৮১/৭. হলাহল
Upas (আপাস)/ ‘مسموم’ (মাসমুম)

ভূমিকা (Prolegomenon)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘রজ’ পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’ ‘রজ’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক রূপক পরিভাষা’ ‘জোয়ার’। এর অন্যান্য ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ ‘গরল^২, তিক্তজল, বন্যা, লালবাতি ও সংবাদপত্র ’। এর ‘বাঙালী পৌরাণিক চারিত্রিক পরিভাষা’ ‘অরুণ, নক্ষত্র, বসিধ, মহল্লাল, রংলাল ও লালিমা’ এবং এর ‘বাঙালী পৌরাণিক ছদ্মনাম পরিভাষা’ ‘আদিমাতা, ঘোষক^২, শতরূপা, শেষবসিধ, সরস্বতী ও ধর্মপ্রচারক’। এ পরিভাষাটি শ্বরবিজ্ঞানের ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’তে বর্ণিত ‘মূত্র’ ও ‘রজ’ এ দুটি ‘বাঙালী পৌরাণিক মূলক সত্তা’রই ব্যাপক পরিভাষা রূপে ব্যবহৃত হয়। এজন্য; বর্ণনার ক্ষেত্র অনুযায়ী এর সঠিক দেহতাত্ত্বিক ব্যুৎপত্তি উদ্ঘাটন করা একান্ত প্রয়োজন।

অভিধা (Appellation)
হলাহল (বাপৌউ)বি বিষ, গরল, কালকুট, নাশক, তীব্রবিষ বিশেষ, দেহে প্রবেশ করার পর অসুস্থতা বা তিরোধান ঘটে এমন পদার্থ, upas, ‘مسموم’ (মাসমুম), ‘الأوباس شجر’ (আলউবাসি শাজার) (শ্ববি) রজ, আর্তব, স্রাব, menses, dust, menstrual, আদাত (আ.ﻋﺎﺪﺓ), কুরউ (আ.ﻘﺮﺃ), মাহিজ (আ.ﻤﺤﻴﺾ) (আঞ্চ) ঋতু, মাসিক (রূপ্রশ) অবতার, প্লাবন, বন্যা, ভার্গব, ভীষ্ম, রক্তবন্যা, লালজল, সরস্বতী (ইদে) নবি (আ.نبي), পয়গাম্বর (ফা.ﭙﻴﮕﻤﺒﺭ), হাওয়া (আ.ﺤﻮﺍﺀ) (ইপ) ইঞ্জিল (আ.ﺍﻧﺠﻴﻝ), যাবুর (আ.ﺯﺒﻮﺭ) (ইংপ) messenger (দেপ্র) এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘রজ’ পরিবারের ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’ বিশেষ (সংজ্ঞা) ১. সাধারণত; দেহে প্রবেশ করার পর প্রাণীর প্রয়াণ ঘটায় এমন পদার্থকে হলাহল বলা হয় ২. রজস্বলাদের জরায়ু হতে প্রকৃতির নিয়মে প্রতি মাসে প্রবাহিত রক্তধারাকে রজ বা উপমান রূপে হলাহল বলা হয় (বাপৌছ) আদিমাতা, ঘোষক^২, শতরূপা, শেষবসিধ ও সরস্বতী (বাপৌচা) অরুণ, নক্ষত্র, বসিধ, মহল্লাল, রংলাল ও লালিমা (বাপৌউ) গরল, তিক্তজল, বন্যা, লালবাতি, সংবাদপত্র ও হলাহল (বাপৌরূ) জোয়ার (বাপৌমূ) রজ।

হলাহলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি (Some highly important quotations of upas)
১.   “আসমানি আইন পরশ রতন, চিনলি না মন দিন থাকতে, সুধার লোভে গরল খেয়ে, মরলি বিষের জ্বালাতে।” (পবিত্র লালন- ১৮৬/১)।
২.   “বিষের ছুরি মাইরা গেলি, আমারে ছাড়িয়ারে।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১৭১)।
৩.   “বিষের বড়ি দিতে কইও, হাট হতে কিনিয়া।” (ময়না), বন্ধুর স্মরণ করব বলন, ঘুমাইয়া ঘুমাইয়া।” (বলন তত্ত্বাবলী)।

হলাহলের সংজ্ঞা (Definition of upas)
সাধারণত; দেহে প্রবেশ করার পর প্রাণীর প্রয়াণ ঘটায় এমন পদার্থকে হলাহল বলে।

হলাহলের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theological definition of upas)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; রজস্বলাদের জরায়ু হতে প্রকৃতির নিয়মে প্রতি মাসে প্রবাহিত রক্তধারাকে রজ বা উপমান রূপে হলাহল বলে।

হলাহলের প্রকারভেদ (Variations of upas)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে; হলাহল দুই প্রকার। যথা; ১. উপমান হলাহল ও ২. উপমিত হলাহল।

১. উপমান হলাহল (Analogical upas)
সাধারণত; দেহে প্রবেশ করার পর প্রাণীর প্রয়াণ ঘটায় এমন পদার্থকে উপমান হলাহল বলে।

২. উপমিত হলাহল (Compared upas)
বাঙালী শ্বরবিজ্ঞানে ও বাঙালী পুরাণে রজস্বলাদের জরায়ু হতে প্রকৃতির নিয়মে প্রতি মাসে প্রবাহিত রক্তধারাকে রজ বা উপমিত হলাহল বলে।

হলাহলের পরিচয় (Identity of upas)
এটি ‘বাঙালী পৌরাণিক চরিত্রায়ন সত্তা সারণী’ এর ‘রজ’ পরিবারের অধীন একটি ‘বাঙালী পৌরাণিক উপমান পরিভাষা’। সারাবিশ্বের সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িক ও পারম্পরিক পুস্তক-পুস্তিকায় এর ন্যূনাধিক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে; এ পরিভাষাটি একেক গ্রন্থে একেক ভাষায় এবং একেক পরিভাষার অধীনে ব্যবহার হওয়ার কারণে সাধারণ পাঠক-পাঠিকা ও শ্রোতাদের তেমন দৃষ্টিগোচর হয় না। সাধারণত; দেহে প্রবেশ করার পর প্রাণীর প্রয়াণ ঘটায় এমন পদার্থকে বিষ বা হলাহল বলা হয় কিন্তু শ্বরবিজ্ঞানে; মূত্র ও রজ উভয়কেই বিষ বা হলাহল বলা হয়। তবে; এখানে; কেবল রজকেই বিষ বা হলাহল বলা হয়েছে। অথচ বড় হাস্যকর ব্যাপার হলো সাম্প্রদায়িক মনীষী ও বক্তারা শ্বরবিজ্ঞানে ব্যবহৃত বিষ বা হলাহল পরিভাষাটির দ্বারা কেবল কৃত্রিম তরল কালকুটকেই বুঝেন বা বুঝিয়ে থাকেন।

‘মূত্র’ ও ‘রজ’ এ দুটি মানবজলকে হলাহল বলার কারণ (The to say toxins the two human water urine and menses)
মানুষ অত্যন্ত নির্বোধ প্রাণী। সহজসরল বিষয়-আশয় গ্রহণ করে সবাই। মানবদেহে প্রাপ্ত কয়েকটি মানবজলের মধ্যে মূত্র ও রজ সহজেই পাওয়া যায়। এজন্য; সবাই সহজেই গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু উপকারী ও অমৃতমানবজল যে মূত্র ও রজ নয় তা সবাই বিশ্বাস করতেও চান না। এবং সাধনবলে তা আহরণ করতেও চান না। মানুষ সহজে যে দুটিকে গ্রহণ করতে চান সে দুটিকে বিষ বা হলাহল বলা হয়। কারণ; বিষ বা হলাহল বড় ভয়ঙ্কর বস্তু। সহজে কোনো মানুষ বিষের নিকটবর্তী হয় না। এছাড়াও; এ দুটি মানবজলকে বিষ বা হলাহল রূপে গণ্য করা হলে মানুষ সহসাই এর নিকটবর্তী হবে না। পক্ষান্তরে; পবিত্র মানবজল অন্বেষণের জন্য মানুষ স্বাভাবিকভাবেই চেষ্টা সাধনা করা আরম্ভ করবে। এসব অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কারণেই সুবিজ্ঞ রূপকারগণ মূত্র ও রজকে বিষ বা হলাহল বলে আখ্যায়িত করেছেন।