৯১/১. সন্ধ্যা
Evening (ইভিনিং)/ ‘ﻤﺴﺎﺀ’ (মাসা)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শেষ প্রহর’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘শেষ প্রহর’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘অর্যমা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘সায়ন্ত’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘রবিবার’।

অভিধা (Appellation)
সন্ধ্যা (ভাপৌঊ)বি সন্ধ্যে, সন্ধে, সাঁঝ, গোধুলি, সন্ধিক্ষণ, অন্তিম, শেষ, বেলা, সময়, দিন ও রাতের মিলনকাল, রাত্রির আরম্ভ, সন্ধ্যাবেলা, যুগসন্ধি, যুগের অবসান, জীবনের শেষ মুহূর্ত, evening, ‘ﻤﺴﺎﺀ’ (মাসা) (শ্ববি) মুমুর্ষুকাল, শেষসময়, nigntfall, dusk, আখির ওয়াক্ত (আ.ﺍﺨﺮ ﻮﻗﺖ) (রূপ্রশ) বিকাল, সাঁঝ (ইপ) এশা (আ.ﻋﺸﺎﺀ), মাসায়া (আ.ﻤﺴﺎﺀ), শবেক্বদর (ফা.ﺸﺑﻰ ﻘﺪﺭ) (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শেষ প্রহর’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; কোনকিছুর সর্বশেষ প্রহরকে রূপকার্থে ‘সন্ধ্যা’ বলা হয় ২. বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে, রজস্বলাদের পবিত্রতার শেষ প্রহরকে রূপকার্থে ‘সন্ধ্যা’ বলা হয় (বাপৌছ) রবিবার (বাপৌচা) সায়াহ্ন (বাপৌউ) অর্যমা (বাপৌরূ) সন্ধ্যা (বাপৌমূ) শেষ প্রহর।

সন্ধ্যার ওপর ১টি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (A highly important quotations of evining)
১.    “ঘর আছে দুয়ার নাই, মানুষ আছে তার কথা নাই, কেবা তার আহার জোগায়, কে দেয় সন্ধ্যাবাতি।” (পবিত্র লালন- ৪৪০/৩)।
২.   “সকাল সন্ধ্যা নিরবধি, চলেফেরে সাঁই দরদী, দুই মৃণালে করো সন্ধি, নিরীক্ষ ধরো বায়ু ঘরে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
৩.   “সকাল-সন্ধ্যা পুরুষ মারে, ভরা সেথা চোর বাটপাড়ে, বলন কয় ধন বাঁচাতে, তিলতলা পাহারা চাই।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৯১)।

সন্ধ্যার ওপর কয়েকটি সাধারণ উদ্ধৃতি (Some ordinary quotations of evining)
১.   “অবৈধ ভূমি কিনিলে- প্রমাণে নাম না লিখিলে, সাগরপাড়ে ঘর বাঁধিলে, দুই বেলায় বন্যা আসে- সকাল-সন্ধ্যা বানে ভাসে, কী দিয়ে ঠেকাবি বান।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৪৮)।
২.   “অরুণ বরুণ বায়ু ক্ষিতি, এ চাররসে নিষ্ঠারতী, সে রসে জ্বালাও বাতি, ত্রি-সন্ধ্যা বারোমাস।” (পবিত্র লালন- ২৭৫/৩)।
৩.   “আলেক-মানুষ ধররে ধর, অমরাপুর নদীয়ায়, আপন ঘরে পরমনিধি, প্রাতঃ সন্ধ্যা আসে যায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৩৭)।
৪.   “কামনদীর তরঙ্গ ভারী, কেমনে ধরিব পাড়ি গো, বেলা গেল সন্ধ্যা হলো, পড়ে রলাম কিনারায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৯৩)।
৫.   “কাশী কী মক্কায় যাবিরে মন চল দেখি যাই, দোটানাতে ঘুরলে পথে, সন্ধ্যা বেলায় উপায় নাই।” (পবিত্র লালন- ২৯২/১)।
৬.   “গাঙ্গে আসে মধু জোয়ার, দুই যোগে দুকূল ভাসে তার, প্রাতঃ সন্ধ্যা করে বিহার, মধু খা মধুকর সেজে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ৮৬)।
৭.   “ছয় পেয়ে বাঘিনী ডাকে, মৃগ মৃগিরা চমকে ওঠে, প্রাতঃ সন্ধ্যা পতন দেখে, কাঁন্দে দূরে যারে যার।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২১৯)।
৮.   “জোয়ার ভাটা সন্ধ্যা সকাল, বাও চেনে ধরো হাল, বলন কয় প্লবতাহীন খাল, খাটে না মাঝিগিরী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২৯৯)।
৯.   “তিন তিনটি চন্দ্র উদয় আকাশ ভূমি পাতালে, পশ্চিমে সূর্য উদয় হয়গো ভরা সন্ধ্যাকালে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১২৮)।
১০. “প্রাতঃ সন্ধ্যায় করো পূজা, দুর কর পাপের বোঝা, হতে চাও রাজার রাজা, প্রেম-পঞ্চরস ধরো কষে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৭৮)।
১১.  “ব্রজের কালার সনে (নিষ্ঠুর কালার সনে), সন্ধ্যাবেলা দেখা হলো মাধবী বনে।” (বলন তত্ত্বাবলী)।
১২.  “রূপ-কাষ্ঠের নৌকায় চড়ে মাসে মাসে হয় উদয়, কলির জীব তরাতে সাঁই ঘুরতেছে এ জগৎময়, প্রাতঃ সন্ধ্যা দুই ধারাতে- পার করে পার ঘাটেতে, হাত ধরে কাঙ্গলের হাতে- পেলে সঠিক সন্ধানী।” (বলন তত্ত্বাবলী- ২১৪)।
১৩. “শুকনা গাঙ্গে জোয়ার আসে, তিনশত ষাট বার যৌবন বয়সে, ত্রিধারা বয় ওপর নিচে, সকাল আর সন্ধ্যাকালে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১১৫)।

সাধারণ সন্ধ্যা অর্থে সন্ধ্যা পরিভাষাটির ব্যবহার (Using the terminology evening sense ordinary evening)
“সিএনজি রিক্সা সকল, সন্ধ্যার পরে ভাড়া ডবল, নুন আনতে পান্তা ফুরায়, মিটিল না আশা।” (বলন তত্ত্বাবলী)।

সন্ধ্যার সংজ্ঞা (Definition of evening)
সাধারণত; কোনকিছুর সর্বশেষ প্রহরকে অর্যমা বা উপমার্থে সন্ধ্যা বলে।

সন্ধ্যার আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of evening)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; রজস্বলাদের পবিত্রতার শেষ প্রহরকে সন্ধ্যা বলে।

সন্ধ্যার প্রকারভেদ (Variations of evening)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে সন্ধ্যা দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান সন্ধ্যা ও ২. উপমিত সন্ধ্যা।

১. উপমান সন্ধ্যা (Analogical evening)
সাধারণত; কোনকিছুর সর্বশেষ প্রহরকে অর্যমা বা উপমান সন্ধ্যা বলে।

২. উপমিত সন্ধ্যা (Compared evening)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে রজস্বলাদের পবিত্রতার শেষ প্রহরকে উপমিত সন্ধ্যা বলে।

সন্ধ্যার পরিচয় (Identity of evening)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘শেষ প্রহর’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ বিশেষ। সাধারণত; কোনকিছুর সর্বশেষ প্রহরকে অর্যমা বা সন্ধ্যা বলা হয় কিন্তু শ্বরবিজ্ঞানে; রজস্বলাদের পবিত্রতার শেষ প্রহরকে সন্ধ্যা বলা হয়। উল্লেখ্য যে; সারাবিশ্বের কোনো মরমী, সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুরাণে সূর্য অদৃশ্য হওয়ারূপ সন্ধ্যা নিয়ে বিন্দু মাত্র আলোচনা করা হয় নি বরং রজস্বলাদের পবিত্রতার সর্বশেষ প্রহররূপ সন্ধ্যা নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। অথচ বড় দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো সারাবিশ্বের সাম্প্রদায়িক মনীষী ও বক্তারা শ্বরবিজ্ঞানে বর্ণিত সন্ধ্যা পরিভাষাটির দ্বারা কেবল সৌরজগতের সূর্য অদৃশ্য হওয়ারূপ সন্ধ্যাকেই বুঝেন এবং বুঝিয়ে থাকেন। দৈহিক-সন্ধ্যার ব্যাখ্যা কোটি বছরও যদি সৈরিক-সন্ধ্যা দ্বারা করা হয়- তবে তিল পরিমাণ উপকারও হবে না কোনো মানুষের বা কোনো জাতির। কারণ; দৈহিক-সন্ধ্যা হলো দেহঘড়ির সর্বশেষ প্রহর। অন্যদিকে; সৈরিক-সন্ধ্যা হলো দিনের পরিসমাপ্তিকাল। দৈহিক-সন্ধ্যায় দেহে কাঁই অবতরণ করেন কিন্তু সৈরিক-সন্ধ্যায় দেহে আগমন করে না ছাইও।