৪৮/১৫. লালন
Cherisher (চেরিশার)/ ‘مربي’ (মুরাব্বিয়া)
ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পালনকর্তা’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘পালনকর্তা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘সাঁই’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘অমৃতসুধা, গ্রন্থ, চন্দ্র, জল১, তীর্থবারি, পাখি৬, ফল ও ফুল১’। এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘ননি, বিষ্ণু, মাণিক, রাজা, রাম, স্বরূপ ও হরি’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘ঈশ্বর, উপাস্য, চোর, পতিতপাবন, পরমগুরু, প্রভু, মনের-মানুষ ও সুধা’।
অভিধা (Appellation)
লালন (বাপৌচা)বি লালক, পালক, পোষক, অত্যন্ত যত্নসহকারে পালন, মাতৃগর্ভে ভ্রূণ লালনপালন করে যে বিণ যত্নকারী, সেবাকারী, লালনপালনে নিয়োজিত, পালনকারী, লালনপালনে নিয়োজিত, পোষণকারী, প্রতিপালনকারী, পরিচর্যাকারী, শুশ্রূষাকারী, সেবা শুশ্রূষাকারী, cherisher, ‘مربي’ (মুরাব্বিয়া) (প্রাঅ) আরাধ্য, আরাধিত, পূজিত, উপাসনার যোগ্য, guardian, adored, adorable, রব (আ.ﺮﺐ), ‘إله’ (ইলা) (প্র) ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালী প্রসিদ্ধ মরমী কবি লালন সাঁইজি। তিনি জগদ্বিখ্যাত আত্মজ্ঞানী ও আধ্যাত্মিক দার্শনিক ছিলেন। তাঁকে বাংলাদেশের সব আধ্যাত্মিক গুরুর গুরু বা আধ্যাত্মিক সম্রাটও বলা হয়। তিনি বাঙলা ভাষাভাষীদের মধ্যে সর্বপ্রথম বিশিষ্ট আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি প্রায় ১,০০০টি ঐশিবাণী নির্মাণ করে গেছেন (শ্ববি) এমন তরল-মানুষ; যে এখনও মূর্তাকার ধারণ করে নি। মাতৃগর্ভে ভ্রূণ লালনপালনের দায়িত্ব পালনকারী সুমিষ্ট, সুপেয় ও শ্বেতবর্ণের জল (রূপ্রশ) ঈশ্বর, গুরু, গোঁসাই, নারায়ণ, নিধি, নিমাই, নিরঞ্জন, পালনকর্তা, বিষ্ণু, বুদ্ধ, পতি, প্রভু, সাঁই, স্বামী, স্বরূপ (পারদে) খোদা (ফা.ﺨﺪﺍ) (ইদে) মুহাম্মদ (আ.ﻤﺤﻤﺪ), রাসুল (আ.رَسُول) (ইপ) কাওসার (আ.ﻜﻭﺛﺮ), ফুরাত (আ.ﻔﺭﺍﺖ) (ইংপ) God, nectar, elixir (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পালনকর্তা’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সারা জগতের পালনকর্তাকে সাঁই বা লালন বলা হয় ২. মাতৃগর্ভে ভ্রূণ লালনপালনে নিয়োজিত শ্বেতবর্ণের অমৃত মানবজলকে পালনকর্তা বা রূপকার্থে লালন বলা হয় (বাপৌছ) ঈশ্বর, উপাস্য, চোর, পতিতপাবন, পরমগুরু, প্রভু, মনের-মানুষ ও সুধা (বাপৌচা) ননি, বিষ্ণু, মাণিক, রাজা, রাম, লালন, স্বরূপ ও হরি (বাপৌউ) অমৃতসুধা, গ্রন্থ, চন্দ্র, জল১, তীর্থবারি, পাখি৬, ফল ও ফুল১ (বাপৌরূ) সাঁই (বাপৌমূ) পালনকর্তা।
কবি লালন অর্থে ‘লালন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology cherisher sense for poet cherisher)
১. “এ মানুষে আছেরে ধন, যারে বলে মানুষ-রতন, লালন বলে পেয়ে সে ধন, পারলাম না চিনতে।” (পবিত্র লালন- ১২৪/৪)।
২. “পড়শি যদি আমায় ছুঁতো, যম যাতনা সকল যেত দূরে, সে আর লালন একখানে রয়, তবু সহস্র যোজন ফাঁকরে।” (পবিত্র লালন- ১২৯/৪)।
উপাস্য লালন অর্থে ‘লালন’ পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology cherisher sense for adored cherisher)
১. “আত্মাকর্তা কারে বলি, কোন মুক্বামে তার গলি, কোথায় আওনা যাওনা, সে মহলে লালন কোনজন, তাও লালনের ঠিক হলো না।” (পবিত্র লালন- ৯৯৯/৪)।
২. “সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে, লালন বলে জাতির কিরূপ, দেখলাম না এ নজরে।” (পবিত্র লালন- ৯১৩/১)।
৩. “সবাই বলে লালন ফকির, হিন্দু কী যবন, লালন বলে আমি আমার, না জানি সন্ধান।” (পবিত্র লালন- ৯১৯/১)।
লালনের সংজ্ঞা (Definition of cherisher)
সাধারণত; সারা জগতের সাম্প্রদায়িকদের পালনকর্তাকে লালন বলে।
লালনের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of cherisher)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; মাতৃগর্ভে ভ্রূণ লালনপালনে নিয়োজিত শ্বেতবর্ণের অমৃত মানবজলকে পালনকর্তা বা রূপকার্থে লালন বলে।
লালনের প্রকারভেদ (Variations of cherisher)
লালন, লালন কাব্য, লালন লৌকিকা, ও লালন দেবতা ইত্যাদিকে সাধারণভাবে লালন বলে ডাকা হয়। এতে পাঠক ও শ্রোতার লালনগুলোর ভাব বুঝতে অনেক সমস্যা হয়। এমনকি; অধিকাংশ ক্ষেত্রে পাঠক ও শ্রোতারা লালনের সত্তা নিয়ে পুরো গোলমালে পতিত হয়। এ সমস্যার সমাধানের জন্য আত্মজ্ঞানী মনীষীগণ লালনগুলোকে মোট চারভাগে ভাগ করেছেন। যথা; ১. ব্যক্তি লালন ২. লালন কাব্য ৩. লালন লৌকিকা ও ৪. লালন দেবতা।
১. ব্যক্তি লালন (Person cherisher)
দেহ, আত্মা, মন ও জ্ঞানসহ লালনগুলোর লেখককেই ব্যক্তি লালন বলা হয়।
ব্যক্তি লালন দুই প্রকার। যথা; ১. প্রয়াণ পূর্ব লালন ও ২. প্রয়াণোত্তর লালন।
১. প্রয়াণপূর্ব লালন (Before death cherisher)
লালন সাঁইজির প্রয়াণপূর্ব সব কার্যকলাপকে প্রয়াণ পূর্ব লালন বলে।
লালন সাঁইজি ছদ্ম নামধারী ক্ষণ জন্মা এ বাঙালী মহাপুরুষের, অন্যান্য মহাসাধকগণের মতো, সামাজিক নাম বসতি ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগতযোগ্যতা, কিছুই জানা যায় না। তবে; তিনি তৎকালে বাংলা ও আরবি উভয় প্রাঠ্যক্রমে সর্বোচ্চ উপাধি অর্জন করেছিলেন, তা তার অনবদ্য সৃষ্টি অনন্য লালনগুলোতে, অসংখ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। ব্যক্তি লালন গত ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে আবির্ভূত হন এবং গত ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া অঞ্চলের ছেউড়িয়া গ্রামে প্রয়াণলাভ করেন।
২. প্রয়াণোত্তর লালন (After death cherisher)লালন সাঁইজির প্রয়াণ পরবর্তী অবস্থাকে প্রয়াণোত্তর লালন বলে।
মনে রাখতে হবে যে; যে কোনো প্রয়াত লোকের সত্তা ২টি। যথা; ১. প্রয়াণোত্তর ব্যক্তি-সত্তা ও ২. লৌকিকা।
২. লালন কাব্য (Cherisher poetic work)
লালন সাঁইজির নির্মিত লালনগুলোকে লালন কাব্য বলে।
লালন সাঁইজির কাব্য-সত্তাকে সংক্ষেপে লালন বলা হয়। যা বর্তমান সারাবিশ্বে “লালনগীতি” নামে পরিচিত। বাংলা ভাষার এ ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ তার জীবনে মোট হাজার (১,০০০)টি লালন নির্মাণ করেছিলেন বলে কথিত রয়েছে। তবে; কোনো কোনো গবেষকের ধারণা মতে; তাঁর নির্মিত লালনের সংখ্যা আরও অধিক হতে পারে। সব লালন কারো নিকট একত্র গচ্ছিত নেই। যেসব লালনের মধ্যে ভনিতা রূপে লালন পরিভাষাটি উল্লেখ রয়েছে, আমরা শুধু সেগুলোকেই প্রকৃত লালন রূপে গ্রহণ করব। প্রকৃত লালনগুলো সংগ্রহ করে তা নির্ভুল রূপে পাঠ করার জন্য, অত্র গ্রন্থটিতে প্রতিটি পরিভাষা সঠিকভাবে, সংযোজন করতে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা সাধনা করেছি।
৩. লালন লৌকিকা (Cherisher legendary)
বাস্তব-অবাস্তর ও রূপক-ব্যাপকের হ্রাস বৃদ্ধিসহ ব্যক্তির প্রয়াণপূর্ব ও প্রয়াণোত্তর আলোচনা ও সমালোচনার দ্বারা, জনসাধারণের মুখে মুখে, যে সত্তার অস্তিত্বলাভ করে তাকে লৌকিকা বলে।
বাস্তব-অবাস্তর ও রূপক-ব্যাপকের হ্রাস বৃদ্ধিসহ লালন সাঁইজির প্রয়াণপূর্ব ও প্রয়াণোত্তর আলোচনা ও সমালোচনার দ্বারা, জনসাধারণের মুখে মুখে, যে সত্তার অস্তিত্বলাভ করেছে তাকে লালন লৌকিকা বলে।
৪. লালন দেবতা (Cherisher deity)
‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’তে বর্ণিত ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’র মধ্য একটি হলো লালন বা পালনকর্তা। যেহেতু; মহান মরমীকবি লালন সাঁইজি এ ছদ্ম নামটি গ্রহণ করেই আত্ম প্রকাশ করেছেন। এজন্য; লালন নামক এ ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্র’কে লালন দেবতা বলে।
আবার, বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে লালন দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান লালন ও ২. উপমিত লালন।
১. উপমান লালন (Analogical cherisher)
সাধারণত; সারা জগতের পালনকর্তাকে সাঁই বা উপমান লালন বলে।
২. উপমিত লালন (Compared cherisher)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে মাতৃগর্ভে ভ্রূণ লালনপালনে নিয়োজিত শ্বেতবর্ণের অমৃত মানবজলকে পালনকর্তা বা উপমিত লালন বলে।
ললিত কেন ছদ্মনাম ‘লালন’ গ্রহণ করলেন (Why took lalit as pseudonym cherisher?)
শ্বরবিজ্ঞানের ষড়াশ্রয়ে প্রবেশ করার পর, বিশ্বের কোনো সাধু সন্ন্যাসীই, পিতা-মাতার রাখা সামাজিক নামটি ব্যবহার করতে পারেন না। কারণ; পিতা-মাতার রাখা নামটি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিশ্বজনীন, কিংবা সার্বজনীন হয় না কিংবা উক্ত নামটি বিশ্বের সব ব্যক্তির মধ্যে খোঁজে পাওয়া যায় না। এজন্য; রূপকারগণ ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’তে বর্ণিত ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা এর রূপক নামে’র মধ্যে থেকে একটি সুন্দর ও অনুপম নাম ছদ্ম নাম রূপে গ্রহণ করেন। অতঃপর; তিনি সে নামেই আত্ম প্রকাশ করেন। যাজকগণের ছদ্মনাম গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই, তাঁর জন্মদিবস জন্মস্থান বংশ-গোত্র কিংবা শিক্ষাগতযোগ্যতা সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যায়। যারফলে; তিনি আবার নতুন করে, তাঁর জন্মদিবস, জন্মস্থান ও বংশ-গোত্র ইত্যাদি, নিজেই রূপকার্থে নির্মাণ করেন। এজন্য; আধ্যাত্মিক মহামানবগণের জন্মদিবস, জন্মস্থান ও বংশ-গোত্র ইত্যাদির কোনকিছুই, সঠিকভাবে জানা যায় না। যা জানা যায় তার পুরোটাই রূপক এবং নির্মাণ সূত্রগুলোও এক ও অভিন্ন। এজন্য; বাস্তবে অনুসন্ধান করেও দেখা যায়- শ্রীকৃষ্ণ, হযরত মুহাম্মদ ও বড় পিরের জন্মদিন এক ও অভিন্ন।
ক্ষুদে বিশ্ব নামক মানবদেহে যত দেবতা রয়েছে তার মধ্যে জরায়ুতে ভ্রূণরূপ সন্তান লালনপালনের দায়িত্ব পালনকারী দেবতাই সর্বপ্রধান। তিনি দ্বিপস্থ প্রজাতির সব জীবের মধ্যেই বিরাজ করেন। তাই; বলা যায় তিনি ভ্রূণ লালনপালনের দায়িত্ব পালন না করলে, বিশ্বের কোনো দ্বিপস্থ জীবের বংশ বৃদ্ধিই সম্ভব হবে না। বিশ্বের সব জীবের ভ্রূণ লালনপালনে নিয়োজিত এ দেবতার নামই বিশ্বকর্মা বা বিশ্বের প্রতিপালক। তিনি বিশ্বের সব জীবের জরায়ু বা জরায়ুতে বসে, সব দেহবিশ্ব সৃষ্টি করেন। শ্বরবিজ্ঞানে প্রতিটি দেহকে ক্ষুদেবিশ্ব বলা হয়। সৃষ্টি কুলের প্রতিটি প্রজাতির জীবের একটি দেহের তুলনায় সব দেহ সমান। এজন্য; একটি মানবদেহের তুলনায় সব দেহই সমান। একটি মানবদেহে যে পরিমাণ ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা’ রয়েছে বিশ্বের সব মানবদেহে ন্যূনাধিক প্রায় সমান সংখ্যক জৈবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই; বলা যায় দেহ মাত্র একটি। জীবের পুনর্জন্ম বা সন্তান দেহের রূপান্তর মাত্র।
জীবদেহে বিশ্বকর্মা লালন বা সাঁইয়ের অস্তিত্ব একমাত্র মানুষ ও মৌমাছিই প্রমাণ করতে পারে। মৌমাছি ফুলের গর্ভাশয় হতে মধুরূপ লালন বা বিশ্বকর্মা সদৃশ সাঁইরস আহরণ করে, তা চাকে সঞ্চয় করে। তখন তাকে আমরা মধু বলে থাকি। তেমনই; সাধু সন্ন্যাসীগণ সাধনবলে মানবদেহে উৎপন্ন মস্তিষ্ক মেরুজল (Cerebro spinal fluid) বা জীবজল আহরণ করে আনলে, তাকে আমরা ‘সাঁই’ বলে থাকি। বিশ্বকর্মা বিশ্বের সব জীবদেহকে সমানভাবে সুগঠন করে থাকেন। তিনিই বিশ্বের আদি-লালনকর্তা। বিশ্বের সব জীব জরায়ুর মধ্যে বা ডিমের ভিতরে সুষম বর্ধিত হওয়ার পর যথা সময়ে ভূমিষ্ঠ হয়। অতঃপর; অন্তপালক পিতা-মাতা স্ব-স্ব সন্তানের লালনপালনের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বিশ্বের প্রতিটি জীবের আদি-লালনপালনে নিয়োজিত এ বিশ্বকর্মাই হলেন আলোচ্য ‘লালন’। লালনগুলোর রচয়িতা ‘লালন’ তাঁর একটি ছদ্মনাম এবং ‘সাঁইজি’ তাঁর উপাধিমাত্র। যেমন; বলা যায়; মহাজ্ঞানী তেমনই, অনুপম ছদ্মনাম। লালন সাঁইজির আবির্ভাবের প্রায় বারোশত (১,০০০) বছর পূর্বে ত্রিতয় (কুরান. قُرَانُ) নামক মহাগ্রন্থটির নির্মাতাও এ একই উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। তবে; তিনি আরবি ভাষাভাষী হওয়াই তাঁর ছদ্ম নামটি হয় ‘মুহাম্মদ (ﻤﺤﻤﺩ)’।
মুহাম্মদ [ﻤﺤﻤﺪ] (আপৌচা)বি অধিক প্রশংসিত, অত্যন্ত প্রশংসার পাত্র (পরি) ১. তরল-মানুষ; যে এখনও মূর্তাকার ধারণ করে নি ২. মাতৃগর্ভে অবতরণ করে ভ্রূণ লালনপালনের দায়িত্ব পালনকারী সুমিষ্ট সুপেয় ও শ্বেতবর্ণের জীবজল বিশেষ (প্র) ১. মুসলমানদের নামের পূর্বে ব্যবহৃত পরিভাষা বিশেষ ২. ইসলামী পুরাণ অনুসারে; আরব্য বংশোদ্ভূত কুরানে বর্ণিত মুহাম্মদ- যিনি আরবি ভাষার বিশ্ব বিখ্যাত মহাগ্রন্থ কুরানের রচয়িতা ৩. মানবদেহের সর্বশেষ দেবতা (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পালনকর্তা’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ও শ্বরবিজ্ঞানের একটি ‘দেবতা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; সর্বপ্রকার প্রশংসিত ব্যক্তিকেই ‘ﻤﺤﻤﺪ’ মুহাম্মদ বলা হয় ২. মাতৃগর্ভে জীবের লালনপালনে নিয়োজিত রসকে পালনকর্তা বা ‘ﻤﺤﻤﺪ’ মুহাম্মদ বলা হয় (শ্ববি) পালনকর্তা, ঈশ্বর, প্রভু, বিষ্ণু, বুদ্ধ, স্বামী, guardian, রব (আ.ﺮﺐ) (রূপ্রশ) উপাস্য, নারায়ণ, নিধি, নিমাই, নিরঞ্জন, সুধা, সোম, স্বরূপ (ইংপ) God, nectar, elixir (ফাপ) আবেহায়াত (ফা.ﺁﺐﺤﻴﺎﺖ) (ইপ) কাওসার (আ.ﻜﻭﺛﺮ), ফুরাত (আ.ﻔﺭﺍﺖ) (পারদে) খোদা (ফা.ﺨﺪﺍ) (ইদে) মাবুদ (আ.ﻤﻌﺑﻭﺪ), রাসুল (আ.ﺮﺴﻭﻝ) (বাপৌছ) ঈশ্বর, উপাস্য, চোর, পতিতপাবন, পরমগুরু, প্রভু, মনের-মানুষ ও সুধা (বাপৌচা) ননি, বিষ্ণু, মাণিক, রাজা, রাম, লালন, স্বরূপ ও হরি (বাপৌউ) অমৃতসুধা, গ্রন্থ, চন্দ্র, জল১, তীর্থবারি, পাখি৬, ফল ও ফুল১ (বাপৌরূ) সাঁই (বাপৌমূ) পালনকর্তা {আ}
বিশ্বের মধ্যে বিশ্বকর্মা লালনই সর্বাধিক প্রশংসার যোগ্যপাত্র। স্বয়ং উপাস্য হওয়াই, তিনি সর্বাধিক প্রশংসার যোগ্যপাত্র হওয়ার উপযুক্ত। মহাপ্রশংসার যোগ্যপাত্র লালন পরিভাষাটির আরবিভাষার রূপক অনুবাদ ‘মুহাম্মদ (ﻤﺤﻤﺩ)’ এবং ইংরেজি ভাষায় রূপক অনুবাদ God লালন, বিষ্ণু, মুহাম্মদ (ﻤﺤﻤﺩ) ও God এ পরিভাষাগুলোর প্রকৃত-সত্তা এক ও অভিন্ন। এ পরিভাষাগুলোর সত্তাটি হলো; বাংলাভাষায় ‘সাঁই’। লালন (ছদ্মনাম), লালনগুলোর মধ্যে নিহিত লালন (সাঁই) ও লালনগুলোর রচয়িতা লালন (ব্যক্তি)। এগুলো সম্পূর্ণরূপে ভিন্নিভিন্ন তিনটি সত্তা। যদিও সাধারণ মানুষ সহজে বিচার বিশ্লেষণ করে বের করতে না পেরে এ ত্রি-সত্তাকে একই সত্তা মনে করে প্রতিনিয়ত তর্ক বিতর্কে লিপ্ত হচ্ছে।
সাধারণত; স্থান, কাল, পাত্র ও ভাষার ব্যবধান থাকলেও বিশ্বের সর্ব ভাষার সর্ব সাম্প্রদায়িক মতবাদের চমৎকার নির্মাণের মূল উপাদান; শ্বরবিজ্ঞানের ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’তে বর্ণিত ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’, ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্যা’ ও ‘পৌরাণিক রূপক সংখ্যা’গুলোর বাইরে নয়। বিশ্বের সব পুরাণ নির্মাণের মূল উপাদান ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা’, ‘পৌরাণিক মূলক সংখ্য’ ও ‘পৌরাণিক রূপক সংখ্যা’ সূত্রগুলো এক ও অভিন্ন। তবে; ভাব ভাষা ও উপমা নির্মাণের শিল্প নৈপুন্যতা ভিন্ন ভিন্ন হওয়া আবশ্যক। তা না হলে একটি অন্যটির অবিকল বা হুবহু বলে গণ্য হবে, একটি অন্যটির অনুলিপি বা প্রতিলিপি বা অনুকরণ বা অনুবাদ বলে গণ্য হবে। যারফলে; স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা থাকবে না পৌরাণিক সাহিত্যাদির।
এজন্য; একই ভাষায় বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন লেখক গবেষক ও গীতিকারগণের দ্বারা পুরাণ বা মরমী সঙ্গীত নির্মিত হলে; একটি হতে অন্যটি নির্মাণের ব্যবধান যতযুগ বা যত শতাব্দীই হোক না কেন; একটি অন্যটির ভাব উপমা ও শিক্ষাও প্রায় এক ও অভিন্ন বলে ধারণা হয়। অথবা পরেরটি পূর্বেরটির অনুকরণ বা ভাবচুরি বলে মনে হয়। আরও স্মরণীয় যে; পুরাণের বিশ্ববিদ্যালয় তো একমাত্র মানবদেহ। মানবদেহের কার্যাবলী ও রহস্যাবলী নিয়ে বিশ্বের যে কোনো ভাষায় যে কোনো সময়, যে কোনো নির্মাতা বা যে কোনো রূপকার মনীষীই সাহিত্য বা উপন্যাস নির্মাণ করুক না কেন, তার একাধিক গ্রন্থ যখনই কোনো একটি ভাষায় রূপান্তরিত বা অনুবাদ করা হবে, তখনই সেটা এক ও অভিন্ন বলে প্রতীয়মান হবে। আরও পরিষ্কার করে বলা যায় যে; বিশ্বের সব পুরাণ একত্রিত করলে; ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ নির্মাণ ও উপখ্যানগুলোর নির্মাণশৈলীর মধ্যে সামান্য পার্থক্য দেখা যেতে পারে; কিন্তু ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ও ‘পৌরাণিক সংখ্যা’গুলোর ব্যবহারের মধ্যে কোথাও সামান্য পার্থক্যও দেখা যাবে না।
লালনের পরিচয় (Identity of cherisher)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘পালনকর্তা’ পরিবারের একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ বিশেষ। সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুস্তক-পুস্তিকায় এর ন্যূনাধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে; এ পরিভাষাটি একেক গ্রন্থে একেক ভাষায় ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠক- শ্রোতাদের তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না।
আগেই পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া উচিত যে; আলোচ্য লালন বাংলাদেশের কবি লালন নন। তবুও; আলোচনার জন্য কবি লালনের প্রসঙ্গ যতটুকু এসেছে তা প্রাসঙ্গিক বলেই মনে হয়েছে। সারাজগতের লালনপালনে নিয়োজিত অধিপতিই মানুষের একমাত্র লালন হওয়া উচিত। জগৎ বলতে দেহ। দেহ লালিতপালিত হয় গর্ভের মধ্যে। লালন নামক এক প্রকার শ্বেতবর্ণ জল জরায়ুর মধ্যে সব জীবের ভ্রূণ লালনপালন করেন বলেই লালনকে পালনকর্তা বা লালন বলা হয়। শ্বরবিজ্ঞানের বাউল, নাড়া, সাঁইজি ও কাঁইজিরা যদিও সংখ্যায় স্বল্প, তবুও; কেবল তারাই লালনকে মানবের একমাত্র লালন রূপে স্বীকার করে থাকেন এবং রীতিমত তাঁর উপাসনাও করে থাকেন। অন্য দিকে সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক আউলরা নিরাকার ও স্বায়ম্ভু এ দুটি বৈশিষ্ট দ্বারা লালন অন্বেষণ করতে গিয়ে বর্তমানে সারাবিশ্বের সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে বাধ্য হয়েছেন। নিরাকার কোনো সত্তা মানবের লালন হতে পারে না। ক্ষুদ্র জীবনে মানুষ কোনো সত্তার উপাসনা করে অধিক লাভবান হতে পারে? এমন চিন্তাভাবনা করে নিরাকার উপাস্যের উপাসনা করার মতবাদটি পরিত্যাগ করে সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিকদের সাকার লালন গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। পরিশেষে বলা যায় দুগ্ধ, শুক্র, সুধা ও মধু এ চারটি মানবজল ব্যতীত মানুষের অন্য কোনো লালন নেই। এজন্য; নিরাকার উপাস্যের উপাসনা করা মানুষের কখনই প্রয়োজন নেই।
পরিশেষে বলতে চাই মৃত্যুর পর যে সৃষ্টিকর্তার সাথে দেখা হওয়া ও বিচার আচার করার কথা সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক মনীষী ও বক্তারা নির্দ্বিধায় প্রচার-প্রসার করে যাচ্ছে। সে মৃত্যু সম্পর্কে সাধারণ মানুষ না জেনে ও না বুঝেই তাদের কথায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। যে মৃত্যুর পর সৃষ্টিকর্তার সাথে দেখা হয় এবং তিনি বিচার-আচার করে থাকেন তা হলো ‘শুক্রপাত’। শ্বরবিজ্ঞানে; শুক্রপাতকেই মৃত্যু বলা হয়। মৃত্যু ও প্রয়াণ কখনই এক নয়। এজন্য; মৃত্যুকে প্রয়াণ মনে করা কিংবা প্রয়াণকে মৃত্যু মনে করাও সঠিক নয়। অথচ সাম্প্রদায়িক মনীষী ও বক্তারা মৃত্যুকেই প্রয়াণ রূপে বর্ণনা করে থাকে। তারা নিজেরাও জানে না যে; তারা কী বর্ণনা করছে, কার নিকট বর্ণনা করছে, কেন বর্ণনা করছে।
পরিশেষে এমন বলা যায় যে; সাম্প্রদায়িক মতবাদ হলো কেবলই পৌরাণিক কাহিনী বা Mythology বা Fabulous কিংবা Symbolic theosophy। কিন্তু মরমীবাদ হলো বাস্তববাদ বা Theology। উল্লেখ্য যে; আত্মদর্শন দুই প্রকার। যথা; ১. বাস্তব আত্মদর্শন বা Real theosophy ও ২. প্রতীকী আত্মদর্শন বা Symbolic theosophy।
লালনের স্বরূপ উদ্ঘাটন (The sooth revelation of saviour)
সারাবিশ্বে অসংখ্য মতবাদ প্রচলিত আছে। তারমধ্যে; সর্বোত্তম মতবাদ হচ্ছে আত্মদর্শন। এর ওপরে আর কোনো মতবাদ আছে বলে জানা নেই। এ মতবাদের দ্বারা পুরাণ নির্মাণ হতে আরম্ভ করে এর ব্যাখ্যা ও টীকা সবই করা হয়। এ আত্মদর্শন হতে সৃষ্ট পুরাণই পরবর্তীকালে সাম্প্রদায়িক গ্রন্থ (ধর্মীয় গ্রন্থ) পর্যায়ে উন্নীত হয়। সারা বিশ্বের অধিকাংশ আত্মজ্ঞানী মনীষীর মতে; আলোচ্য লালন হচ্ছে দ্বিপস্থ জীবের জরায়ুর মধ্যে জীবের ভ্রূণ লালনপালনের দায়িত্ব পালনকারী জল। ভ্রূণথলির মধ্যে প্রবেশ করবার পূর্বে একে অমৃত বা সুধা বলা হয়। কিন্তু এ জল সন্তান লালনপালনের জন্য ভ্রূণথলির মধ্যে প্রবেশ করলে একে লালন বলা হয়। সাধু-সন্ন্যাসীরা লালন পান করেন না। বরং তারা অমৃত বা সুধা পান করেন। লালন সন্তান প্রসবের সময়ে আপনাপনি বের হয়। কিন্তু অমৃত বা সুধা সারা জীবনে কখনই আপনাপনি বের হয় না। সবার সত্য জানা ও বুঝার বোধ উদয় হোক এই কামনা রেখে আলোচনা শেষ করলাম।
তথ্যসূত্র (References)
(Theology's number formula of omniscient theologian lordship Bolon)
১ মূলক সংখ্যা সূত্র (Radical number formula) "আত্মদর্শনের বিষয়বস্তুর পরিমাণ দ্বারা নতুন মূলক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়।"
রূপক সংখ্যা সূত্র (Metaphors number formula)
২ যোজক সূত্র (Adder formula) "শ্বরবিজ্ঞানে ভিন্ন ভিন্ন মূলক সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন যোজক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, গণিতে ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা-সহগ যোগ করে নতুন রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায় না।"
৩ গুণক সূত্র (Multiplier formula) "শ্বরবিজ্ঞানে এক বা একাধিক মূলক-সংখ্যার গুণফল দ্বারা নতুন গুণক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৪ স্থাপক সূত্র (Installer formula) "শ্বরবিজ্ঞানে; এক বা একাধিক মূলক সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে স্থাপন করে নতুন স্থাপক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
৫ শূন্যক সূত্র (Zero formula) "শ্বরবিজ্ঞানে মূলক সংখ্যার ভিতরে ও ডানে শূন্য দিয়ে নতুন শূন্যক রূপক সংখ্যা সৃষ্টি করা যায়; কিন্তু, মূলক সংখ্যার কোন পরিবর্তন হয় না।"
< উৎস [] উচ্চারণ ও ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত () ব্যুৎপত্তির জন্য ব্যবহৃত > থেকে √ ধাতু => দ্রষ্টব্য পদান্তর :-) লিঙ্গান্তর অতএব × গুণ + যোগ - বিয়োগ ÷ ভাগ
- A great 70% flat rate for your items.
- Fast response/approval times. Many sites take weeks to process a theme or template. And if it gets rejected, there is another iteration. We have aliminated this, and made the process very fast. It only takes up to 72 hours for a template/theme to get reviewed.
- We are not an exclusive marketplace. This means that you can sell your items on PrepBootstrap, as well as on any other marketplate, and thus increase your earning potential.