketplate, and thus increase your earning potential.